Kalyan Banerjee Slams TMC : কসবা গণধর্ষণ কাণ্ডে কল্যাণ–মদনের মন্তব্যের প্রেক্ষিপ্তে বিতর্ক সৃষ্টি হতেই দলের তরফে দেওয়া হয়েছে কড়া বার্তা। আর এবার দলেরই একাংশের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
দক্ষিণ কলকাতা ল’ কলেজ ছাত্রী গণধর্ষণের ঘটনায় উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি। এর মাঝেই মদন-কল্যাণের মন্তব্য ঘিরে চূড়ান্ত অস্বস্তিতে শাসক শিবির। গতকালই তৃণমূলের তরফে তড়িঘড়ি এক্স হ্যান্ডেলে এক পোস্টে সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিধায়ক মদন মিত্রের বিতর্কিত মন্তব্যকে ‘ব্যক্তিগত’ আখ্যা দিয়ে দলের তরফে সেই মন্তব্যের প্রকাশ্যেই নিন্দা জানানো হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় জারি করা বিবৃতিতে দল স্পষ্ট করেছে— “নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধে দল জিরো টলারেন্স নীতি মেনে চলছে”, পাশাপাশি অভিযুক্তদের “কঠোরতম শাস্তি”র দাবিও জানানো হয়েছে।
এদিকে গতকালই দলীয় অবস্থানের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স -এ লিখেছেন, “তৃণমূল কি পরোক্ষে সেই নেতাদেরই সমর্থন করছে, যাঁরা অপরাধীদের আড়াল করছেন?” তাঁর কটাক্ষ, “অভিযুক্তদের রক্ষাকারীদের বিরুদ্ধে দল অবিলম্বে ব্যবস্থা না নিলে এমন বিবৃতি দিয়ে কোনও পরিবর্তন আনবে না।” পাশাপাশি ২০১১ সালের পরে উঠে আসা কিছু নেতার ভূমিকা নিয়েও তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি।
শনিবার সন্ধ্যায় দলীয় বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, গণধর্ষণ মামলার প্রসঙ্গে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও মদন মিত্রের মন্তব্য “ওঁদের ব্যক্তিগত”, যা “কোনওভাবেই তৃণমূল কংগ্রেসের অবস্থান নয়।” দলের কড়া বার্তা— “আমরা এই জঘন্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।” এরপরই খোদ নিজের দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধেই তোপ দাগলেন বর্ষীয়ান সাংসদ কল্যাণ বন্দোপাধ্যায়। তিনি স্পষ্ট জানান, দলের বক্তব্যের সঙ্গে তিনি ‘সম্পূর্ণভাবে একমত নন’ এবং অভিযোগ করেন, “তৃণমূল কি সেই নেতাদেরই পরোক্ষে সমর্থন করছে যারা অপরাধীদের রক্ষা করছে?
/filters:format(webp)/indian-express-bangla/media/media_files/2024/10/22/sgwwvxS58C5zTsUFUopy.jpg)
প্রসঙ্গত, কসবার ল’ কলেজে গণধর্ষণের ঘটনায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “সব পুরুষ তো এমন কাজ করে না। কিন্তু যদি কোনও বন্ধু, বন্ধুকে ধর্ষণ করে, তাহলে কী করা যাবে? পুলিশ কি এবার স্কুল-কলেজেও থাকবে? সহপাঠী হয়ে কেউ যদি এক ছাত্রীর সঙ্গে এমন করে—তাহলে তাঁকে কে রক্ষা করবে?” এই মন্তব্যের পরই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা। এরপরই গতকাল তড়িঘড়ি কল্যাণের অবস্থান থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নেয় দল।
গতকালের পোস্টের জবাবে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর এক্স অ্যাকাউন্টে লেখেন, “আমি @AITCofficial-এর এই পোস্টের সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে একমত নই। তারা কি পরোক্ষভাবে সেই নেতাদের সমর্থন করছে যারা এই অপরাধীদের রক্ষা করছে? কেবল বিবৃতি দিয়ে কোনও পরিবর্তন আসবে না। অবিলম্বে দায়ী নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “দুর্ভাগ্যজনক হল, ২০১১ সালের পরে উঠে আসা কিছু নেতার বিরুদ্ধেই এমন অপরাধের অভিযোগ উঠছে। যারা এই অপরাধীদের উৎসাহ দিচ্ছে বা আড়াল করছে, আমি তাদের থেকে নিজেকে স্পষ্টভাবে দূরে রাখতে চাই।”
এদিকে কসবা কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের নেতা বলে দাবি বিরোধীদের। তার পাশাপাশি জায়েব আহমেদ, প্রমিত মুখার্জি এবং নিরাপত্তারক্ষী পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে ধর্ষণ ও ধর্ষণের ষড়যন্ত্রের ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। ইতিমধ্যে গ্রেফতার হওয়া তিনজনের পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এই ঘটনায় ঘটনায় বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) গঠন করেছে কলকাতা পুলিশ।