লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের অফিসের কম্পিউটার থেকে 'ফাইল ডাউনলোড' কাণ্ডে এবার ওই সংস্থারই কর্মীকে তলব করল লালবাজার। ডেকে পাঠানো হয়েছে লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের কর্মচারী চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এই চন্দন-ই 'ফাইল ডাউনলোড' নিয়ে লালবাজারের সাইবার সেলে প্রথম ইডি-র বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলেন।
২১-২২ অগাস্ট লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের অফিসে একটানা প্রায় ১৮ ঘণ্টা তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি-র গোয়েন্দারা। সেই সময় অফিসে ছিলেন ওই সংস্থার কর্মী চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে, চন্দন কলকাতা পুলিশের কাছে ইডি-র গোয়েন্দাদের বিরুদ্ধে সংস্থার একটি কম্পিউটারে ১৬টি ফাইল অচেনা ডাউনলোডের অভিযোগ দায়ের করেন। যা নিয়ে শোরদোল পরে যায়।
সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তে নামে কলকাতা পুলিশ। ইডি কর্তৃপক্ষের কাছে পুরো বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়। জবাবি চিঠি-তে কেন্দ্রিয় এজেন্সির তরফে বলা হয় যে, তাদের এক আধিকারিক ওই কম্পিউটারে মেয়ের জন্য হস্টেলের খোঁজ নিচ্ছিলেন, সে সময়ই ওই এক্সেল ফাইলগুলো ডাউনলোড হয়েছে! অন্যান্য অফিসারদের সামনেই ওই অফিসার মেয়ের হস্টেলের খোঁজখবর নিচ্ছিলেন। তাঁর মেয়ে এ বছর শিবপুরের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হয়েছে। হস্টেলে থাকতে শুরু করেছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার পর বাবা হিসেবে হস্টেল নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন ওই অফিসার। তাই মেয়ের সুরক্ষার কথা ভেবেই কলেজের হস্টেল সম্পর্ক কম্পিউটারে নানান খবরাখবর নিচ্ছিলেন। হস্টেল নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করার সময়ই ওই ১৬টা এক্সেল ফাইল কোনওভাবে ডাউনলোড হয়ে থাকবে। তাদের অন্য কোনও অভিসন্ধি ছিল না। এই ঘটনার সময় সংস্থার অন্যান্য কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন
ইডি-র এই উত্তরে সন্তুষ্ট নয় লালবাজার। মঙ্গলবার মেল মারফৎ ইডি-র এক আধিকারিককে লালবাজারে সশরীরে হাজির হয়ে পুরো বিষয়ের ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। কিন্তু সেই নির্দেশের প্রেক্ষিতে ফের মেল করে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। বলা হয়, যা বলার ইতিমধ্যেই লিখিত ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টিকে এত সহজ মনে করছে না কলকাতা পুলিশ। ঘটনাটির আরও তথ্য জোগাড়ে তাই এবার ডেকে পাঠানো হল লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের কর্মী চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। উল্লেখ্য, লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থারই শীর্ষ পদে কাজ করতেন নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অভিযুক্ত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে 'কালীঘাটের কাকু'। অন্যদিকে লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস-কে 'আমার সংস্থা' বলে গত সোমবার মেয়ো রোড়ে দাবি করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ইডি-র বিজ্ঞপ্তিতেই একই দাবি রয়েছে। ইডি-র অভিযোগ, এই সংস্থার মাধ্যমে প্রচুর অর্থ বেআইনি লেনদেন হয়েছে।