রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাগাতার উঠে আসা ধর্ষণের অভিযোগে এবার নাম জুড়ল হুগলির খানাকুলের। কয়েকদিন আগেই কোন্নগর চটকল এলাকায় একটি ধর্ষণ-কাণ্ডের জেরে হুগলি জেলায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছিল। ফের, সেই হুগলিতেই উঠল ধর্ষণের অভিযোগ। এবার খানাকুলে ধর্ষকদের শিকার এক মূকবধির মহিলা। তাঁকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
ঘটনার জেরে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বাধ্য হয়ে পুলিশ অভিযুক্ত দুজনকেই গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের সোমবার তোলা হয় আরামবাগ মহকুমা আদালতে। ধৃতদের সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রতিদিনের মত রবিবার দুপুরেও ওই মুকবধির মহিলা স্থানীয় মুণ্ডেশ্বরী নদীতে স্নান করতে গিয়েছিলেন। সেই সময় নদীর কাছেই উপস্থিত ছিল পান্নালাল ঘরুই ও পিন্টু বৌরি নামে দুই মাঝি। তারা মুণ্ডেশ্বরী নদীতেই নৌকো চালায়। ভরদুপুরে লোকজন ছিল কম। সেই নির্জনতার সুযোগ নিয়ে ওই দুই ব্যক্তি মূকবধির মহিলার ওপর চড়াও হয়। তাঁর ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায়।
আরও পড়ুন- লুকিয়ে বহু রহস্য, বিশ্বভারতীর ছাত্রমৃত্যুতে ফের সিবিআই তদন্ত দাবি পরিবারের
কিছুক্ষণ পর ওই মহিলা কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফেরেন। তাঁর মা-কে কেঁদে আকার-ইঙ্গিতে সমস্ত ঘটনা জানান। বাড়িতে আলোচনা করে রবিবার সন্ধ্যায় ওই দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করে পরিবারের লোকজন। খানাকুলের পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, অভিযোগ পাওয়ার পরই পুলিশ তদন্তে নামে। বিভিন্ন জায়গায় জিজ্ঞাসাবাদের পর অভিযুক্তদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়। তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই মহিলার মেডিকেল টেস্ট করানো হয়েছে। তিনিও অভিযুক্তদের শনাক্ত করেছেন। আদালতে ওই মহিলা সাক্ষ্য দেবেন। পুলিশ ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়। অতীতেও তারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছিল কি না, তা জানতেই আদালতে পুলিশি হেফাজতের আবেদন করা হয়েছিল।
সম্প্রতি, হাঁসখালি থেকে ময়নাগুড়ি, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একের পর এক ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। হাঁসখালি মামলায় আদালতের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত করছে। ময়নাগুড়ির ঘটনাতেও পুলিশের ওপর আস্থা রাখতে পারছে না নির্যাতিতার পরিবার। তাঁরা সিবিআই তদন্তের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে খানাকুলের ঘটনায় পুলিশ দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা খুশি।