নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে ধৃত টেট চাকরিপ্রার্থীদের জামিন দিয়ে দিল ব্যাঙ্কশাল আদালত। ধৃত ৩০ জনকে আজ আদালতে তোলে পুলিশ। ধৃতদের বিরদ্ধে হিংসা ছড়ানো ছাড়াও পুলিশের উপর আক্রমণ-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছিল। তবে শর্তসাপেক্ষ জামিন দিয়েছে আদালত। আগামী ৭ দিন রোজ তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
প্রথমে বুধবারের বিক্ষোভে সামিল প্রায় ৩০০ জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। যদিও গতকাল রাতেই হেয়ার স্ট্রিট থানা থেকে বাকিদের ছেড়ে দিলেও ৩০ জনকে আটকে রাখে পুলিশ। তাঁদের মধ্যেই রয়েছেন অরুণিমা পাল নামে এক চাকরিপ্রার্থীও। গতকাল তাঁকেই তেড়ে এসে কামড়ে দিয়েছিলেন এক মহিলা পুলিশকর্মী। ধৃত এই ৩০ জনের বিরুদ্ধেই জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
আদালতে ধৃতদের আইনজীবী সওয়াল করেন, "শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে পুলিশের কামড়, এটা মানুষের কাজ নয়। পুলিশ কামড়ে দিয়েছে, হেনস্তা করেছে। মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। কামড়ানোর ঘটনায় মেডিক্যাল রিপোর্টে পুলিশের নাম নেই কেন? সংগঠনকে চিহ্নিত করতে বলছে পুলিশ, এরা কি মাওবাদী? যে কামড়াল সেই হাসপাতালে ভর্তি, কিন্তু যাঁকে কামড়াল তাঁকেই গ্রেফতার! তাহলে ভাবুন কতটা বিষাক্ত!" দুই পক্ষের সওয়াল-জবাব শোনার পর ধৃতদের শর্তসাপেক্ষে জামিন দেয় আদালত। তবে ধোপে টেকেনি পুলিশের সওয়াল।
উল্লেখ্য, নিয়োগের দাবিতে ২০১৪ সালের টেট প্রার্থীদের বিক্ষোভে বুধবার উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল কলকাতার রাজপথে। হাজার-হাজার টেট উত্তীর্ণ প্রার্থী নিয়োগের দাবিতে পথে নেমেছিলেন। দুপুরের দিকে আচমকা তাঁরা ধর্মতলা, এক্সাইড চত্বরে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিক্ষোভকারীদের রুখতে এই দুই জায়গাতেই মোতায়েন ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। শুরুতেই বিক্ষোভকারীদের পুলিশ আটকালে উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল ধস্তাধস্তি হয়। ঝড়ে রক্তও। রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় এক্সাইড মোড় চত্বর।
আরও পড়ুন- বড় ঘোষণা মমতার, বিধবা ভাতা ও লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী?
আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের তুলে নিয়ে যেতে প্রিজন ভ্যান আনে পুলিশ। কিন্তু সেই গাড়ির চাকার নীচে শুয়ে পড়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন চাকরিপ্রার্থীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম দশা হয় পুলিশেরও। কলকাতা পুলিশর ডিসি সাউথ আকাশ মাঘেরিয়ার নেতৃত্বে কঠোর হাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা শুরু হয়। চলে আন্দোলনকারী চাকরি প্রার্থীদের ধরপাকড়।
পরে মোট ২৮২ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। যদিও বুধবার রাতেই হেয়ার স্ট্রিট থানা থেকে ৩০ জনকে আটকে রেখে বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এই ৩০ জনকেই বৃহস্পতিবার আদালতে তোলা হবে। ধৃত এই ৩০ জনের মধ্যে রয়েছেন চাকরিপ্রার্থী অরুণিমা পালও। তাঁরই হাতে তেড়ে গিয়ে এক মহিলা পুলিশকর্মীকে কামড়ে দিতে দেখা গিয়েছে।