/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2020/10/o.jpg)
নিউ নর্মালে কলাবউ স্নান। ছবি পার্থ পাল
ভোরের আলো ফোটা থেকেই ঝিরঝিরে বৃষ্টি। তাঁর মধ্যেই ঢাকের শব্দ। কোথাউ পালকিতে, আবার কোথাউ ঠাকুরমশাইয়ের কাঁধে করে গঙ্গামুখী কলাবউ। সকাল হতেই শহর থেকে জেলা গঙ্গার ঘাট থেকে পুকুর পারে সম্পন্ন নবপত্রিকা স্নান। বাড়ির বনেদি পুজো থেকে বারোয়ারি, গণেশ ঠাকুরের পাশে স্থাপিত হয়েছে নবপত্রিকা। পুজোমণ্ডপে নবপত্রিকা প্রবেশের মাধ্যমে দুর্গাপুজোর মূল অনুষ্ঠানটির প্রথাগত সূচনা হয়ে গেল।
নবপত্রিকা প্রবেশের পর দর্পণে দেবীকে মহাস্নান করানো হয়। এরপর পুজোর বাকি দিনগুলিতে নবপত্রিকা প্রতিমাস্থ দেবদেবীদের সঙ্গেই পূজিত হতে থাকে। উল্লেখ্য, নবপত্রিকা প্রবেশের আগে পত্রিকার সামনে দেবী চামুণ্ডার আবাহন ও পুজো করা হয়। পত্রিকাস্থ অপর কোনো দেবীকে পৃথকভাবে পূজা করা হয় না।
অনেকেই নবপত্রিকাকে কলাবউ বা গণেশের স্ত্রী বলেন। কিন্তু আদৌ এটি গণেশের স্ত্রী নয়। গণেশের স্ত্রীদের নাম রিদ্ধি ও সিদ্ধি। নবপত্রিকা আসলে দুর্গা অর্থাৎ গণেশের জননী। নবপত্রিকার আক্ষরিক অর্থ নয়টি পাতা। কিন্তু এখানে নয়টি উদ্ভিদ দিয়ে নবপত্রিকা তৈরি করা হয়। এই নয়টি উদ্ভিদ দেবী দুর্গার নয়টি শক্তির প্রতীক। এই নয়টি উদ্ভিদ হল কদলী বা রম্ভা (কলাগাছ), কচু, হরিদ্রা (হলুদ), জয়ন্তী, বিল্ব(বেল), দাড়িম্ব(ডালিম), অশোক, মান ও ধান।
নবপত্রিকা দুর্গাপুজোর একটি বিশিষ্ট অঙ্গ। একটি সপত্র কলাগাছের সঙ্গে অপর আটটি সমূল সপত্র উদ্ভিদ একত্র করে একজোড়া বেল-সহ শ্বেত অপরাজিতা লতা দিয়ে বেঁধে লালপাড় সাদা শাড়ি জড়িয়ে ঘোমটা দেওয়া বধূর আকার দেওয়া হয়। তারপর তাতে সিঁদুর দিয়ে সপরিবার প্রতিমার ডান দিকে দাঁড় করিয়ে পুজো করা হয়ে থাকে।
নবপত্রিকার পুজো প্রকৃতপক্ষে শস্যদেবীর পুজো। এই শস্যবধূকেই দেবীর প্রতীক রূপে গ্রহণ করে প্রথমে পুজো করতে হয়, কারণ শারদীয়া পুজোর মূলে বোধহয় এই শস্য-দেবীরই পুজো।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন