Advertisment

বিপদ বাড়াচ্ছে ওমিক্রন, জেনে নিন কীভাবে নিরাপদে রাখবেন আপনার সন্তানকে!

জেনে নিন কী বলছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

বিপদ বাড়াচ্ছে ওমিক্রন

মাথা ব্যথার অন্যতম কারণ ওমিক্রন। দিনে দিনে বাড়ছে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা। বিশ্বের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আমাদের দেশেও বেড়েছে ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা। ওমিক্রন হানায় জেরবার সমগ্র বিশ্ব। ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ২০০ পার করেছে। ধনকুবের বিল গেটসও এক টুইটের মাধ্যমে ওমিক্রন থেকে বাঁচার নিদান দিয়েছেন সেই সঙ্গে এই মহামারী নিয়ে সতর্কও করেছেন সকলকে। ওমিক্রন আতঙ্কে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের তরফে সব রাজ্যগুলিকে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা সেরে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।খাস কলকাতায় দুই বিদেশ ফেরত ব্যক্তির শরীরে ওমিক্রনের অস্তিত্ব মিলেছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। যা নিয়ে আশঙ্কার কালো মেঘ দানা বেঁধেছে আমাদের মনে।

Advertisment

ওমিক্রন নিয়ে চিন্তার কথা শুনিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (World Health Organization) প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথন। তিনি বলেন, ডেল্টার (Delta Variant) তুলনায় ওমিক্রনে সংক্রমণ ছড়াবে বেশি। প্রথম সংক্রমণের ৯০ দিনের মধ্যে ফের পুনঃ সংক্রমণ (Reinfection) হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও এই প্রজাতিতে অনেক বেশিমাত্রায় শিশুরাই আক্রান্ত হবে বলে জানান হয়েছে।

চিন্তা বাড়িয়ে তিনি এও জানান যে, “দক্ষিণ আফ্রিকা সহ বিশ্বের একাধিক দেশে ওমিক্রন প্রজাতি অত্যন্ত দ্রুত হারে বাড়ছে। প্রতিবেদনে দেখা যায় যে সেইসব দেশে আরও বেশি শিশু এই স্ট্রেনে আক্রান্ত হচ্ছে।" এদিকে এখনও শিশুদের জন্য ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে না। শুধুমাত্র কয়েকটি দেশ তাদের শিশুদের টিকা দিচ্ছে।

তিনি এও বলেন যে ‘শিশুদের জন্য ভ্যাকসিনের অনুপস্থিতি কোভিড-১৯ সংক্রমণের বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছে’। হু-এর প্রধান বিজ্ঞানী বলেন, "শিশুদের জন্য অনেক টিকা পাওয়া যায় না এবং খুব কম দেশেই শিশুদের টিকা দেওয়া হয়। শিশু এবং টিকা না দেওয়ায় বেশি সংক্রমণে আক্রান্ত হতে পারে। আমরা এখনও শিশুদের উপর ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের প্রভাবের তথ্যের জন্য অপেক্ষা করছি।"

ওমিক্রন থেকে কীভাবে নিরাপদে রাখবেন আপনার সন্তানকে, জানালেন প্রখ্যাত শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ইন্দ্রনীল চৌধুরী।

তাঁর কথায়, “ওমিক্রন অত্যন্ত সংক্রামক একটি নয়া করোনা ভ্যারিয়েন্ট। এর থেকে আপনার সন্তানকে নিরাপদে রাখার দায়িত্ব আপনারই। এর জন্য করোনার সেসকল সাধারণ নিয়ম মেনে আগে মেনে চলেছেন সেগুলিই আপনাকে মেনে চলতে হবে। সঙ্গে বাড়তি কিছু সতর্কতা প্রয়োজন”।

তিনি বলেন “নয়া এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে করোনার আগের উপসর্গগুলি অনেকে ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে না, তাই স্বাদ গন্ধ থাকলেও আপনার সন্তান আক্রান্ত হতে পারেন ওমিক্রনে। অতএব জ্বর হলেই আপনার সন্তানকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাবেন। শীতের মরসুমে বাচ্চাদের যাতে ঠাণ্ডা না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে”।

