বড় সাফল্য পেল রাজ্য পুলিশ। আত্মসমর্পণ করল বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গি সংগঠন কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন ( কেএলও)-এর দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ নেতা কৈলাস কোচ। সংগঠনে কেএলও প্রধান জীবন সিংহের ঠিক পরেই ছিল যার স্থান। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক মনোজ মালব্যর কাছে এই জঙ্গিনেতা আগ্নেয়াস্ত্র-সহ আত্মসমর্পণ করে। সমাজের মূলস্রোতে ফেরার ইচ্ছে থেকেই তার এই আত্মসমর্পণ বলে জানিয়েছে ওই সদ্যপ্রাক্তন জঙ্গি।
দীর্ঘদিন ধরেই কেএলও প্রধান জীবন সিংহ মায়ানমারের জঙ্গলে আত্মসমর্পণ করে রয়েছে। সেখান থেকে সম্প্রতি সে ভিডিওবার্তায় এরাজ্যে নাশকতা চালানোরও হুমকি দিয়েছিল। কিন্তু, সেই হুমকি যে কার্যত ফাঁকা বুলি বৃহস্পতিবার ফের তা প্রমাণ করে দিল রাজ্য পুলিশ। এর আগেও জীবন সিংহের ঘনিষ্ঠ টম অধিকারীর মত বহু নেতাই রাজ্য পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। সমাজের মূলস্রোতে ওই জঙ্গিদের ফেরাতে বড়সড় পদক্ষেপও করেছে রাজ্য সরকার।
রাজ্য পুলিশের দাবি, এই পরিস্থিতিতে রীতিমতো চাপে পড়ে গিয়েছে কেএলও নেতৃত্ব। তারা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছে। জীবনের প্রস্তাবে ইতিমধ্যেই সাড়া দিয়েছে মোদী সরকার। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে সরকারের তরফে কেএলওর সঙ্গে আলোচনায় বসার দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে। কেএলওর পক্ষ থেকে জীবন সিংহের হয়ে এই আলোচনা চালাবে সংগঠনে 'জীবন'-এর ধর্মপুত্র বলে পরিচিত দিবাকর সিংহ।
আরও পড়ুন- ফের অক্টোবরে বাড়তে পারে দুধের দাম, কিন্তু কেন দুধের দাম ঘনঘন বাড়ছে?
সেই আলোচনা শুরুর আগেই কেএলও বিরুদ্ধে বড়সড় পদক্ষেপ করল রাজ্য পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাজ্য পুলিশের ডিজির পাশে বসে আত্মসমর্পণকারী জঙ্গি কৈলাস কোচ বলে, 'মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমাজের মূলস্রোতে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়েই হিংসার পথ ছেড়ে দিলাম। কারণ, হিংসার মাধ্যমে কোনও সমস্যার সমাধান হয় না। আমার যে সঙ্গীরা এখনও জঙ্গলে লড়াই চালাচ্ছে, তাদেরও মূলস্রোতে ফিরে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।'
কেএলওর শীর্ষনেতা জীবন সিংহ এখনও আলাদা উত্তরবঙ্গ, গ্রেটার কোচবিহারের দাবিতে অনড়। কিন্তু, সংগঠনের বহু জঙ্গিই এখন মত বদলেছে। তারা চায় পশ্চিমবঙ্গেই থাকতে। এমনটাই রাজ্য পুলিশকে জানিয়েছে আত্মসমর্পণকারী জঙ্গিনেতা। আগামী দিনে তার পথ ধরে আরও কেএলও জঙ্গি জীবন সিংহকে ছেড়ে আত্মসমর্পণ করবে বলেই জানিয়েছে কৈলাস কোচ।