কলকাতার পুলিশ কমিশনারের পর এবার কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার নজরে কলকাতা পুলিশের দুজন ডিসি, কল্যাণ মুখোপাধ্যায় (ডিসি, সাউথ ইস্ট ডিভিশন) এবং মুরলীধর শর্মা (ডিসি, স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স)। রোজ ভ্যালি কাণ্ডে এই দু’জন ডেপুটি কমিশনারকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। দুই ডিসি-কে ইতিমধ্যেই নোটিশ পাঠিয়ে তলবও করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহেই ওই দুই ডিসিকে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে চিঠিতে, নাহলে ওই আধিকারিকদের ফের চিঠি পাঠানো হবে বলে ইডি সূত্রে খবর।
কলকাতা পুলিশের দুই অফিসারকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে আগেই স্বরাষ্ট্র সচিবকে চিঠি দেয় ইডি। তারপরই রোজ ভ্যালি মামলার তদন্তে ওই দুই আইপিএসকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে ইডি চিঠি পাঠিয়েছে বলে খবর। রোজ ভ্যালি কাণ্ডের তদন্তে মূলত ওই দুই ডিসির বয়ান রেকর্ড করা হবে বলে ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন, হাজিরা দিতে চেয়ে সিবিআইকে চিঠি রাজীব কুমারের
ইডির চিঠি প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার তরফে যোগাযোগ করা হয় কল্যাণবাবুর সঙ্গে, তবে এ বিষয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। অন্যদিকে, মুরলীধর জানিয়েছেন, "কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ক ও অন্যান্য নথি সম্পর্কে তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে আমার কাছে। স্বরাষ্ট্র সচিব মারফৎ আমার কাছে এই তথ্য চাওয়া হয়েছে। হার্ড ডিস্কগুলো সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছিল। আমরা ইডিকে আদালতে যেতে বলেছিলাম। কিন্তু ইডি তা করেনি। যখন আমরা আদালতে গেলাম, তখন আদালতের তরফে আমাদের বলা হয়, যদি ইডি ওই জিনিসগুলো চায়, তবে ইডিই আদালতকে তা জানাবে। সেকথাই আমরা নির্দিষ্ট মাধ্যম মারফৎ ইডিকে জানিয়েছি।"
আরও পড়ুন, রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের
উল্লেখ্য, সারদা কাণ্ডে কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদ করা নিয়ে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে গত রবিবার। সেদিন লাউডন স্ট্রিটে সিপির বাড়িতে ‘সিক্রেট অপারেশন’ চালাতে সটান চলে যান সিবিআইয়ের একটি দল। যা নিয়ে কলকাতা পুলিশ ও সিবিআইয়ের মধ্যে বাদানুবাদ ও ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়। কয়েকজন সিবিআই আধিকারিককে রীতিমতো টেনেহিঁচড়ে শেক্সপিয়র সরণি থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। যে ঘটনায় শেষমেশ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় সিবিআই।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের তরফে জানানো হয়, রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিবিআইয়ের কাছে হাজিরা দিতে হবে। তবে জিজ্ঞাসাবাদের নামে ডেকে এখনই রাজীব কুমারকে গ্রেফতার করা যাবে না বলে নির্দেশ দেয় আদালত। এদিকে রাজীব কুমারের পর আরো একটি চিট ফান্ড মামলায় কলকাতা পুলিশেরই দুই আধিকারিককে ইডির এভাবে তলব ঘিরে রাজ্য-কেন্দ্র সংঘাত বাড়ছে বলেই মত সংশ্লিষ্ট মহলের।