খোদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ খড়গপুর পুরসভার চেয়ারম্যান পদ ছাড়তে হবে প্রদীপ সরকারকে। সেই নির্দেশ, মানবেন বলে জানিয়েছেন প্রদীপ সরকার। পশ্চিম মেদিনীপুরের তৃণমূল কোঅর্ডিনেটরের দাবি, সোমবার সন্ধ্যায় বা মঙ্গলবার সকালেই প্রদীপবাবু ইস্তফা দিবেন। কিন্তু তার আগেই, বিস্ফোরক চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকার। তাঁর ইঙ্গিতপূর্ণ নিশানায় দলেরই একাংশ। তাঁর বিরুদ্ধে 'ষড়যন্ত্র' হয়েছে বলে দাবি প্রদীপের।
কী বলেছেন প্রদীপ সরকার?
২৫ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ২১ জনই খড়গপুরের চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকারকে সরানোর দাবি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের কাছে দরবার করেছিলেন। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দলীয় কাউন্সিলররাই সমাজবিরোধীদের দিয়ে পুরসভার জনপ্রতিনিধিদের হুমকি, তাঁদের বাড়ি ঘেরাও করার চেষ্টার অভিযোগ করেছেন টাউন থানায়। রয়েছে দুর্নীতির অভিযোগও। দলে যে গোষ্ঠীকোন্দল বাড়ছে তা ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছিল। এরপরই সোমবার অভিষেক খড়গপুর পুরসভার চেয়ারম্যান পদ ছাড়ার জন্য প্রদীপ সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান অজিত মাইতি।
আরও পড়ুন- দিল্লির কোর্টে বিরাট ধাক্কা কেষ্টর! কোনও সওয়ালই ধোপে টিকল না
এর আগেই কাউন্সিলর ছিলেন প্রদীপ সরকার। দিলীপ ঘোষ সাংসদ হিসাবে জয় লাভের পর খড়গপুর বিধানসভায় উপনির্বাচনে জোড়া-ফুল ফুটেছিল প্রদীপ সরারের হাত ধরেই। ২১য়ের ভোট অবশ্য বিজেপির হিরণের কাছে পরাজিত হয় প্রদীপ। কিন্তু, ২২ সালের শুরুতে পুরসভা ভোটে ফের কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। দল তাঁকেই খড়গপুর পুরসভার চেয়ারম্যান করে। ফলে প্রদীপকে সেই অর্থে তৃণমূল নেতৃত্বের নয়ণের মণিই বলা যেতে পারে। কিন্তু, পদ কাড়তেই দলের একাংশকে নিশানানা করে ইঙ্গিতে তোপ দেগেছেন প্রদীপ সরকার।
আরও পড়ুন- অভিষেকের কড়া নির্দেশ, এবার অপসারিত খড়গপুর পুরসভার চেয়ারম্যান
দলের নির্দেশ কী মনেনে নেবেন প্রদীপ? জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, 'মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আমি খড়গপুর পুরসভার চেয়ারম্যান পদে বসেছি। ওনারা বললেই পাঁচ মিনিটে ইস্তফা দিয়ে দেব। পদত্যাগপত্র তৈরি আছে।'
এরপরই প্রদীপবাবু বলেন, 'যাঁরা এখন তৃণমূলের কাউন্সিলর তাঁদের বেশিরভাগেরই রাজনীতি কারর অভিজ্ঞতা নেই। ওরা ভাবছে আমি উন্নয়ের জন্য টাকা দিচ্ছি না। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারতো টাকা দিচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রীও বারে বারে সেটা বলছেন। আমার তো টাকা আটকে রাখার কিছু নেই। টাকা না এলে আমি কী করব?'
দল তাহলে কেন তাঁকে সরাল? চেয়ারম্যানের দাবি, 'এর পিছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে। অনেক মানুষের হাত থাকতে পারে। চক্রান্ত হয়েছে। যাঁরা সই করেছেন তাঁদের চাপের কাছে নতি স্বীকার করানো হয়েছে। প্রলোভন দিয়ে আমার বিরুদ্ধে কাউন্সিলরদের বিক্ষুব্ধ করে সই কারনো হয়েছে।' কারা ষড়যন্ত্রকারী? দলের নেতাদের দিকে ইঙ্গিত করলেও তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি চেয়ারম্যান।