কলকাতা পুলিশ ও কলকাতা পুরসভা- এদেরকে না-বলে একচুলও কাজ এগোতে পারবে না কলকাতা মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। শনিবার এমনটাই জানালেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ফিরহাদ শনিবার বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। সেখানে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এখন থেকে কলকাতা মেট্রো রেল যে কাজই করুক না-কেন, তা কলকাতা পুরসভা ও পুলিশকে আগাম জানাতে হবে।
এর আগে মেট্রোর কাজ চলাকালীন বউবাজার এলাকার বাড়িতে ফাটল দেখা যাওয়া নিয়ে শনিবার নবান্নে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। ভার্চুয়াল মাধ্যমে এই বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়াও ফিরহাদ হাকিম নিজে তো ছিলেন। তাঁর সঙ্গেই ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, কলকাতা মেট্রোরেল কর্পোরেশন লিমিটেডের কর্তারা এবং রেল বোর্ডের আধিকারিকরা। সূত্রের খবর, সেখানেও মেট্রোকর্তাদের সোজাকথায় জানিয়ে দেওয়া হয়, কলকাতা পুলিশ ও কলকাতা কর্পোরেশনকে না-জানিয়ে একচুল কাজও করতে পারবেন না মেট্রোকর্তারা।
এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট ও মদন দত্ত লেন পরিদর্শন করেন কলকাতা পুরসভার মেয়র। সেখানে তিনি বলেন, 'ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো কাজের জন্য এই অঞ্চলের মাটি আলগা হয়ে যাচ্ছে। বারবার বাড়িগুলোয় ফাটল দেখা দিচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন এলাকার কাউন্সিলর, স্থানীয় থানার ওসি আর পুরসভার বিল্ডিং ডিপার্টমেন্টের লোকজন এখানে শিবির করে থাকবেন। বাসিন্দাদের যাবতীয় সুবিধা-অসুবিধা তাঁরা খতিয়ে দেখবেন। কাজ করতে গেলে কলকাতা পুরসভা এবং পুলিশকে ১৫ থেকে ২০ দিন আগে মেট্রো জানাবে। আমরাই সবাইকে হোটেলে সরিয়ে দেব। না-জানিয়ে কোনও কাজ মেট্রো করবে না।'
আরও পড়ুন- বর্ধমানে তৃণমূলের অস্থায়ী কার্যালয় থেকে বস্তাভর্তি তাজা বোমা উদ্ধার, নেতৃত্বের ষড়যন্ত্র!
একইসঙ্গে ফিরহাদ জানান, ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের মেট্রোর কর্তারা আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেবেন। ৩০ দিনের বেশি গৃহহীনদের ৫ লক্ষ টাকা, ভাড়াটে এবং দোকানের কর্মীদের দেড় লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেবেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে নতুন করে যাতে বিপদ না-বাড়ে, সেই ব্যাপারে আরও সতর্কতা অবলম্বন করছেন মেট্রোকর্মীরা। আপাতত টানেলে জল ঢোকা বন্ধ হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মাটির শক্তি বাড়ানো বা গ্রাউটিঙের কাজ চলছে। ইতিমধ্যেই দেড়শোর বেশি বাসিন্দাকে বিপদ এড়াতে ওই অঞ্চল থেকে সরানো হয়েছে। আরও বাসিন্দাদের সরানো হবে বলেই প্রশাসন সূত্রে খবর।