রাজ্যে করোনা ভাইরাসে সুস্থতার হার বাড়ছে। কিন্তু আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। এহেন পরিস্থিতিতে সমস্যায় পড়েছে কলকাতার করোনা হাসপাতালগুলি। পাশাপাশি জেলার হাসপাতালগুলি থেকেও রোগীদের কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার কারণে চাপ বাড়ছে শহরের।
এখনও পর্যন্ত সংখ্যার বিচারে সোমবার পর্যন্ত করোনাভাইরাসের জেরে ৩৩ শতাংশ মৃত্যু হয়েছে খাস কলকাতার বাসিন্দাদের এবং ৬০% শতাংশ মৃত্যু হয়েছে জেলা থেকে আসা রোগীর। প্রসঙ্গত, পরিযায়ী শ্রমিকেরা রাজ্য ফেরার পর থেকেই জেলায় জেলায় প্রাবল্য বৃদ্ধি পেয়েছে করোনার।এ শহরে রাজ্য পরিচালিত করোনা হাসপাতাল রয়েছে এম আর বাঙ্গুর, বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল, কলকাতা মেডিকেল কলেজ এবং কেপিসি মেডিকেল কলেজ। এদের মধ্যে এম আর বাঙ্গুর এবং আইডিতে বেডের সংখ্যা ৫০০। অন্যদুই হাসপাতালে রয়েছে ১০০০টি বেড। বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে কোভিড রোগীরা ভর্তি হলেও, আসন সংখ্যা সেখানেও সীমিত। পাশাপাশি ভাড়াও অনেকটাই বেশি।
গত শুক্রবারই দিল্লি, পশ্চিমবঙ্গ এবং দেশের অন্য তিন রাজ্যকে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করা নিয়ে সমালোচনা করে সুপ্রিম কোর্ট। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতেও নির্দেশ দেয়।সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অশোক ভূষণ, এস কে কৌল এবং এম আর শাহের বেঞ্চের তরফে বলা হয়,
"অবিলম্বে প্রত্যেককে নিজ রাজ্যের সরকারি হাসপাতালের রোগীদের অবস্থা সম্পর্কে যথাযথ খবর নিন এবং প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করুন"।
এদিকে এই করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে বিক্ষোভ শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারা। সপ্তাহ দুয়েক ধরেই এই হাসপাতালকে কোভিড হাসপাতালে পরিণত না করার দাবিতে সরব হয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁদের দাবি, উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই। হাসপাতাল সূত্রে এদিন খবর সোমবার সকালে চিকিৎসা করাতে এসে ফিরে যেতে হয় বহু রোগীকে। এরপরই উত্তেজিত জনতা ইট ছোড়ে সাগর দত্ত হাসপাতালের গেটে লাগোয়া তৃণমূলের দলীয় অফিসে।
রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, "কলকাতাতেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক কোভিড হাসপাতাল রয়েছে। কলকাতা মেডিকেল কলেজ এবং এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে সবচেয়ে বেশি বেড রয়েছে। কিন্তু এরপরও আমরা সমস্ত রোগীকে স্থান দিতে পারছি না। সেই কারণে আমরা স্থির করেছি আরেকটি সরকারি মেডিকেল কলেজ আমরা কোভিড হাসপাতাল হিসেবে নেব।"
রাজ্যের স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, "কলকাতায় জনসংখ্যা অনেক বেশি। সেই কারণে করোনা ছড়াচ্ছে অনেক বেশি। প্রথম থেকেই রাজ্যের অন্যান্য জেলার তুলনায় তাই এখানে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি। সমস্যা শুরু হবে যখন ট্রেন পরিষেবা শুরু হবে। সামাজিক বিধিও থাকবে না। আরও ছড়াবে করোনা।"
যদিও তৃণমূল কংগ্রেস নেতা এবং চিকিৎসক সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, "সরকার যেটা ঠিক মনে করেছে সেটাই করেছে। এখনও পর্যন্ত একজন রোগীও চিকিৎসা বিনা ফেরত যাননি। সরকার কেপিসি হাসপাতালকে কোভিড হাসপাতাল ঘোষণা করেছে অনেক আগেই। সাগর দত্ত হাসপাতালকেও কোভিড হাসপাতাল হিসেবে চালু করার কথা রয়েছে। এরপর যদি করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে তখন সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।"
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন