Advertisment

সুপ্রিম কোর্টে কামদুনি কাণ্ড: মুক্তিপ্রাপ্তদের একতরফা ছাড় নয়, জারি বিধি-নিষেধ

আন্তবর্তীকালীন রায়ে কী জানাল শীর্ষ আদালত?

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Supreme Court ordered to transefer medical entrance case from calcutta highcourt

সুপ্রিম কোর্ট। (ফাইল ছবি)

কামদুনি ধর্ষণ কাণ্ডে মুক্তিপ্রাপ্তদের উপর বিধি-নিষেধ আরোপ করল সুপ্রিম কোর্ট। কামদুনি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায় মোতাবেক মুক্তি পাচ্ছিলেন আমিন, আমিনুর, ইমানুল ও ভোলানাথ। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিল রাজ্য সরকার ও কামদুনির প্রতিবাদীরা। বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানি ছিল। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, আমিন, আমিনুর, ইমানুল ও ভোলানাথের মুক্তি নিঃশর্ত নয়।

Advertisment

কী কী বিধি-নিষেধ আরোপ হল?

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মোতাবেক-

  • মুক্তিপ্রাপ্ত আমিন, আমিনুর, ইমানুল ও ভোলানাথ রাজারহাট পুলিশ স্টেশন এলাকার বাইরে যেতে পারবেন না। প্রয়োজনে রাজারহাট থানার ওসির কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নিয়ে যেতে হবে।
  • রাজারহাট থানা এলাকার বাইরে বেরনোর সময় ওই চারজনকে কোথায় যাবেন? কেন যাবেন? তা বিস্তারিতভাবে থানায় জানাতে হবে।
  • রেসপন্ডডেন্টকেও সবদিক খতিয়ে লিখিতভাবে আইটিনারি জমা নিতে হবে।
  • প্রতি মাসের প্রথম ও তৃতীয় সোমবার মুক্তিপ্রাপ্ত আমিন, আমিনুর, ইমানুল ও ভোলানাথকে রাজারহাট থানায় হাজিরা দিতে হবে।
  • আমিন, আমিনুর, ইমানুল ও ভোলানাথের পাসপোর্ট অবিলম্বে রাজারহাট থানায় জমা দিতে হবে।
  • মুক্তিপ্রাপ্ত ওই চারজন বাড়ির ঠিকানা পরিবর্তন করলে সেটা থানায় লিখিতভাবে জানাতে হবে।
  • আমিন, আমিনুর, ইমানুল ও ভোলানাথ যে মোবাইল নম্বর ব্যবহার করবেন তা লিখিতভাবে থানায় জানাতে হবে।

১০ বছর আগে কী ঘটেছিল?

২০১৩ সালে উত্তর ২৪ পরগনার কামদুনির ঘটনা রাজ্যজুড়ে রীতিমতো শোরগোল ফেলে দিয়েছিল। কলেজ থেকে ফেরার সময় কামদুনির এক তরুণীকে গণধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ ওঠে। ক্ষোভে ফেটে পড়ে ওই এলাকা। পরে ওই মৃতার বাড়িতে গিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে দাঁড়িয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশ্বাস ছিল, এই ঘটনায় দোষীদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করবে প্রশাসন।

২০১৬-তে নিম্ন আদালতের রায়

নিম্ন আদালতের নির্দেশ মোতাবেক কামদুনি ধর্ষণ কাণ্ডের মূল দুই অভিযুক্ত আনসার আলি ও সইফুল আলির মৃত্যুদণ্ড হয়। এছাড়া আমিন, আমিনুর, ইমানুল ও ভোলানাথের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ হয়।

হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়

নিম্ন আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করেন সাজাপ্রাপ্তরা। ২০১৩ সালে কামদুনিতে কলেজছাত্রীর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার ১০ বছর পর রায় ঘোষণা করে কলকাতা হাই কোর্ট। ডিভিশন বেঞ্চ মূল অভিযুক্ত আনসার আলি ও সইফুল আলির মৃত্যুদণ্ড রদ করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়। আর আমিন, আমিনুর, ইমানুল ও ভোলানাথ মুক্তি পায়। এই রায় ঘোষণার পর আদালত চত্বরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন কামদুনির নির্যাতিতার পরিবার ও কামদুনি আন্দোলনের প্রতিবাদীরা। এই নির্দেশের জন্য রাজ্য সরকারের ভূমিকাকে দায়ী করা হয়।

কী নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের?

এরপরই রাজ্য সরকারের তরফে কামদুনি রায়ের বিরোধিতায় শীর্ষ আদালতে স্পেশাল লিভ পিটিশন দাখিল হয়। মামলা করেন কামদুনির প্রতিবাদীরাও। এদিন সেই আবেদনের ভিত্তিতেই অন্তবর্তীকালীন নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্টে। মামলাকারীরা আদালতে জানান যে, এই মামলার পুনর্তদন্তের দাবি ওঠায় অভিযুক্তদের ছাড়া হলে এই মামলার অন্যান্য তথ্য প্রমাণ লোপাট হতে পারে। হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হোক। তবে সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের নির্দেশের উপর কোনও স্থগিতাদেশ এদিন দেয়নি। কিন্তু চারজনের মুক্তির ওপর একাধিক শর্ত আরোপ করেছে।

Mamata Government Kamduni supreme court
Advertisment