Behala Nutan Dal Durga Puja Pandal: কলকাতার পুজো অনেক দেশ-বিদেশের শিল্পীর ছোঁয়া পেয়েছে। ফি বছর পুজো দেখতে আসেন বিদেশের বহু গুণীজনরা। অনেক বিদেশি শিল্পী আবার পুজো প্রস্তুতির অংশও হয়েছেন। এই যেমন গত বছর কলকাতার দুর্গাপুজোয় সূদুর নেদারল্যান্ডস থেকে দুই শিল্পী এসেছিলেন। কাজ করেছিলেন কলকাতার শিল্পীর সঙ্গে। এবারও সেই পুজো কমিটিতেই অন্য আরেক দেশের শিল্পীরা যোগ দিলেন।
কলকাতার দুর্গাপুজো এখন দেশ-কালের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশ-বিঁভুইয়েও নজর কাড়ছে। বিদেশের মাটিতেও প্রবাসী বাঙালিরা মেতে ওঠেন শারদোৎসবে। কুমোরটুলি থেকে দুর্গা প্রতিমা যায় সাতসমুদ্র পেরিয়ে। বছর দুয়েক আগেই বিশ্বের দরবারে স্বীকৃতি পেয়েছে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব। ইউনেস্কোর ইনট্যানিজবল কালচারাল হেরিটেজের মর্যাদা পেয়েছে বাংলার দুর্গাপুজো। বিদেশীরাও এবার মেতে উঠছেন দুর্গতিনাশিনীর আবাহনে। এবছরও কলকাতার দুর্গাপুজোয় বিদেশির ছোঁয়া পাচ্ছে।
সুদূর আয়ারল্যান্ড থেকে দুই শিল্পী এসে এবার বেহালা নূতন দলের পুজোর অংশ হলেন। গতবছর এই পুজোতেই শিল্পীর ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল দুই ডাচ শিল্পীকে। এবার দুই আইরিশ শিল্পী লিসা সুইনি এবং রিচার্ড ব্যাবিংটন অংশ হলেন নূতন দলের পুজোর। পুজোয়, আইরিশ এবং কলকাতার শিল্পী সঞ্জীব সাহা বেহালা নূতন দলে মণ্ডপসজ্জার কাজ একসঙ্গে করছেন। তাই মণ্ডপে থাকছে দুই দেশের শৈল্পিক ঐতিহ্যের ছোঁয়া। নয়াদিল্লিতে আয়ারল্যান্ডের দূতাবাস ভারত-আয়ারল্যান্ড কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭৫তম বার্ষিকী স্মরণে এই উদ্যোগ।
UNESCO তালিকাভুক্তির পর দুর্গাপুজোরর বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতির পরিপ্রেক্ষিতে, গালওয়ের বিখ্যাত আইরিশ গ্রুপ ম্যাকনাস এবং কলকাতার বেহালা নূতন দলের শিল্পীরা মা দুর্গার সঙ্গে আইরিশ দেবী দানুর একটি মূর্তি স্থাপন করতে সম্মত হয়েছেন। একটি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উভয় পক্ষই সম্মত হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
কে এই দেবী দানু?
দেবী দানু আইরিশ পুরাণে প্রকৃতির দেবী। তাঁর সঙ্গে দেবী দুর্গার সাদৃশ্য রয়েছে। দেবী দুর্গার মতোই শক্তি এবং মাতৃত্বের দেবী। তিনি মা, যোদ্ধা এবং নারীশক্তির প্রতীক। তাঁর বাস জলে, তাই দেবী দানুর বাঁশের মূর্তি একটি জলাশয়ে স্থাপন করা হচ্ছে। বেহালা নূতন দলের থিমমেকার সঞ্জীব সাহা এমন যৌথ উদ্যোগের জন্য খুবই উচ্ছ্বসিত। থিম 'কল্পনা'র মাধ্যমে এক অনন্য প্রাকৃতিক ভাবনা উপস্থাপন করছেন তিনি। বাঁশ এবং কাঠই হল মূল উপকরণ এই থিমের।
সম্প্রতি, ভারতে আয়ারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত, কেভিন কেলি, আয়ারল্যান্ড এবং ভারতের মধ্যে গভীর সম্পর্কের অংশীদারিত্বকে তুলে ধরেছেন, শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং মূল্যবোধকে বিস্তৃত করেছেন, নতুন সুযোগগুলি অন্বেষণ এবং তাদের সম্পর্ক জোরদার করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন৷
আরও পড়ুন কলকাতার দুর্গাপুজোয় এবার বিদেশির ছোঁয়া, সুদূর নেদারল্যান্ডস থেকে এলেন দুই শিল্পী
“কলকাতার দুর্গাপূজা আমার দেখা সবচেয়ে আশ্চর্যজনক উৎসবগুলির মধ্যে একটি। শক্তি, সৃজনশীলতা এবং সম্প্রদায়ের চেতনা অতুলনীয়।", কেলি বলেছেন।
কী বলছেন দুই আইরিশ শিল্পী?
শিল্পী রিচার্ড ব্যাবিংটন বলেছেন, "আইরিশ এবং ভারতীয় সৃজনশীলতার এই সংমিশ্রণ দুই দেশের সাংস্কৃতিক চেতনা ও ঐহিত্যকে প্রতিফলিত করবে এবং নারীর শক্তি এবং নারীর চেতনা উদযাপন করবে।" তাঁরা ভারতে প্রথমবার এসেছেন এবং প্রথম কোনও পুজোমণ্ডপের কাজ করছেন। রিচার্ড এবং লিসা জানিয়েছেন, ভারতে এসে এখানে অনেক গুণী শিল্পীদের কাজ করতে পেরে খুব আনন্দিত।
সহযোগিতার বিষয়ে বলতে গিয়ে, বেহালা নূতন দলের আহ্বায়ক এবং ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের সহ-সভাপতি সন্দীপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আয়ারল্যান্ড তার স্বাধীনতা এবং ভারতের সাথে তার সম্পর্কের ৭৫ বছর উদযাপন করছে। সেই উদযাপনের অংশ হিসাবেই আইরিশ দূতাবাসের তরফে পুজো কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।