বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ফের উত্তপ্ত কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। অভিযোগ, বিগত দুবছর পর মেডিক্যাল কলেজে হঠাৎই ছাত্র সংগঠনের সদস্যদের অগোচরে নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঠিক করে নিয়েছেন অধ্যক্ষা মঞ্জুশ্রী রায়। ছাত্রছাত্রীদের দাবি, "নিয়ম মানেন নি অধ্যক্ষা, মেডিক্যাল কলেজে ছাত্র সংগঠনের স্বচ্ছ নির্বাচন চাই, বিধি মেনে নির্বাচন পরিচালন কমিটির বৈঠক হোক।" বর্তমানে অধ্যক্ষার ঘরের সামনে আন্দোলনরত প্রায় ৮০ জন পড়ুয়া।
অধ্যক্ষার ঘরের সামনে অবস্থানে বসে দাবি জানিয়ে স্লোগান তুলেছিলেন ছাত্র ছাত্রীরা। সেসময় তাঁদের ওপর চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে। অধ্যক্ষার ঘরের সামনেই অশান্তি হাতাহাতির পর্যায়ে চলে যায়। ঘটনায় একজনের চশমার কাচ ভেঙে দেওয়া হয়। গুরুতর জখম সেই ছাত্র।
আরও পড়ুন: ২২০ রকমের ধান, ১৩০ প্রজাতির ডিম, আর কী আছে এই শিক্ষকের সংগ্রহে?
দু'বছর মেডিক্যাল কলেজে নির্বাচন হয়নি। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন থেকে বারবার অধ্যক্ষকে জানালেও নির্বাচনের বিষয়ে তিনি কর্ণপাত করেন নি বলে অভিযোগ। সোমবার নির্বাচনের ব্যাপারে কলেজ কাউন্সিলের বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেডিক্যাল কলেজ। আগামী ১৪ জুন মেডিক্যাল কলেজে অনুষ্ঠিত হবে ছাত্র সংসদ নির্বাচন। তড়িঘড়ি হঠাৎই নির্বাচনের দিন ঠিক করে ফেলেছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এখানেই প্রশ্ন তুলছেন পড়ুয়ারা। কেন এত তাড়াহুড়ো? কেন বৈঠকে ডাকা হল না সংগঠনের বাকি সদস্যদের? কোনো নির্দিষ্ট দলকে কি জেতানোর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে? সামনেই প্রথম বর্ষের পরীক্ষা, তাদের কথা চিন্তা না করে কেন ভোটের দিন ঠিক করলেন অধ্যক্ষ?
ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধির অনুপস্থিতিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের। তাঁদের দাবি নিয়ম মেনে নির্বাচন হচ্ছে না, বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না কোনো ছাত্রছাত্রী। তাঁদের দাবি, "ভোট হলে স্বচ্ছভাবে হওয়া উচিত, নইলে নির্বাচন এবছরেও হবে না।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার সঙ্গে কথা বলেছেন মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া (বর্তমানে ইন্টার্ন) অনিকেত চ্যাটার্জি। তিনি বলেন, "নিয়ম হলো, নির্বাচনের দিন ঘোষণার ১৪ দিন পর নির্বাচন হওয়ার কথা। এক্ষেত্রে সেই নিয়ম মানা হয়নি। কাজেই নির্বাচনের দিন বদলাতে হবে। ২৮ জুন থেকে প্রথম বর্ষের পরীক্ষা শুরু। মূলত পরীক্ষার আগে মাসখানেক 'স্টাডি লিভ' দেওয়া হয় পড়ুয়াদের। এবছর প্রথমবর্ষের ছাত্রছাত্রীদের মাত্র ২০ দিনের স্টাডি লিভ দেওয়া হচ্ছে। তারা বাড়ি যেতে চাইলে, কোনো কারণ উল্লেখ না করে প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের বলা হয়, তোমরা কার নির্দেশ বাড়ি যাচ্ছ?" অনিকেত আরও বলেন, "আমাদের মনে হয়, এ বিষয়ে নিশ্চয়ই কোনো চক্রান্ত আছে।"
তাঁদের দাবি না মানলে অবস্থান বিক্ষোভ চলবে বলে জানিয়েছেন মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রছাত্রীরা। অন্যদিকে অধ্যক্ষ মঞ্জুশ্রী রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে কথা বলবেন না বলে জানিয়েছেন।