তাঁরা যখনই ঘরে ফিরতেন, কাছের মানুষের মুখগুলো খুশিতে ভরে যেত। দীর্ঘদিন পর প্রিয়জনকে দেখার তৃপ্তি ওঁদের আনন্দে মাতিয়ে তুলত। কিন্তু সেই মানুষগুলো দেহ হয়ে আজ ঘরে ফিরল। তাই পরিবার ও নিকটজনদের চোখগুলো আজ ঝাপসা। উপত্যকার মাটিতে জমাট বাঁধা চাপ চাপ রক্ত ম্লান করে দিয়েছে বাংলার দুই জওয়ানের পরিবারের আনন্দকে। পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলায় ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে জওয়ানদের দেহাংশ। বীরযোদ্ধাদের সেই দেহাংশই কফিনবন্দি হয়ে আজ ঘরে ফিরল এ রাজ্যে। প্রিয়জনকে হারিয়ে শোকে পাথর বাউড়িয়ার বাবলু সাঁতরা ও নদিয়ার তেহট্টের সুদীপ বিশ্বাসের পরিবার।
বায়ুসেনার বিশেষ বিমানে করে আজ বাংলার ওই দুই জওয়ানের কফিনবন্দি দেহ ফিরল রাজ্যে। এদিন কলকাতা বিমানবন্দরে বাবলু সাঁতরা ও সুদীপ বিশ্বাসকে শেষশ্রদ্ধা জানানো হয়। বিমানবন্দরে বাংলার দুই জওয়ানের কফিন নিজের কাঁধে তুলে নেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়।
বাংলার শহিদদের শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সকাল থেকেই ভিড় কলকাতা বিমানবন্দরে। এদিন দুই জওয়ানকে বিমানবন্দরে ‘গার্ড অফ অনার’ দেওয়া হয়। বিমানবন্দর থেকেই জওয়ানদের কফিনবন্দি দেহ রওনা দেয় তাঁদের বাড়ির উদ্দেশে।
শহিদ জওয়ানদের শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ভিড় সাধারণ মানুষের। ছবি: শশী ঘোষ।
আরও পড়ুন, কাশ্মীরে নিহত বাংলার জওয়ান বাবলু যেন সত্যিই ‘ফাইটার’
দুঃসংবাদ পাওার পর থেকেই শুক্রবার সকাল থেকে বাউড়িয়ার চক কাশী গ্রামে সাঁতরা পরিবারে ভিড় জমাচ্ছেন বহু মানুষ। জওয়ানের শোকে বাবলুর পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে আজ সকাল থেকেও ভিড় জমিয়েছেন অগুণতি মানুষ। একই ছবি ধরা পড়েছে নদিয়ায় সুদীপের বাড়িতেও। শেষবারের মতো প্রিয়জনকে ছুঁয়ে দেখার জন্য হা পিত্যেশ করে অপেক্ষা করছেন বাবলু ও সুদীপের পরিজনরা। কাশ্মীর হামলার পর থেকেই বাবলু, সুদীপের কাছের মানুষদের চোখে জল বাঁধ ভেঙেছে।
গত বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী জঙ্গি হামলায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৪০ জন জওয়ান। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন এ রাজ্যের দুই জওয়ান বাবলু সাঁতরা ও সুদীপ বিশ্বাস। গতকাল দিল্লির পালাম বিমানবন্দরে শহিদ জওয়ানদের শেষ শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জওয়ানদের শেষ শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন রাহুল গান্ধীও।