প্রোমোটিং ব্যবসার পথের কাঁটা তুলতেই নিউ টাউনে চঞ্চল মণ্ডল খুন?

নিউ টাউনের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের জমি বিক্রি সংক্রান্ত ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে গণ্ডগোলের সূত্রপাত হয়। সেই নিয়ে পরশু রাতে প্ল্যান মাফিক খুন হন চঞ্চলবাবু।

নিউ টাউনের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের জমি বিক্রি সংক্রান্ত ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে গণ্ডগোলের সূত্রপাত হয়। সেই নিয়ে পরশু রাতে প্ল্যান মাফিক খুন হন চঞ্চলবাবু।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

আদালতে তোলা হচ্ছে এক অভিযুক্তকে

মাত্র একদিনের মধ্যেই নিউ টাউনের পাথরঘাটার বাসিন্দা চঞ্চল মণ্ডলের খুনের কিনারা করল পুলিশ। এই মামলায় আটজনকে গ্রেফতার করেছে বিধাননগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। এদের মধ্যে দুজন চঞ্চলবাবুর প্রতিবেশী এবং পাঁচজন 'সুপারি' অর্থাৎ ভাড়াটে খুনি বলে জানা গেছে। এদের কাছ থেকে একটি স্বয়ংক্রিয় পিস্তল ও দুটি দেশি বন্দুক সহ তিন রাউন্ড গুলি পাওয়া গেছে। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, বুধবার ধৃতদের আদালতে তোলা হয়েছে, এবং পাঁচজনের পুলিশি হেফাজত ও তিনজনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Advertisment

সূত্রের খবর, পাথরঘাটা, ক্যানিং সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। নিউ টাউনের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের জমি বিক্রি সংক্রান্ত ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে গণ্ডগোলের সূত্রপাত হয়। সেই নিয়ে পরশু রাতে প্ল্যান মাফিক খুন হন চঞ্চলবাবু। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা (খুন) ও আর্মস অ্যাক্টের ২৫ ধারায় (অস্ত্র তৈরি এবং পাচার) মামলা রুজু করেছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, চঞ্চলবাবুকে খুনের জন্য পেশাদার খুনি নিয়োগ করেছিল তাঁর প্রতিবেশী অজিতেশ হালদার। ঘটনার দিন চারেক আগে নিউ টাউনের পাথরঘাটায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করে তিন জন। বেশ কয়েকবার এলাকা পরিদর্শনও করে তারা।

রবিবার রাতে বাইক থেকে নেমে ঘরে ঢুকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে নিউ চঞ্চলবাবুকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। ঘটনাস্থলেই মারা যান চঞ্চলবাবু। বাধা দিতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের মারে গুরুতর আহত হন তাঁর ভাই দেবব্রত মণ্ডলও।

আরও পড়ুন: নিউ টাউনে প্রোমোটার খুনের পর রাজারহাটে আবার প্রকাশ্যে সিন্ডিকেট দৌরাত্ম্য

Advertisment

তদন্তে নেমে প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ শুনে অভিযুক্তদের স্কেচ তৈরি করে পুলিশ। সোমবার রাতভর নিউ টাউন ও দক্ষিণ ২৪ পরগণার বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেফতার করা হয় আটজনকে। তাদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি পাওয়া গিয়েছে। উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রই খুনে ব্যবহার হয়েছিল কী না, তা এখনো জানা যায়নি। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, জমির দালালি করত অজিতেশ।

ব্যবসা সংক্রান্ত লেনদেন নিয়ে প্রতিবেশীর সঙ্গে বচসা হয়েছিল চঞ্চলবাবুর। সেই রাগেই ওই প্রোমাটারকে খুনের পরিকল্পনা করে অজিতেশ। পেশাদার খুনিদের সাহায্য নেয় সে। বস্তুত, খুনিরা যে মৃতের পরিচিত, সে সম্পর্কে প্রথম থেকেই নিশ্চিত ছিল পুলিশ। এর পর ধৃতদের নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করানো হবে।

নিউ টাউনের পাথরঘাটায় গুলিবিদ্ধ হয়ে চঞ্চলবাবুর খুনের ঘটনায় আবারও সামনে চলে এসেছে রাজারহাট ও নিউ টাউনের সিন্ডিকেট দৌরাত্ম্য। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তা সত্ত্বেও আদৌ কি সিন্ডিকেট দৌরাত্ম্য কমেছে?