যাদবপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় এবার ডামি ডল নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করল কলকাতা পুলিসের ফরেনসিক দল। ঘটনাটি হত্যা না-আত্মহত্যা, তা নিয়ে তদন্তেই হস্টেলে এসে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হল। এই মৃত্যু-কাণ্ডে অভিযুক্ত ছাত্ররা দাবি করেছে, মৃত ছাত্র আত্মহত্যা করেছে। পালটা, মৃত ছাত্রের পরিবারের অভিযোগ ওই পড়ুয়া র্যাগিংয়ের বলি। হয় তাঁকে খুন করা হয়েছে, অথবা তাকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়েছে। এক্ষেত্রে কোনটা সত্যি, তা খতিয়ে দেখতেই ডামি ডল দিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হল। কারণ, তদন্তকারীরা মনে করছেন, আত্মহত্যা করলে, তিনতলা থেকে ওই ছাত্রের পড়ে যাওয়ার ধরন যা হবে, তাঁকে ঠেলে ফেলে দিলে বা খুন করে দেহ ফেলে দিলে পড়ার ধরন একইরকম হবে না।
এই রিপোর্টের সঙ্গে, দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট মিলিয়ে দেখতে চান তদন্তকারীরা। আর, এই কারণেই তাঁরা ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ তথা সায়েন্টিফিক উইংয়ের বিশেষজ্ঞদের মতামত নিতে চাইছেন। এর আগে একই কায়দায় ডামি ডল নিয়ে তদন্ত চালাতে দেখা গিয়েছিল হাওড়ার আনিস খানের ক্ষেত্রে। সেখানেও খুন করে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু, তদন্তকারীরা ডামি ডল দিয়ে পরীক্ষার পর জানিয়ে দেন, আনিস খান দুর্ঘটনাবশত ওপর থেকে পড়ে গিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন- যাদবপুরে বৈঠক অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির, কড়া দাওয়াইয়ের সিদ্ধান্ত, নেওয়া হল কী ব্যবস্থা?
যাদবপুরের ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন গোটা ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল হস্টেলের ১০৪ নম্বর ঘরে। সেখানে থাকত মনোজিত নামে এক ছাত্র। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন যে মনোজিতের ঘরে বসে নির্যাতিত ছাত্রকে দিয়ে চিঠি লেখানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু, চিঠিটি শেষ পর্যন্ত ওই ছাত্র লিখতে চায়নি। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছে, তার বদলে চিঠিটি শেষ পর্যন্ত লিখেছিল দীপশেখর। সেই চিঠিতেই নির্যাতিত ছাত্রকে জোর করে সই করানো হয়েছিল। তারপর নির্যাতিত ছাত্রকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তিনতলার ৬৮ নম্বর ঘরে। সেখানে ইন্ট্রো দেওয়ার নামে তার ওপর মানসিক নির্যাতন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত তিন তলারই কোণের একটি জায়গা থেকে নীচে পড়ে মৃত্যু হয়েছে নির্যাতিত ছাত্রের।