বিশ্বের প্রথম, কলকাতার এক ব্যক্তির বাসা বাঁধল বিরল প্রজাতির ছত্রাক। গবেষকরা জানিয়েছেন সাধারণত এই ছত্রাক উদ্ভিদকে সংক্রমিত করে। মানুষের দেহে এই ধরণের ছত্রাকের সংক্রমণের রেকর্ড বিশ্বে এর আগে পাওয়া যায়নি বলেও গবেষকরা জানিয়েছেন। কীভাবে সংক্রমিত হলেন তিনি? জানা গিয়েছে পেশার কারণেই উদ্ভিদ মাশরুম এবং ছত্রাক নিয়ে গবেষণা করতেন তিনি। এর মাধ্যমে এটাও প্রমাণিত ছত্রাকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শের মাধ্যমে ছত্রাক মানুষের দেহে বাসা বাঁধতে পারে, এমনটাই জানিয়েছেন গবেষকরা।
কলকাতার এক মাইকোলজিস্ট বিরল ছত্রাক সংক্রমণের শিকার। এই ধরনের ঘটনা বিশ্বে প্রথম যেখান উদ্ভিদের উপর গবেষণা করা ব্যক্তি নিজেই ছত্রাকের সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। গবেষকদের মতে, এটি স্পষ্ট যে উদ্ভিদের সংক্রমণ মানুষের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়তে পারে যখন গাছপালা ছত্রাকের সঙ্গে মানুষের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগে থাকে।
এই বিষয়ে চিকিৎসকদের তরফে একটি রিপোর্ট সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে আক্রান্ত ব্যক্তির বয়স ৬১ বছর। বেশ কিছুদিন ধরেই আক্রান্ত ব্যক্তির কন্ঠস্বর বসে যেতে থাকে এবং পরে তিনি কলকাতার একটি বেসরকারিও হাসপাতালে যান। তিন মাস ধরে তার কাশি, গলার একাধিক সমস্যা এবং কথা বলায় কিছু সমস্যা হচ্ছিল বলেও তিনি চিকিৎসকদের জানান। চিকিত্সকদের মতে, "রোগী গত তিন মাস ধরে ডিসফ্যাজিয়া এবং অ্যানোরেক্সিয়াতেও ভুগছিলেন।"
চিকিৎসকরা আরও জানিয়েছেন, রোগীর ডায়াবেটিস, এইচআইভি, কিডনি রোগ, কোন ক্রনিক ডিজিজসের ইতিহাস নেই। রোগী পেশায় একজন উদ্ভিদ মাইকোলজিস্ট এবং তিনি বিভিন্ন গাছপালা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করছেন। দীর্ঘদিন ধরে ছত্রাক নিয়েও কাজ করছেন তিনি। এই বিষয়ে একাধিক গবেষণাও করেছেন।
কলকাতার অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালের গবেষক ডঃ সোমা দত্ত এবং ডাঃ উজ্জ্বিনী রায় রিপোর্টে জানিয়েছেন যে "কন্ড্রোস্টেরিয়াম পারপিউরিয়াম হল একটি উদ্ভিদ ছত্রাক যা উদ্ভিদে, বিশেষ করে গোলাপ গাছের পাতার রোগ সৃষ্টির জন্য দায়ি। এই প্রথম এই ছত্রাক মানুষের মধ্যে রোগ সৃষ্টি করেছে। যা এককথায় বিরল।এই ঘটনাটি পরিবেশগত ভাবে উদ্ভিদের ছত্রাকের মানুষের মধ্যে রোগ সৃষ্টির সম্ভাবনাকে আরও প্রবল করে তোলে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আক্রান্ত ব্যক্তির গলায় একটি ফোঁড়া ধরা পড়েছে। এটি অপসারণের জন্য্ অপারেশন করতে হয়। এর পরে, এক্স-রেতে অস্বাভাবিক কিছু মেলেনি এবং তারপরে রোগীকে অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধের কোর্স দেওয়া হয়েছিল। গবেষকরা জানিয়েছেন, "দুই বছর ফলোআপের পরে, রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছেন এবং পুনরায় সংক্রমণের কোনও প্রমাণ আপাতত মেলেনি”।