এ যেন যথার্থই অ্যাকশন রিপ্লে। ঠিক দশদিন আগে, অর্থাৎ ১৭ জুন রাতে, শহরের অন্যতম ব্যস্ত রাজপথে এক্সাইড মোড়ে হেনস্থার শিকার হন এক জনপ্রিয় মডেল-অভিনেত্রী। ফেসবুকে পোস্ট করে নিজের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা জানান তিনি। অভিযোগ করেন, কয়েক হাত দূরেই অবস্থিত ময়দান থানায় সাহায্য চেয়েও পান নি তিনি। এমনকি তাঁর অভিযোগ পর্যন্ত নিতে অস্বীকার করে থানা। বিস্তর কাঠখড় পুড়িয়ে অবশেষে অন্য থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ফের একবার নারী নিগ্রহের সাক্ষী হয়ে রইল কলকাতার আরেক ব্যস্ত জনপথ, এবার মোমিনপুর এলাকায়, প্রকাশ্য দিবালোকে। এবং এবারও ঘটনা জনসমক্ষে এলো একটি ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে। এক মহিলা বক্সার ওই পোস্ট করে তাতে কলকাতা পুলিশকে ট্যাগ করে জানান, শুক্রবার সকাল এগারোটার কিছু পরে খিদিরপুরে তাঁর বাড়ি থেকে রাইটার্স বিল্ডিংয়ে তাঁর কর্মস্থলে যাওয়ার পথে তাঁর স্কুটির সামনে এসে পড়ে এক যুবক, এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে শুরু করে তাঁকে। শুধু তাই নয়, তিনি প্রতিবাদ করলে তাঁর গায়ে ওই যুবক হাতও তোলে বলে পোস্টে জানান তিনি। কাছেই দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশকর্মী সব দেখেশুনেও সাহায্য করার বদলে মহিলাকে পরামর্শ দেন, তিনি যেন কাছাকাছি থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন।
অফিসের তাড়া থাকায় তা করতে পারেন নি মহিলা, তবে ফেসবুকে তাঁর অভিজ্ঞতার বিবরণ দিয়ে সরাসরি সাহায্যের আবেদন করেন লালবাজারের কাছে। সুখের বিষয়, সম্ভবত ওই মডেল-অভিনেত্রীর অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি রোধ করতেই দ্রুত মাঠে নামে কলকাতা পুলিশ।
পোস্ট করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অভিযোগের অপেক্ষা না করে স্রেফ পোস্টের ভিত্তিতেই স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে সাউথ পোর্ট থানায় মামলা রুজু করা হয়, এবং ডিসি পোর্টের নেতৃত্বে সিসিটিভি ফুটেজ খুঁটিয়ে দেখে পোর্ট ডিভিশনের অফিসারদের হাতে এক ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার হয় তিন অভিযুক্ত রাহুল শর্মা, শেখ ফিরোজ এবং ওয়াসিম খান। কলকাতা পুলিশ তাদের ফেসবুক পেজে জানিয়েছে, জেরায় নিজেদের অপরাধ স্বীকার করেছে ওই তিন যুবক। শনিবার তাদের আদালতে তোলা হবে।