বেড়া ভাঙছে কলকাতায়। সমকামী, রূপান্তরকামী-সহ প্রান্তিক যৌনতার মানুষদের জন্য শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তৈরি হচ্ছে ট্রান্স-ক্লিনিক। হাসপাতালের সর্বস্তরে এই সংক্রান্ত সচেতনতা গড়ে তুলতে ইতিমধ্যেই দুটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে ট্রেনিং শুরু হয়েছে বাইপাস সংলগ্ন পিয়ারলেস হাসপাতালে। সেখানে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন নিরাপত্তারক্ষী, চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী, নার্স, চিকিৎসক-সহ হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত পেশাদারদের প্রত্যেকেই। পিয়ারলেস সূত্রের খবর, আগামী ২ মে এই সংক্রান্ত মউ (মেমোর্যান্ডাম অফ আন্ডারস্ট্যান্ডিং) স্বাক্ষরিত হবে। ক্লিনিক শুরু হবে জুন মাসের শুরুতে।
পিয়ারলেস হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুবীর কর পুরকায়স্থ বলেন, "সাধারণভাবে আমাদের সমাজে প্রান্তিক যৌনতার মানুষজন এবং স্বাস্থ্য পরিষেবার মাঝখানে একটা অদৃশ্য দেওয়াল থাকে। রূপান্তরকামী-সহ এলজিবিটিকিউ কমিউনিটির অনেকেই চিকিৎসা পরিষেবা নিতে এসে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হন। সেই সমস্যা যে কেবলমাত্র অন্য রোগী বা তাঁদের পরিবারের কাছ থেকেই আসে, এমনটা নয়। আমরা যারা চিকিৎসা ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত, তারাও অনেক সময় এই বিষয়ে প্রত্যাশিত সংবেদনশীলতার পরিচয় দিতে পারি না।"
আরও পড়ুন: শহরের প্রবীনতম দোকানদার? চীনে খাবারের পসরা নিয়ে রেস্তোঁরা চালান ৯৮ বছরের কু শি
তিনি জানান, পিয়ারলেস হাসপাতাল এর আগেও প্রান্তিক যৌনতার মানুষদের চিকিৎসা পরিষেবা মূলস্রোতে সামিল করার লক্ষ্যে কিছু সদর্থক ভূমিকা রেখেছে। এই উদ্যোগটিও তারই ধারাবাহিক পরবর্তী পদক্ষেপ।
ট্রান্স ক্লিনিক গড়ার কাজে পিয়ারলেসের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে দুটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন - 'প্রান্তকথা' এবং 'অ্যাসোসিয়েশন অফ ট্রান্সজেন্ডার অ্যান্ড হিজরাস অফ বেঙ্গল (এটিএইচবি)'। প্রান্তকথার কর্তা বাপ্পাদিত্য মুখোপাধ্যায় এবং এটিএইচবির রঞ্জিতা সিনহা জানান, কেবলমাত্র চিকিৎসক বা নার্সই নন, তাঁরা পিয়ারলেসের প্রতিটি কর্মীর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছেন। বাপ্পাদিত্য বলেন, "পূর্ব ভারতে এমন উদ্যোগ এই প্রথম। এই ক্লিনিকে প্রান্তিক যৌনতার মানুষেরা খোলাখুলিভাবে তাঁদের সমস্যার কথা বলতে পারবেন। তাঁদের বিনামূল্যে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হবে।" রঞ্জিতার কথায়, "বেড়া ভাঙার লড়াইটা চিরকালীন। এটা সেই বড় লড়াইয়ের একটা অংশ।"