টালিগঞ্জ, বেলঘরিয়া, গার্ডেনরিচ, শিবপুর, বড়বাজার, গাজোল, পাঁচলা থেকে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা উদ্ধার হয়েছিল। যা দেখে চমকে গিয়েছিলেন রাজ্যবাসী। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হল খড়দার নাম। খড়দহে অধ্যাপকের ফ্ল্যাট থেকে পুলিশ নগদ ৩২ লাখ টাকা উদ্ধার করেছে।
খড়দহ নাথুপাল ঘাট রোড এলাকায় শিরোমণি আবাসনের একতলার ফ্ল্যাটে স্ত্রী, পুত্র সন্তানকে নিয়ে থাকেন অধ্যাপক অমিতাভ দাস। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ওই ফ্ল্যাটে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ ও ব্যারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগ। সেই তল্লাশিতেই উদ্ধার হয় নগদ ৩২ লাখ টাকা। বান্ডিল বান্ডিল টাকার সবকটিই প্রায় ১০০ টাকার নোটের, কয়েকটি মাত্র ২০০০ টাকার, একটি বান্ডিল ৫০০ টাকার।
কী কারণে অধ্যাপক অমিতাভ দাসের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালালো পুলিশ? স্পষ্ট করে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের তরফে কিছু বলা হয়নি। ওই অধ্যাপকের আচারণেও অন্যরকম কিছু চোখে পড়েনি বলে দাবি প্রতিবেশীদের।
পুলিশ সূত্রে খবর, বিভিন্ন সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার নাম করে লাখ,লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে অধ্যাপক অমিতাভ দাসের বিরুদ্ধে। সেই বেআইনি টাকারই অংশ বিশেষ নিজের ফ্ল্যাটে অমিতাভ দাস রেখেছিলেন বলে অনুমান তদন্তকারীদের।
এই ঘটনায় ফের ফিরল গত বছর জুলাইয়ের স্মূতি। রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের টালিগঞ্জ ও বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছিল নগদ প্রায় ৫০ কোটি। মিলেছিল প্রচুর গয়না সহ নানা দ্রব্য।
এরপর গত সেপ্টেম্বরে গার্ডেনরিচে পরিবহণ ব্যবসায়ী আমির খানের বাড়ি ও দফতরে হানা দিয়ে অন্তত ১৭ কোটি টাকা উদ্ধার করেছিল ইডির আধিকারিকরা। মোবাইল অ্যাপ সংক্রান্ত প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে এই মামলায়।
ওই মাসেই মালদার গাজোলের ঘাকশোল এলাকার মাছ ব্যবসায়ী জয়প্রকাশ সাহার বাড়িতে অভিযান চালান সিআইডি। উদ্ধার হয় ১.৩০ কোটির বেশি টাকা। অভিযুক্ত ব্যবসায়ী নিষিদ্ধ কাফ সিরাপ পাচারের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ সিআইডি-র।
গত অগাস্টে হাওড়ার পাঁচলায় পুলিশের জালে ধরা পড়ে ঝাড়খণ্ডের ৩ কংগ্রেস বিধায়ক। উদ্ধার হয়েছিল প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা। সরকার ফেলার 'ষড়যন্ত্রে' ওই টাকা তাঁরা নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।
গত বছরই অক্টোবরে শিবপুরে ব্যবসায়ী শৈলেশ পাণ্ডের ভাইয়ের গাড়ি ও ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালায় পুলিশ। গাড়ি থেকে ২ কোটি ও ফ্ল্যাটের বক্স খাট থেকে ৬ কোটি উদ্ধর হয়। একাধিক লোককে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে প্রতারণা অভিযোগ রয়েছে পাণ্ডে ভাইদের বিরুদ্ধে।