সময়টা সত্যি খারাপ যাচ্ছে রাজ্যের বাজি বিক্রেতাদের। ক'দিন আগে অবধি ময়দানের বাজি বাজার কোথায় হবে তা নিয়ে ছিল টালমাটাল অবস্থা। যার জেরে পিছিয়েও যায় মেলার দিন। এবার রাতের ঘুম উড়েছে অন্য কারণে। সিইএসসি, অর্থাৎ ক্যালকাটা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কর্পোরেশন, তাঁদের হাতে ধরিয়েছে বিল। এবং সেই বিল যে সে অঙ্কের নয়, পুরো ৭ লাখ ৩০ হাজার টাকার! এতেই শেষ নয়, সঙ্গে রয়েছে সিকিউরিটি ডিপোজিট বাবদ আরও প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা।
সমস্যা যেন এবার কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না বাজি বাজারের। সুপ্রিম কোর্টের দু'ঘণ্টার বেশি সময় বাজি পোড়ানো নিয়ে নিষেধাজ্ঞার জেরে একেই বাজার এবার মন্দা যাবে বলে আশঙ্কা রয়েছে ব্যবসায়ীদের মনে। এদিকে আবার গোদের উপর বিষফোঁড়া। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে ঠিক হয়, ময়দান থেকে বিবেকানন্দ পার্কে সরবে বাজি বাজার। তাতে এমনিতেই ৪০ শতাংশ ক্ষতির মুখ দেখবেন ব্যবসায়ীরা, এমনটাই জানান সারা বাংলা বাজি বাজারের চেয়ারম্যান বাবলা রায়। এবার এই মোটা অঙ্কের বিদ্যুতের বিল। সব মিলিয়ে বিবেকানন্দ পার্ক বাজি বাজারের সূচনাটা আদৌ শুভ হচ্ছে না।
আরও পড়ুন: Firecrackers banned: পশ্চিমবঙ্গে নিষিদ্ধ ১০৫, ছাড়পত্র পেয়েছে সাতটি শব্দবাজি
কেন এত টাকার বিল? কারণ নতুন সংযোগ দিতে হবে বিবেকানন্দ পার্কে। সিইএসসি কর্মকর্তারা জানান, হাই টেনশন তার নেই ওই এলাকায়। যে কারণে বিলের অঙ্ক এত বেশি হয়েছে। তবে স্বস্তির পথ দেখিয়েছে সিইএসসি স্বয়ং। পরামর্শ দিয়েছে, কলকাতা পুরসভার দ্বারস্থ হলে এবং পুরসভা লিখিত ভাবে জানালে বাড়তি টাকা ফেরত দিয়ে দেবে সিইএসসি। কিন্তু কাগজে কলমে এত কিছু করতে গেলে ফের পিছিয়ে যেতে পারে মেলা শুরু হওয়ার দিন। কারণ এই লিখিত চিঠি দেবেন পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, যাঁর সঙ্গে এ বিষয়ে দেখা করতে গেলে আগাম তারিখ বা সময় নিয়ে রাখতে হবে। একেই কলকাতার বাকি বাজি বাজারের থেকে পিছিয়েই ৩ তারিখ নির্ধারিত হয়েছিল মেলার দিন। তাই আর সময় নষ্ট করতে নারাজ বাজি বাজারের কর্মকর্তারা। নিজেদের গাঁটের কড়িই সিইএসসি কে দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ শুরু করিয়েছেন তাঁরা।
ইতিমধ্যে দমকল বিভাগ, ও ট্রাফিক কন্ট্রোলের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে অনুমতি পত্র। বড়বাজার বাজি বাজারের মুখ্য সহ সম্পাদক চিত্তরঞ্জন মাইতি বলেন, "আমার মনে হয়, টাকা যখন ওরা পেয়ে গেছে, সে টাকা আর ফেরত পাবো না। কিন্তু তাও পরবর্তী কালে লিখিতভাবে আর্জি জানাব। তারপর সবটাই মেয়রের ওপর নির্ভর করছে।"
আরও পড়ুন: দীপাবলিতে আলোর বাজারে ঘনিয়েছে অন্ধকার
তবে সিইএসসি জানিয়েছে, "আমরা কোনো অন্যায় বিল তাদের ধরাই নি। আমাদের একটি কম্পিউটারাইজড সিস্টেম রয়েছে যার মাধ্যমে তারের দৈর্ঘ্য, প্রয়োজনীয় ওয়াটেজ, শ্রমিকের সংখ্যা এবং মেলার দিনের সংখ্যা, সবকিছু হিসেব করে ন্যায্যভাবেই মূল্য ধার্য করা হয়েছে।"