কলকাতায় গত কয়েক বছর ধরেই বেড়েছে গণেশ পুজো। ধুমধাম করে পালিত হয় গণেশ চতুর্থী। গণেশ পুজো বারোয়ারি পুজোর চেহারা নিয়েছে বললেই ভুল বলা হবে না। অন্তত গণেশ চতুর্থীর আগে কুমোরটুলি ঢুঁ মেরে চোখে পড়ল সারি সারি গণেশ মূর্তি।
দুবছরের কোভিড মহামারী কাটিয়ে ছন্দে ফিরেছে এবারের পুজো। ইতিমধ্যেই মিলেছে হেরিটেজ তকমা। ফলে জাঁকজমকপূর্ণভাবে পুজোর আয়োজন হবে কলকাতা সহ জেলায় তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে দুর্গাপুজোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গণেশ পুজোতেই মেতে উঠতে প্রস্তুত তিলোত্তমা। ধুমধাম করে গণেশ পুজোর আয়োজনে চলছে চূড়ান্ত তোড়জোড়। গত বছরে কোভিড আবহে সেভাবে অর্ডার ছিল না। তবে এবার অর্ডার বেড়েছে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ। কুমোরটুলি জুড়ে চোখে পড়েছে ছোট, মাঝারি গণেশ মূর্তির অঢেল সম্ভার। শিল্পী চায়না পালের গোডাউনে থরে থরে সাজানো গণেশ মূর্তি।
শিল্পীর কথায়, "গত বছর পুজো হলেও ছোট ঠাকুরের চাহিদা বেশি ছিল। তবে চলতি বছর মাঝারি সাইজের ঠাকুরের চাহিদা অনেকটাই বেশি"। তবে সকাল থেকে কুমোরটুলি চক্কর কাটলেও সেভাবে বিশ্বকর্মা মূর্তি চোখে পড়েনি। তবে কি সিদ্ধিদাতার ভারে ঢাকা পড়ছেন বিশ্বকর্মা? প্রশ্নটা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: < ১৮ ফুটের প্রতিমার অর্ডার ফিরল, কুমোরটুলিতে ২ বছর পর চেনা ব্যস্ততা >
গত কয়েক বছরে হাতে গুনে বেড়েছে গণেশ পুজোর সংখ্যা। ফলে সুবিধা হয়েছে কলকাতার মৃৎশিল্পীদের। কুমোরটুলি জুড়ে ছোট বড় হরেক গণেশ মূর্তি চোখে পড়েছে। চলতি বছর ৩০ অগাস্ট রাত ৩টে ৩৩ মিনিট থেকে গণেশ চতুর্থীর পুজোর শুভক্ষণ ৩১ অগাস্ট রাত ৩টে ২২ মিনিট পর্যন্ত । গণেশ পুজোর শুভ সময় সকাল ১১টা ৫ মিনিট থেকে দুপুর ১টা ৩৮ মিনিট পর্যন্ত । হাতে আর মাত্র কটা দিন বাকী কুমোরটুলি জুড়ে চলছে শেষ মুহূর্তেই প্রস্তুতি।
কুমোরটুলির অন্যতম প্রধান মহিলা কারিগর চায়না পাল বলেন, "বেশ কয়েক বছর ধরেই গণেশ পুজোর সংখ্যা বেড়েছে। বাড়ির সঙ্গে সঙ্গে বারোয়ারি পুজোর সংখ্যাও বেড়েছে। গত বছরের তুলনায় অর্ডার অনেকটাই বেড়েছে। ছোট বড় গণেশ মূর্তি চাহিদা ভিত্তিক তৈরি করা হয়েছে তবে মাঝারি সাইজের গণেশের চাহিদাই সব থেকে বেশি"।
গত কয়েক বছর ধরেই কলকাতায় গণেশ পুজোর হিড়িক বেড়েছে। মহারাষ্ট্রের মতো কলকাতাতেও গণেশ পুজো বারোয়ারি পুজোয় পরিণত হয়েছে তা বলাই বাহুল্য। কেন সাড়ম্বরে বেড়েছে গণেশ পুজো? বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন হুজুকের শহর কলকাতা! আর সেটাই কারণ গণেশ পুজো বাড়ার। তবে তাতে কিছুটা হলেও গত ২ বছরের ধাক্কা সামাল দিতে সুবিধা হয়েছে কুমোরটুলির শিল্পীদের।
এ বিষয়ে কাঞ্চি পাল দত্ত বলেন, " প্রায় সব শিল্পী চাহিদার কথা মাথায় রেখে ছোট বড় গণেশ মূর্তি তৈরি রেখেছে। অর্ডার ছাড়াও রেডিমেড মূর্তি রাখা হয়েছে। গণেশ পুজোর আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। সকাল থেকে ক্রেতাদের আনাগোনা লেগেই থাকে। বাড়ির পুজোর পাশাপাশি ছোট ছোট বারোয়ারির সদস্যরাও আসছেন গণেশ মূর্তির দরদাম করছেন। তবে বড় বারোয়ারির তরফে আগেভাগেই অর্ডার দিয়ে রেখেছেন"।