আবারও সল্টলেকে ভুয়ো কল সেন্টারের হদিশ। শুধু তাই নয়, তথ্যপ্রযুক্তি নগরীর এই কল সেন্টারের সঙ্গে মিলেছে হাওয়ালা যোগও। সেক্টর ফাইভের ওই ভুয়ো কল সেন্টারে হানা দিয়ে ৬ মহিলা-সহ ২১ জনকে গ্রেফতার করেছে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। কল সেন্টার ও সংস্থার ডিরেক্টরের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে লক্ষ-লক্ষ নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, সল্টলেকের সেক্টর ফাইভের ইপি ব্লকের গ্লোবসিন ক্রিস্টাল টাওয়ার বিল্ডিংয়ের ছয় তলায় রেনেসাঁ ইনফো ওয়েব প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি কল সেন্টার চলছিল। কল সেন্টারটির মালিক ইকো পার্ক এলাকার বাসিন্দা পরাগ কুণ্ডু। অভিযোগ, সেই কল সেন্টার থেকে আমেরিকার নাগরিকদের ফোন করে প্রতারণার জাল বোনা হয়েছিল।
নিজেদের মার্কিন টেলিকম সংস্থার কর্মী পরিচয় দিয়ে ইন্টারনেটের স্পিড বাড়ানো এবং ম্যালওয়্যার অ্যাটাক থেকে সুরক্ষার জন্য অ্যান্টিভাইরাস সাপোর্ট সংক্রান্ত বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিত প্রতারকরা। ভুয়ো সেই প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে বিদেশি মুদ্রায় লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিত প্রতারকরা। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই কয়েক কোটি টাকা প্রতারণা করে ফেলেছে এই চক্রটি।
আরও পড়ুন- ফের জোর চর্চায় কার্টুনকাণ্ড, অম্বিকেশের আর্জি নিয়ে বিরাট রায় আদালতের
বিশেষ একটি সূত্র মারফত এই অপরাধের খবর পেয়ে যায় বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতেই পুলিশের একটি দল হানা দেয় সল্টলেক সেক্টর ফাইভের ওই কল সেন্টারটিতে। সেখান থেকেই সংস্থার দুই ডিরেক্টর পরাগ কুণ্ডু এবং সঞ্জয় চন্দ্র দাস-সহ ২১ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের আরও দাবি, এই চক্রের আড়ালে রয়েছে হাওয়ালা যোগ। ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, এই চক্রটি বিদেশি নাগরিকদের ফাঁদে পেলে আমেরিকারই একটি ব্যাঙ্কের নির্দিষ্ট একটি অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দিতে বলত। পরে ওই টাকাই হাওয়ালার মাধ্যমে দিল্লির এক ব্যবসায়ীর কাছে পৌঁছে যেত। দিল্লির ওই ব্যবসায়ীর থেকে কলকাতার আর এক ব্যবসায়ীর মাধ্যমে সেই টাকা পৌঁছে যেত ভুয়ো কল সেন্টার মালিক পরাগ কুণ্ডুর কাছে।
আরও পড়ুন- পদ খারিজের নির্দেশিকাকে চ্যালেঞ্জ, বেনজির পদক্ষেপ ঝালদার অপসারিত চেয়ারপার্সনের
পুলিশ সূত্রের খবর, সল্টলেকের ওই অফিস থেকে ২ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা এবং পরাগের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে আরও ৩ লক্ষ ৬৭ হাজার টাকা নগদ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও ৪২টি কম্পিউটার, ২৩টি স্মার্ট ফোন, ২৬টি ডেবিট কার্ড, ৩টি হার্ড ডিস্ক, ১৬টি চেক বুক, ৪টি ব্যাঙ্কের পাসবুক, ৪টি প্যান কার্ড, দুটি রাউটার উদ্ধার করেছে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। এই চক্রের সঙ্গে আরও বেশ কয়েকজনের যোগ রয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশের। সেব্যাপারে বিস্তারিতভাবে জানতে ধৃতদের দফায়-দফায় জেরা চলছে।