খাগড়াগড় বিস্ফোরণকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত উনিশ জনের সাজা ঘোষণা করছে নগর দায়রা আদালত। সূত্রের মারফত এখন অবধি জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় অভিযুক্ত আলিমা এবং গুলশনরা বিবির ছ' বছরের সাজা ঘোষণা করা হয়েছে। যদিও এদের দুজনের অতীত অপরাধের কোনও রেকর্ড নেই। এছাড়া রহমতুল্লা, সইদুল ইসলাম, মহম্মদ রুমেলের দশ বছরের সাজা ঘোষণা করেছে আদালত। রহমতুল্লার ক্ষেত্রে কুড়ি হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক বছরের কারাবাসের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, আব্দুল হাকিম, রেজাউল করিম, গিয়াসউদ্দিন মোল্লা, শাহাদুল আলমদের আট বছরের সাজা ঘোষণা করেছে আদালত। এদের কুড়ি হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে এক বছরের কারাবাসের সাজাও ঘোষণা করা হয়েছে। প্রত্যেকের সঙ্গেই বিচারপতি আলাদা ভাবে কথা বলেন এবং তাঁরা প্রত্যেকেই সমাজের মূল স্রোতে ফিরতে চান বলেও জানিয়েছেন বিচারপতির কাছে। আদালত সূত্রে জানা গেছে, দোষী সাব্যস্তদের সর্বনিম্ম সাজা ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এই ঘটনার তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ দোষীদের সর্বোচ্চ সাজা দাবি করেছিল। এদের মধ্যে চারজন বাংলাদেশি নাগরিককে সাজার মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর বাংলাদেশে ফিরিয়ে দেওয়া হবে, এমনটাই জানিয়েছে আদালত। সাজা ঘোষণা এখনও চলছে। পূর্ণাঙ্গ সাজা স্পষ্ট হলে তা এই প্রতিবেদনে যুক্ত করা হবে।
আরও পড়ুন- মোদী সরকারের বড় সিদ্ধান্ত, একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সংযুক্তিকরণ
বুধবার বর্ধমানের খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডে ৩১ জন অভিযুক্তের মধ্যে ১৯ জন অভিযুক্ত দোষী সাব্যস্ত করে মুখ্য নগর দায়রা বিচারকের আদালত। ৩০ অগাস্ট অর্থাৎ শুক্রবার দোষীদের সাজা ঘোষণা করা হয়। প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২ অক্টোবর দুর্গাপুজোর অষ্টমীর দিনদুপুরে বর্ধমানের খাগড়াগড়ের একটি বাড়িতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। দুর্গাপুজোর সময় রাজ্যে এই বিস্ফোরণের ঘটনায় স্বভাবতই বিরাট চাঞ্চল্য ছড়ায়। ওই দিনের বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত হয় শাকিল আহমেদ ও সোভান মণ্ডল। গুরুতর জখম হয় আবদুল হাকিম। বাড়ির মালিক নুরুল হাসান চৌধুরী ছিলেন তৃণমূলের স্থানীয় নেতা। তবে তাঁর দাবি ছিল, তিনি কিছু না জেনেই বাড়িটি ভাড়া দিয়েছিলেন শাকিলকে। বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই মারা যায় শাকিল। এরপর হাসপাতালে মারা যায় সোভান। আমিনা বিবি, রাজিয়া বিবিকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। তদন্ত শুরু হতেই ঘটনায় আসে নয়া মোড়।
আরও পড়ুন- আরও ৩ দিনের সিবিআই হেফাজতে চিদাম্বরম
সেই সময় ওই বাড়ি থেকে ৫৫টি ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি), আরডিএক্স এবং বোমা তৈরির অন্যান্য সরঞ্জাম-সহ সিম কার্ড উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত প্রথমে জেলা পুলিশ শুরু করলেও পরবর্তীতে সেই তদন্তভার হাতে নেয় সিআইডি। তবে ঘটনার গুরুত্ব অনুধাবন করে অবশেষে তড়িঘড়ি তদন্ত হাতে নেয় এনআইএ। এরপরই ঘটনায় সরাসরি যোগসূত্র মেলে জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) জঙ্গিদের। এই ঘটনায় দীর্ঘ দিন ধরে তদন্ত করে এনআইএ। দেশের নানা প্রান্ত থেকে জঙ্গিদের গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।