বড়দিন বা ক্রিসমাস উৎসবকে স্বাগত জানাতে নিউটাউনের ইকো পার্কে খুলে দেওয়া হবে আইফেল টাওয়ারের রেপ্লিকা। এমনিতেই ইকো পার্কের সপ্তম আশ্চর্য উৎসবের মরসুমে জমজমাট। তার উপর আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হবে আইফেল টাওয়ারের রেপ্লিকা। সোমবার আইফেল টাওয়ার পরিদর্শন করতে যান হিডকোর চেয়ারম্যান দেবাশীষ সেন সহ হিডকো, এনকেডিএ আধিকারিক সহ চিফ ইঞ্জিনিয়াররা। এ বিষয়ে দেবাশীষবাবু বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় তৈরি এই টাওয়ার। আগামীকাল থেকে দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হবে। মানুষ তো বিদেশ ভ্রমণে সব সময় যেতে পারেন না, সুতরাং হাতের কাছে কিছু একটা থাকলে বিদেশ ভ্রমণের আকাঙ্ক্ষা খানিকটা পূরণ হয়।"
হিডকো সূত্রের খবর, ২০১৫ সাল থেকে ইকো পার্কে আইফেল টাওয়ারের রেপ্লিকা তৈরির কাজ শুরু হয়। ৫৫ মিটার উচ্চতার এই টাওয়ারের ২০ মিটার উচ্চতায় উঠে সুদূর বিস্তৃত নিউটাউনের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন সাধারণ মানুষ। ইকো পার্ক কতৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তার জন্য দর্শকদের ২০ মিটারের বেশি উপরে উঠতে দেওয়া হবে না। এই টাওয়ারে ওঠার জন্য লিফটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বড়দিনে পার্ক স্ট্রিটে কড়া নজর পুলিশের, যান চলাচলের ওপর নিয়ন্ত্রণ
এ ছাড়াও থাকছে ওয়াটার রাইড, বিভিন্ন গেমস সহ ইকো পার্কে স্নো পার্ক থেকে প্রজাপতি গার্ডেন সহ ডিয়ার পার্ক। বড়দিন উপলক্ষ্যে সোমবারের ছুটির দিনেও দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয় ইকো পার্ক। সোমবার এবং বছরের শেষ রবিবারে জমজমাট ছিল ইকো পার্ক। খাওয়াদাওয়ার সঙ্গে জমিয়ে আড্ডা, গান, ব্যাডমিন্টন, ডুয়েট সাইকেলে ভ্রমণ - এসবই রয়েছে তালিকায়। খোলা আকাশের নীচে ছোটরা ট্রয় ট্রেনে আনন্দ করছে, ওদিকে বড়রা সাইকেলে ঘুরছেন।
রাতের আলোয় আইফেল টাওয়ার (ইকো পার্কের)
অন্যদিকে, নয়-নয় করে তিনটে মেলা চলছে সল্টলেক থেকে নিউটাউনের মধ্যবর্তী এলাকায়। এর মধ্যে নিউটাউনের মেলা গ্রাউন্ডে এক সঙ্গে নিউটাউন মেলা, বইমেলার পাশাপাশি কবিতা উৎসব চলছে। তার উপর রবীন্দ্র তীর্থে এই প্রথম শুরু হয়েছে পৌষ মেলা, যা বাঙালির নজর কেড়েছে। সোমবার দুপুরে ফাঁকায়-ফাঁকায় মেলায় ঘুরতে এসে নিউটাউনের বাসিন্দা সোমাদ্রী চট্টোপাধ্যায়ের চক্ষু চড়কগাছ। বললেন, "ভেবেছিলাম বিকেল থেকে ভিড় বাড়বে। এ যে দেখি দুপুরেও দু’পা এগোতে ধাক্কা খেতে হচ্ছে। এত লোক!"
আরও পড়ুন: উইকেন্ডে শীতলতম দিনের আমেজ কলকাতায়
কলকাতা পুলিশের পাশাপাশি বড়দিন উপলক্ষ্যে বিধাননগর পুলিশও বাড়তি সজাগ। পুলিশের পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে, গত বছরের অভিজ্ঞতা থেকে প্রশাসন দেখেছে, বড়দিনে ইকো পার্কে সবচেয়ে বেশি ভিড় হয়। সে কারণে এই পার্কটিকে কতগুলি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। অপরাধ আটকাতে প্রতিটি ভাগে থাকবেন পুলিশকর্মীরা। তৈরি করা হবে সহায়তা কেন্দ্র। জায়গায় জায়গায় টহল দেবেন পুলিশকর্মীরা। পার্কের সিসি টিভিতে নজর রাখা হবে। খোলা হবে কন্ট্রোল রুম।
ইকো পার্ক এখন জমজমাট
দর্শকদের কথা ভেবে বাড়ানো হয়েছে টিকিট কাউন্টারের সংখ্যা। ইকো পার্কে আসার জন্য একদিকে যেমন বাসের সংখ্যা বাড়ানো হবে, তেমনি কলকাতার দিকে যাওয়া এবং কলকাতা থেকে আসা বাসগুলিকে নবাবপুর মোড় থেকে ঘুরপথে চালানো হবে, যাতে মূল রাস্তা সচল থাকে। আজ প্রাইভেট গাড়ি নিয়ে যাঁরা পার্কে আসবেন, তাঁদের 'সিলিকন ভ্যালি গ্রাউন্ড'-এ গাড়ি পার্ক করতে হবে। এর পাশাপাশি ডিয়ার পার্কের পিছনে রাম মন্দিরের কাছে ফাঁকা মাঠে প্রায় দু'হাজার গাড়ি পার্কিং এর ব্যবস্থা করা হয়েছে।