পুলিশে দেওয়া অভিযোগপত্রের ছত্রে ছত্রে বিস্ফোরক অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন কসবার ল' কলেজের নির্যাতিতা ওই ছাত্রী। গত ২৫ জুন কসবার ওই ল' কলেজ থেকে বিকেল চারটে নাগাদ বাড়ি ফিরবেন বলে একপ্রকার মনস্থির করে ফেলেছিলেন ওই তরুণী। পরে মত বদলাতেই ওই কাণ্ড ঘটে যায়। পুলিশকে লেখা অভিযোগ পত্রে নির্যাতিতা ছাত্রী লিখেছেন, "ওই দিন বিকেল চারটে নাগাদ অন্যান্য কিছু পড়ুয়ার সঙ্গে আমিও কলেজের গেটে চলে এসেছিলাম বাড়িতে ফিরব বলে। কিন্তু সেই সময়ই আমি এবং কলেজের বর্তমান জিএস কথা বলতে শুরু করি এবং সবাই মিলে ইউনিয়ন রুমের সামনে চলে যাই।"
নির্যাতিতা পুলিশকে দেওয়া অভিযোগপত্রে আরও জানিয়েছেন ঘটনার দিন সন্ধ্যেয় কলেজে মূল অভিযুক্ত তাঁকে জানিয়েছিলেন যে তিনি তাঁকে পছন্দ করেন এবং বিয়ে করতে চান। নির্যাতিতা অভিযুক্তকে জানান যে তাঁর বয়ফ্রেন্ড রয়েছে এবং তাঁকে তিনি ছাড়তে পারবেন না।
নির্যাতিতা ছাত্রী তাঁর অভিযোগপত্রে লিখেছেন, "সন্ধে ৬.১০ নাগাদ কিছু পড়ুয়া বাড়ি চলে যেতে চেয়েছিল কিন্তু এক অভিযুক্ত তাদেরকে আটকায় এবং বলে আরও কিছুক্ষণ থেকে যেতে। আমরা তার কথা শুনে থেকে গিয়েছিলাম। সন্ধ্যে সাড়ে সাতটা নাগাদ আমাদের জিএস আমাদেরকে জানায় যে তার কিছু ব্যক্তিগত কাজ রয়েছে, তাই সে সেই কাজ সেরে আবার কলেজে ফিরে আসবে। আমি এবার বাড়ি চলে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তখনই এক অভিযুক্ত আমাকে আটকায়। সে আমাকে জোর করে ওয়াশরুমের কাছে টেনে নিয়ে যায় এবং আমার ওপর জোর খাটানোর চেষ্টা করে।"
আরও পড়ুন- West Bengal News Live Updates: কসবায় গণধর্ষণে মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র, ছেলের 'কৃতকর্ম' নিয়ে কী বলছেন বাবা জানেন?
তিনি আরও লিখেছেন, "আমার সঙ্গে যৌন নির্যাতন চলে। কোনও মতে আমি বাঁচার চেষ্টা করলে সে আমাকে ফেল ফেলে দেয়। আমি কেঁদেই চলেছিলাম এবং ওদের হাতে পায়ে ধরছিলাম যে আমাকে ছেড়ে দাও। আমি তাদের এটাও বলেছিলাম যে আমার একজন বয়-ফ্রেন্ড আছে। আমি তাকে ভালোবাসি। তবু আমাকে ছাড়েনি। আমার তখন প্যানিক অ্যাটাক হয়েছিল এবং নিঃশ্বাসের কষ্ট হচ্ছিল। তখন আমি বলেছিলাম যে আমাকে রুবি হাসপাতালে নিয়ে চলো। ওরা আমাকে কোনও সাহায্য করেনি। একটি ইনহেলার এনে দিতে বলেছিলাম। তারপর মূল অভিযুক্ত সেটি আনিয়ে দেয়। তারপর আমি কিছুটা স্বস্তি বোধ করায় যখন বেরোতে গেলাম তখন দেখলাম কলেজের মেনগেট বন্ধ।"
আরও পড়ুন- Rath Yatra 2025:রথযাত্রায় বিরাট বিপত্তি পুরীতে! হুড়োহুড়িতে পড়ে গিয়ে আহত পাঁচশোর বেশি
ওই তরুণী অসুস্থ হয়ে পড়লেও তাকে ছাড় দেয়নি অভিযুক্তরা। কলেজের ইউনিয়ন রুমে নিয়ে গিয়ে তাঁ সহ্গে চলে যৌন নির্যাতন। এদিকে, পাশবিক এই ঘটনার পর অভিযেগা পেয়েই পুলিশ রীতিমতো তৎপর হয়। মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র-সহ বাকি দুই অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়। তাদের ৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন আলিপুর আদালতের বিচারক।