বিস্ফোরণ কাণ্ডে দুই জেএমবি জঙ্গি নিহত হওয়ার সাত বছর পর ফের শিরোনামে বর্ধমানের খাগরাগড়। তবে এবার বিস্ফোরণ বা বোমা বারুদ উদ্ধার নিয়ে নয়। বর্ধমানের খাগড়াগড়ে পূর্ব মাঠপাড়ায় এবার হদিশ মিলল জাল নোট তৈরির কারখানার। সেই কারখানায় অভিযান চালিয়ে বর্ধমান থানার পুলিশ বৃহস্পতিবার উদ্ধার করেছে বেশ কিছু নকল নোট, নোট ছাপার মেশিন ও অন্যান্য সরঞ্জাম। এই ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের মধ্যে দীপঙ্কর চক্রবর্তীর বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। বাকি দুই ধৃত গোপাল সিং এবং বিপুল সরকার বর্ধমান শহরের বাসিন্দা।
পুলিশ জানিয়েছে, খাগড়াগড় ও তার সংলগ্ন এলাকায় জাল নোটের লেনদেন চলছে বলে পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পায়। তার পরই তদন্তে নামে বর্ধমান থানার পুলিশ। খোঁজ খবর চালিয়ে পুলিশ জানতে পারে খাগড়াগড়ের পূর্ব মাঠপাড়ায় একটি বাড়িতে রমরমিয়ে চলছে জাল নোটের কারবার। এর পর বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলিশ আচমকাই ওই বাড়িতে হানা দেয়। হাতেনাতে জাল নোট সহ তিনজন ধরা পড়ে যায় পুলিশের হাতে।
পুলিশ সুপার কামনাশিষ সেন এদিন বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, ধৃতদের কাছ থেকে ১২ হাজার ৫০০ টাকা জাল নোট এবং নোট তৈরির ডাইস, পাউডার, কেমিক্যাল ইত্যাদি উদ্ধার হয়েছে। তিনি আরও জানান , সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে শুক্রবার ধৃতদের আদালতে পেশ করে পুলিশি হেফাজত নেওয়া হবে। ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জানার চেষ্টা করা হবে তারা কতদিন ধরে এই জাল নোট তৈরির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে এবং তাদের সঙ্গে আর কারা কারা যুক্ত আছে। এছাড়া জানার চেষ্টা করা সবে ধৃতরা ইতিমধ্যে কত টাকার জাল নোট শহরের ছড়িছে।
আরও পড়ুন আরও এক কেলেঙ্কারি ফাঁস, প্রাইমারিতে চাকরি দেওয়ার নামে লক্ষ লক্ষ টাকার প্রতারণা, জালে তৃণমূল উপপ্রধান
খাগড়াগড়ের বাসিন্দা সেখ আজাদ জানান, গোপাল সিং ৪-৫ মাস আগে খাগড়াগড়ের পূর্ব পাড়ায় সিরাজুল ইসলামের বাড়ি ভাড়া নেয়। তার সঙ্গে তাঁর স্ত্রী, শাশুড়ি ও একজন পরিচারিকাও থাকে। এলাকায় সে নিজেকে মানবাধিকার কর্মী বলে পরিচয় দিত। কিন্তু সে যে আদতে জাল নোটের কারবারি তা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। বহিরাগত এই সব লোকের জন্যেই বিস্ফোরণ কাণ্ডের পর ফের বদনামের ভাগিদার হল খাগড়াগড়। এইসব নিয়ে এলাকাবাসী যথেষ্ট আতঙ্কিত হয়ে রয়েছেন। ধৃতদের কড়া শাস্তির দাবি করেছেন খাগড়াগড়ের আদি বাসিন্দারা। ধৃত গোপাল সিংয়ের বাড়ির পরিচারিকা জানান, পুলিশ এসে বাড়ি থেকে দুটি সাদা কাগজ ভর্তি ব্যাগ নিয়ে গেছে।