দিল্লীকে ছাড়িয়ে গেল কলকাতার দূষণ। শহরের বাতাসের গুণমাণ খুবই খারাপের দিকে। গত সাত দিনের মধ্যে পাঁচ দিন কলকাতার বায়ুসূচক ছিল ‘খারাপ’। গত সপ্তাহে সোম এবং মঙ্গলবার ওই সূচকের মান ছিল ‘খুব খারাপ’। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সূত্রে এমনটাই জানা যাচ্ছে। দিনের বেলাতেও দৃশ্যমন্যতা অনেক কম।
Advertisment
চলতি সপ্তাহের প্রথম দুই দিন সোম ও মঙ্গলবার কলকাতায় বায়ু দূষণের মাত্রা দিল্লির চেয়েও খারাপ হয়েছে। সোমবার (১২ ডিসেম্বর), বায়ুর গুণমান সূচক (AQI) ৩০৭ রেকর্ড করা হয়েছিল, যা "খুব খারাপ" হিসাবে বিবেচিত হয়, যা জাতীয় রাজধানীতে এই মুহূর্তে ২১৮ রেকর্ড করা হয়েছে। বায়ুর গুণমান সূচক ২১৮ যা নিঃসন্দেহেই "খারাপ" তবে সেই খারাপ মানকেই ছাড়িয়ে গিয়েছে কলকাতার বায়ুদূষণ মাত্রা।
মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) দুই শহরে বায়ুদূষণের মানের পার্থক্য বেড়েছে অনেকটাই। সেই দিন কলকাতার বায়ুর গুণমান সূচক AQI ছিল ৩১৪ বা "খুব খারাপ", অন্যদিকে দিল্লির বায়ুর গুণমান সূচক ১৭৭ বা "মিডিয়াম"।
কলকাতার বাতাসে ‘বিষ’ নিয়ে রীতিমত কপালে ভাঁজ পড়েছে পরিবেশবিদদের। বিশিষ্ট পরিবেশ বিদ সোমেন্দ্র মোহন ঘোষ বলেছেন যে কলকাতার আইকনিক ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল, মর্নিং ওয়াকারদের প্রিয় জায়গা, যা বায়ুদূষণের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
"এই হেরিটেজ জোনে AQI লেভেল বেশ বেশি। তাই হেরিটেজ বিল্ডিংয়ের মার্বেলেও এর প্রভাব পড়ছে। বাতাসের মান সকাল এবং সন্ধ্যায় নিরাপদ নয়,"। শহরের এই স্থাপত্যের অন্যতম নির্দশন মাকরানা মার্বেল বায়ু দূষণের কবলে পড়ছে।
পরিবেশ বিদদের একাংশের দাবি ওয়েস্ট বেঙ্গল হেরিটেজ কমিশন এবং কলকাতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের হেরিটেজ উইং সহ সমস্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত আইকনিক হেরিটেজ স্ট্রাকচারটিকে বাঁচাতে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন শীতকালে এমনিতেই বাতাসে দূষণের মাত্রা বেড়ে যায় প্রাকৃতিক কারণে। সেই সঙ্গে রয়েছে মানুষের অবহেলা। একটি নির্দিষ্ট বয়সের বাইরে যানবাহনগুলির উপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা এবং রাস্তার ধারে খাবার বিক্রেতাদের রাস্তায় রান্না করার সময় কয়লা এবং কেরোসিন গ্যাসের চুলা ব্যবহার করা থেকে বিরত রাখা, একান্তভাবে প্রয়োজন।
বায়ুদূষণের প্রভাবে একাধিক মারণ রোগও শরীরে বাসা বাঁধছে। ফলে দূষণ থেকে রক্ষা পেতে এখনও সকল পদক্ষেপ নেওয়া উচিত তা না হলে বড়সড় বিপদের আশঙ্কা করছেন পরিবেশবিজ্ঞানীরা।