তাঁর কথায় “ফেস্টিভ সিজনে ভিড় এডিয়ে চলাই ভাল। বাড়িতে বাইরের থেকে মানুষজন এলে, বাচ্চাদের তাঁদের সামনে খুব একটা আনার প্রয়োজন না থাকলে আনবেন না। বেশি পরিমাণে ফল বাচ্চাদের খাওয়াবেন। ঠাণ্ডা জাতীয় কোন খাবার বাচ্চাদের থেকে দূরে রাখুন”।

“বাড়ির অন্যান্যরা টিকার দুটি ডোজ নিয়েছেন কিনা সেই দিকে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে। করোনা সময়কালে বাচ্চার মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে বেশি করে খেয়াল রাখবেন। বাচ্চাদের সঙ্গে বেশি করে কথা বলুন, বিভিন্ন ইন্ডোর গেম খেলুন অবসর সময়ে। বাচ্চাদের সময় দিন”।

কী কী দেখলে আন্দাজ করা যেতে পারে আপনার বাচ্চার দেহে ওমিক্রন হানা দিয়েছে কিনা?

চিকিৎসকের কথায়, “লক্ষণগুলির মধ্যে ফুসকুড়ি, পেট এবং তলপেটে সমস্যা, দুর্বলতা, জ্বর, শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা বৃদ্ধি ও শুকনো কাশি প্রাথমিক লক্ষণ। অসংক্রমিত দেহে ছড়িয়ে পড়তে পারে করোনা। তাই বাচ্চাদের মধ্যে এমন উপসর্গ দেখলে অবিলম্বে সতর্কতা নেওয়া উচিত।” তিনি এও বলেন, ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা এবং কোভিড-১৯ পরীক্ষাও করিয়ে নেওয়ায় উচিত। এছাড়াও শিশুদের মাস্ক পরানো, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা, স্যানিটাইজেশন করা শেখান এখনই”।

আপনার বাচ্চাকে এই সংক্রমণ থেকে কী কী উপায়ে দূরে রাখতে পারবেন?

লকডাউন, অতিমারীর জেরে শিশুমনে প্রভাব পড়েছে অনেকটাই। রুদ্ধ শৈশব ভাল নেই। যদিও করোনা দাপটে তাঁদের শারীরিকভাবে সুস্থ রাখতে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। যেমন-

দূরত্ব বজায় রাখা-

•সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে শেখান।

•প্রয়োজন না পড়লে বাইরের কারোর সঙ্গে কাছাকাছি না আসাই ভাল।

•বাইরে বন্ধুদের সঙ্গে খেলা আপাতত বন্ধ থাক। বরং ঘরে বসেই যে সব খেলা যায় সেগুলো করতে উৎসাহ দিন। ভার্চুয়ালি দেখা করান বন্ধুদের সঙ্গে।

•পাবলিক প্লেসে মুখ একদম মাস্ক দিয়ে ঢেকে রাখুন বাচ্চাদের।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা-

• চোখ, নাক, মুখ রগড়ানো থেকে আটকান। বুঝিয়ে বলুন সেটি।

• কিছুসময় বাদে বাদে হাত ধোয়া এবং স্যানিটাইজ করাও অভ্যাস করান।

• কাশি কিংবা হাঁচির সময় নাক-মুখ ঢাকতে উৎসাহ দিন।

• প্রাথমিক লক্ষণ থাকলে বাচ্চাকে বাকিদের থেকে আলাদা রাখতে হবে।

• ঘরে হাইজিন মেনে চলা জরুরি

• সবশেষে করোনার টিকার ব্যাপারে খোঁজ খবর রাখুন, প্রয়োজনে আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন

ঘর সবসময় জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করুন-

• দরজার বেল, টেবিল, চেয়ার সবসময় স্যানিটাইজ করুন।

• জুতো ঘরের বাইরেই রাখুন।

• ঢাকনা দেওয়া ডাস্টবিন ব্যবহার করুন।

• সবজি, ফল বাজার থেকে কিনে এনে আগে ধুয়ে পরিষ্কার করুন।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

coronavirus Omicron Strain Omicron and child health
Advertisment