বাকি আর চব্বিশ ঘন্টা। আগামিকাল অর্থাৎ শুক্রবার দুপুরে ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়তে চলেছে ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় 'ফণী'। যাকে 'extremely severe cyclonic storm’ আখ্যা দিয়েছে কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর। শনি আর রবিবারে 'ফণী'-র ঝাপটার মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা বাংলা তথা কলকাতার। রাজ্যে পূর্বাভাস রয়েছে প্রবল বৃষ্টি এবং ১০০ কিমি গতিবেগের ঝড়ের। রাজ্য প্রশাসনে এখন যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে বিপর্যয় মোকাবিলার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি। গত শুক্রবার নবান্নে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে 'ফণী' নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। সর্বশেষ পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আজ দুপুর বারোটায় ফের বৈঠক হয়েছে নবান্নয়।
রাজ্য সরকারের অন্যান্য দফতরগুলির পাশাপাশি প্রস্তুতি তুঙ্গে কলকাতা পুলিশেও। গতকাল শহরের সব বিভাগীয় ডেপুটি কমিশনার এবং উচ্চপদস্থ অফিসারদের নিয়ে লালবাজারে দীর্ঘ বৈঠক করেন নগরপাল রাজেশ কুমার। এই বৈঠকে ঝড়ের তাণ্ডব সামলাতে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
১। ডিসি কমব্যাট ফোর্সের নেতৃত্বে কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী প্রস্তুত থাকবে আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই, অষ্টপ্রহর।
২। দশটি সিএসএসআর (Structural Collapse Search and Rescue) টিম শুক্রবার সকাল থেকে রাখা হবে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে, যাতে কোন দুর্ঘটনায় দ্রুত পৌঁছে যাওয়া যায় ঘটনাস্থলে। তৈরি রাখা হচ্ছে ঝড়ে গাছ পড়লে দ্রুত তা সরানোর জন্য একাধিক 'Tree Cutting Team’।
৩। কলকাতায় বিভিন্ন রাস্তায় রয়েছে অসংখ্য হোর্ডিং, যা খুব শক্তপোক্ত ভাবে লাগনো নয়, এবং হাওয়ার দাপটে যত্রতত্র যা উড়ে গিয়ে ক্ষয়ক্ষতি ঘটাতে পারে। কলকাতা পুলিশের তরফে কলকাতা পুরসভাকে অনুরোধ করা হবে এই সব হোর্ডিং চিহ্নিত করে সেগুলি সরিয়ে ফেলতে।
৪। বৃষ্টিতে শহর জলমগ্ন হয়ে পড়লে তৈরি রাখা হচ্ছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর স্পিডবোট।
৫। শুক্রবার শহরের সমস্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার প্রস্তাব পুলিশের তরফে দেওয়া হবে রাজ্য সরকারকে, এবং এই প্রস্তাব কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলেই নবান্ন সূত্রে খবর।
৬। কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে পর্যাপ্ত সংখ্যায় ক্রেন, রেকার মজুত রাখা হচ্ছে, তৈরি থাকছে ট্রমা কেয়ার অ্যামবুলেন্সও। প্রয়োজনে শহরের রাস্তায় শুক্রবার সন্ধে থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত ট্রাম চালানো বন্ধ করে দেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে।
৭। লালবাজারে 'রাউন্ড দ্য ক্লক' বিশেষ কন্ট্রোল রুম চালু হওয়ার সম্ভাবনা কাল থেকেই, যেখানে পুলিশের সঙ্গে থাকবেন পিডব্লিউডি, দমকল, পুরসভা এবং অন্যান্য সরকারি পরিষেবা সংস্থার প্রতিনিধিরা। ক্ষয়ক্ষতি সামলাতে বিভিন্ন দফতরের মধ্যে দ্রুত সমন্বয়ের জন্যই এই ব্যবস্থা।