'দলবদলু' রায়গঞ্জের বিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীকে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান করেছে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। যা নিয়ে ফের টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। এই ইস্যুতে ফের আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে এসবে আমল দিচ্ছেন না কৃষ্ণ। উল্টে তাঁর দাবি, 'লাভ হবে না।'
শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, বিজেপির দেওয়া তালিকা থেকে কাউকে নয়, সাত নম্বরে নাম থাকা বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীকে পিএসি চেয়ারম্যান করা হয়েছে। আর এসব হয়েছে, নবান্নের ১৪ তলা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে।
গতবার কৃষ্ণনগর উত্তরের বিজেপি মুকুল রায়কে মুকুল রায়কে পিএসি-র চেয়ারম্যান করা হয়েছিল। ভোটের ফলাফলের দেড় মাসের মধ্যে স্বপুত্র মুকুল তোপসিয়ার তৃণমূল ভবনে গিয়েছিলেন। তৃণমূল নেত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে ঘাস-ফুল পতাকা ধরেছিলেন। এরপর পরই দলত্যাগ আইনে মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজের জন্য অধ্যক্ষের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এরমধ্যেই খাতায়-কলমে বিজেপি বিধায়ক মুকুলকেই পিএসির চেয়ারম্যান করা হয়। ফলে গেরুয়া অসন্তোষ বাড়ে। বিধানসভার নীতি-নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। মামলা গড়ায় আদালতে। শেষ পর্যন্ত আদালত অধ্যক্ষকেই চূড়ান্ত রায় জানানোর নির্দেশ দেয়। অধ্যক্ষ মুকুল রায়কে বিজেপি বিধায়ক বলেই সাব্যস্ত করেন।
আরও পড়ুন- নবান্নে আর মোবাইল নয়, মমতার বাড়ির নিরাপত্তায় আমূল রদবদল
মুকুল ওই কমিটি থেকে ইস্তফা দিতেই ফের পদ্ম শিবিরের আরেক 'দলবদলু' বিধায়ককে ওই পদে বসানো হয়। এবারও তাই আদালতে যাওয়ার হুমকি দিয়ে রাখলেন বিরোধী দলনেতা। এ দিন শুভেন্দু বলেছেন, '১৪ তলা থেকে মানীয়া বিধানসভা চালাচ্ছেন। বিধানসভার গরিমা, আইন, ঐতিহ্য এখন স্বীকৃত নয়। ওরা বেআইনি কাজ করায় ভয় পাচ্ছেন। বিরোধী দলকে এখনও পিএসি চেয়ারম্যান মনোনয়নের কপি দেওয়া হয়নি। আমার দফতরকে বলেছি বুধবার কপি চাওয়ার জন্য বলতে বলেছি। বৃহস্পতিবারের মধ্যে দিলে ভালো, না হলে কোর্টে যাব। আর দিলেও যাব।'
এরপরই শুভেন্দু অধিকারীর হুঁশিয়ারীকে কার্যত তুচ্ছ করে দিয়েছেন বিধানসভাপ পিএসি চেয়ারম্যান কৃষ্ণ কল্যাণী। তাঁর কথায়, 'শুভেন্দুবাবুরা কোর্টকেই ভালবাসেন। সুযোগ পেলেই কোর্টে যান। তবে লাভ হবে না। কারণ স্পিকার যা করেছেন তা আইন মেনেই করেছেন।'
উল্লেখ্য অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়েছিলেন যে, বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীর দলবদলের খবর বিধানসভার অন্দরে কেউ কিছু জানেন না। দলবদলের পক্ষে কোনও নথি প্রমাণও নেই। বাইরে কে কি করছেন তার সঙ্গে বিধানসভার অন্দরের কোনও সম্পর্ক নেই।