ডিজেলের ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধি ও বাসভাড়া বাড়ানোর দাবিতে এবার আর বনধের হুমকি নয়, অভিনব আন্দোলনের পথে বাস মালিকরা। ২৯ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর শুধুমাত্র অফিস ও স্কুল টাইমে বাস চালাবেন বাস মালিকরা। তিনদিনের 'গো স্লো ট্রিপ'-এর মাধ্যমে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে বার্তা দিতে চাইছেন তাঁরা। এরপর ১ নভেম্বর কলকাতার রাস্তায় বস্ত্রহীন ভাবে হাটবেন বাস মালিকরা। বনধ ডাকলে সরকার রক্তচক্ষু দেখায়, তাই আন্দোলনের পথ বদলেছে বাস মালিকদের সংগঠনগুলি। মিনিবাস মালিকদের সংগঠন আপাতত এই আন্দলনকে নৈতিক সমর্থন করলেও তাতে অংশ নেবে না।
এর আগে ভাড়াবৃদ্ধি বা ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ করলেই বনধ ডাকতেন বাস মালিকরা। তারপর মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক হত। উঠে যেত বাস ধর্মঘট। জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটের সাধারন সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আগামী ২৯ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রতিদিন দুটি ট্রিপ চলবে। তৃতীয় ট্রিপে কোনও লাভ হয় না। কিন্তু আমরা গাড়ি বন্ধ করতে চাই না। আমরা বনধও চাইছি না। আমরা বনধের বিরুদ্ধে। মানুষকে অসুবিধার মধ্যে ফেলতে চাই না। তাই যাত্রী সাধারণ ও স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের যাতে অসুবিধা না হয়, সেদিকে নজর রেখে সকাল ৮টা থেকে ১১টা ও বিকেল ৩টে থেকে ৭টা পর্যন্ত বাস চলবে।"
আরও পড়ুন: Bus Fare Hike: বাড়ল বাসভাড়া, প্রত্যাহৃত ধর্মঘটের ডাক
তপনবাবুর বক্তব্য, "কেন্দ্রীয় সরকার দফায় দফায় ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি করছে। দেশের মানুষকে উলঙ্গ করে দিয়েছে। তার প্রতিবাদে আমরা বাস মালিকরা বস্ত্রহীন অবস্থায় লেনিন সরণী থেকে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত মিছিল করব। পয়লা নভেম্বর আমরা ওই মহামিছিল করব। ওই দিন ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি ও ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপও ঘোষণা করব।"
কেন এই সিদ্ধান্ত? তপনবাবু বলেন, "রাজ্য সরকার বাসের ভাড়া বাড়াবে না। আর বাস পরিষেবা বন্ধ করলেই সরকার আমাদের রক্তচক্ষু দেখাচ্ছে। তাই আন্দোলনের ধরন বদলে দিয়েছি।" দিনের অন্য সময়ে সাধারন যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়বেন। তার দায় কে নেবে? তাঁর জবাব, "দিনের ওই সময় সরকার বাস চালিয়ে পরিষেবা দিক।" তাঁর দাবি, "দুর্গাপুজোর সময় সরকারি বাস ছিল না, আমরা পরিষেবা দিয়েছি। আমাদের সিদ্ধান্ত সরকারকে জানিয়ে দিয়েছি।" এদিনের বৈঠকে জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটস, বর্ধমান, দুই মেদিনীপুর, হাওড়াসহ অন্যান্য বাস সংগঠনের কর্তারাও হাজির ছিলেন।
আগেই বলা হয়েছে, এই আন্দোলনকে নৈতিক সমর্থন করলেও এতে অংশ নিচ্ছে না মিনিবাস অপারেটর্স কো-অর্ডিনেশন কমিটি। এই সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক প্রদীপ বসু বলেন, "আপাতত এই আন্দোলনে সামিল হচ্ছি না। ভাইফোঁটার পর আন্দোলনের পথে যাব আমরা। আমরা এদিনের বৈঠকে ছিলাম না। তবে সরকারকে আমরাও বার্তা দেব।"