বড়দিনে শহরকে নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ছে লালবাজার। প্রতি বছরের মতো এবারও পার্ক স্ট্রিট চত্বরে নিরাপত্তা জোরদার করা হচ্ছে। উৎসবের শহরে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রায় ১,০০০ পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হচ্ছে বলে লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে। গোটা শহরে থাকছে ১১০টি পিকেট। উল্লেখ্য, শুক্রবারই শহরে 'কলকাতা ক্রিসমাস ফেস্টিভ্যাল'-এর উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রংবেরঙের আলো, ক্রিসমাস ট্রি-তে একেবারে জমজমাট পার্ক স্ট্রিট।
২৫ ডিসেম্বর পার্ক স্ট্রিটে কড়া নজরদারি চালাবে পুলিশ। পার্ক স্ট্রিট চত্বরে ১১টি ওয়াচ টাওয়ার থেকে চালানো হবে এই নজরদারি। বড়দিন মানেই পার্টির মুডে থাকেন শহরবাসী। শহরের হোটেলগুলোয় উপচে পড়ে ভিড়। তাই শহরের ৩০টি হোটেল ও ক্লাবে বিশেষ নজরদারি চালাবে পুলিশ। পাশাপাশি শহরের পার্ক, শপিং মলগুলিতেও চোখ রাখবে তারা।
আরো পড়ুন: পার্ক স্ট্রিটে পুলিশকে ‘টাচ’ করায় জুটল ‘চড়’!
লালবাজারের তরফে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তার স্বার্থে পার্ক স্ট্রিটকে সাতটি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। ওই চত্বরে থাকবেন ১০ জন ডিসি পদমর্যাদার পুলিশ আধিকারিক। প্রতিটি ডিভিশনে রিজার্ভ ফোর্স রাখা হচ্ছে। তাছাড়া থাকছে ২১টি ডিভিশনাল মোবাইল, ২০টি মোবাইল পেট্রলিং টিম, ১৩টি ক্যুইক রেসপন্স টিম, ১৪টি হেভি রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড, ও আটটি অ্যাম্বুল্যান্স। বিপর্যয় বাহিনীর ছ'টি দলও থাকছে। এছাড়া থাকছে ১৬টি পুলিশ অ্যাসিস্ট্যান্স বুথ। মেট্রো স্টেশনগুলিতেও চালানো হবে নজরদারি।
অন্যদিকে বড়দিনে পার্ক স্ট্রিটে যান চলাচলও নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। সেদিন বিকেল চারটে থেকে উড স্ট্রিট ও জওহরলাল নেহরু রোডের মধ্যে যান চলাচল বন্ধ করা হবে। গান্ধী মূর্তি থেকে মেয়ো রোড হয়ে জওহরলাল নেহরু রোড, মিডলটন স্ট্রিট, রাসেল স্ট্রিট, লিটল রাসেল স্ট্রিট ও ক্যামাক স্ট্রিটে (পার্ক স্ট্রিট থেকে মিডলটন স্ট্রিট) ওই সময় গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকবে। পার্ক স্ট্রিট ও রয়েড স্ট্রিটের মধ্যে ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের সংযোগকারী অংশও বন্ধ থাকবে।
কোন পথে চলবে গাড়ি? জওহরলাল নেহরু থেকে ফ্রি স্কুল স্ট্রিট যেতে হলে কিড স্ট্রিট ধরে যেতে হবে। তারপর ফ্রি স্কুল স্ট্রিট-রয়েড স্ট্রিট-রফি আহমেদ কিদওয়াই রোড-পার্ক স্ট্রিট হয়ে যাওয়া যাবে। হো চি মিন সরণি হয়ে জওহরলাল নেহরু রোড থেকে ক্যামাক স্ট্রিট যাওয়া যাবে। এজন্য গাড়ির রুট হল, ক্যামাক স্ট্রিট-শর্ট স্ট্রিট-উড স্ট্রিট-পার্ক স্ট্রিট বা ক্যামাক স্ট্রিট-শেক্সপিয়র সরণি/এজেসি বোস রোড।
আরো পড়ুন: ডিসেম্বরে দুর্গাপুজো? কে কবে শুনেছে?
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে অর্থাৎ ভিড় কমলে, শেক্সপিয়র সরণি হয়ে এজেসি বোস রোড থেকে জওহরলাল নেহরু রোডের দিকে গাড়ি যেতে পারবে। এছাড়া জওহরলাল নেহরু রোড ধরে আসা উত্তর ও দক্ষিণগামী গাড়িগুলিকে পার্ক স্ট্রিট উড়ালপুল দিয়ে ঘোরানো হবে। কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রে এমনই জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে, বড়দিন মানেই শহরের ডেস্টিনেশন থাকে নিক্কো পার্ক কিংবা ইকো পার্ক, নলবন। সেখানেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন জোনে ভাগ করা হয়েছে ইকো পার্ক। প্রতিটি জোনে থাকছে অ্যান্টি ক্রাইম স্কোয়াড, হেল্প ডেস্ক, পেট্রলিং দল, পুলিশ বাইক, পেট্রলিং কার। এছাড়াও ওই এলাকাগুলিতে কন্ট্রোল রুম খোলা হবে। ইকো পার্কে থাকা সিসিটভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হবে। ইকো পার্কে লাগামহীন ভিড়ের কথা মাথায় রেখে সেখানে অতিরক্ত টিকিট কাউন্টার খোলা হচ্ছে।
এছাড়াও ইকো পার্কে গাড়ি রাখা যাবে সিলিকন ভ্যালি গ্রাউন্ডে। হস্তশিল্প মেলায় গাড়ি পার্কিংয়ের ঠিকানা ইকো পার্কের ১নং গেটের কাছে। ইকো পার্কে থাকছে অতিরক্ত বাসের ব্যবস্থাও।