সাধের পোষ্য নিখোঁজ! ত্রাতার ভূমিকায় কলকাতা পুলিশ। আর কলকাতা পুলিশের এমন কর্মকাণ্ডকে কুর্নিশ জানিয়েছেন সকলেই। সাধারণ ভাবে খুন-ডাকাতি-চুরি-ছিনতাইয়ের মত ঘটনায় আমরা পুলিশের দ্বারস্থ হই। প্রিয় পোষ্যের সন্ধানে ‘প্রাণপাত’ করেছে কলকাতা পুলিশ! এমন ঘটনা সামনে আসতে রীতিমত গর্বিত শহরবাসী। অবশেষে কলকাতা পুলিশের তৎপরতায় মাস দুয়েকের পোষ্যকে ফিরে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা ‘মা’ তৃষা কর্মকার। আর এই ঘটনায় এখন তোলপাড় ফেলেছে নেটদুনিয়ায়। কলকাতা পুলিশের এমন ভূমিকাকে ‘ধন্য ধন্য’ করেছে সকলেই।
ঠিক কী ঘটেছিল? কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, কালীপুজোর ঠিক পরের দিন, দু’মাসের ‘পোষ্যকে’ বাড়ির উঠোনে ঘুমন্ত অবস্থায় রেখে ১৫-২০ মিনিটের জন্য বেরিয়েছিলেন ‘মা’ তৃষা কর্মকার। অকাতরে ঘুমাচ্ছে তখন লুসি।
পাছে সন্তানের ঘুম ভেঙে যায়, তাই আলতো করে দরজা টেনে দিয়েই বাড়ি থেকে বের হন তৃষা দেবী। এসেই চক্ষু চড়কগাছ। গোটা বাড়ি হন্যে হয়ে খুঁজেও লুসির কোন সন্ধান না পেয়ে দিশেহারা অবস্থা তখন তৃষা দেবীর। গোল্ডেন রিট্রিভারের খোঁজে সারা পাড়া মাথায় করেছেন তিনি। কিন্তু লুসি বেপাত্তা। অগত্যা কলকাতা পুলিশের দ্বারস্থ হন তৃষাদেবী।
লুসিকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে চারু মার্কেট থানায় যান তিনি। চরম ব্যস্ততা সত্ত্বেও তৃষার কাতর আবেদনে সাড়া না দিয়ে পারেন নি দেন চারু মার্কেট থানার সাব-ইনস্পেকটর সর্বেশ্বর রায়। চারু মার্কেট থানার ওসি ইনস্পেকটর সুভাষ অধিকারীর নির্দেশে শুরু হয় রাতভর তল্লাশি, এলাকার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দেওয়া হয় লুসি-র ছবি।
অবশেষে পরদিন ভোরে নাইট পেট্রলিং টিমের নজরে পড়ে লুসি, বাড়ি থেকে কিছু দূরে ছোট মাঠে ভয়ে সিঁটিয়ে থরথর করে কাঁপছে লুসি। তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। থানায় এসে ‘মা’ তৃষাকে দেখতে পেয়ে ছুটে তাঁর কোলে গিয়ে আশ্রয় নেয় দু’মাসের শিশু লুসি। হারানো ‘সন্তানকে’ ফিরে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা তৃষা দেবী। লুসি-কে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করার জন্য কলকাতা পুলিশের তারিফ করেছেন তিনি। পাশাপাশি এই ঘটনায় সকলেই কলকাতা পুলিশকে কুর্নিশ জানিয়েছেন।