নতুন বছরের শুরুতেই দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে তৃণমূলের একাধিক শীর্ষ নেতাদের বাক্যবাণে বঙ্গ রাজনীতিতে প্রবল উত্তাপ ছড়াল। তৃণমূলে ফের প্রকট হল প্রবীণ-নবীন দ্বন্দ্ব। যা নিয়েই দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল সকলের সামনে। এর মধ্যেই মমতা-অভিষেককে, শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপি নেতৃত্বের চাঁচাছোলা আক্রমণের মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ মন্ত্রীদের একাংশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন কুণাল ঘোষ। মন্ত্রীদের তাঁর বার্তা, চোখে চোখ রেখে বিজেপিকে নিশানা করার জন্য নতুন বছরে সংকল্প করুণ। পাশাপাশি তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক এদিন উত্তর কলকাতার প্রবীণ সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও মুখ খুলেছেন।
কুণালের তোপ-
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের কথায়, 'রোজ চোর চোর বলে মমতাদি ও অভিষেককে কুরুচিকর ভাষায় টার্গেট করা হচ্ছে। বিশেষ করে শুভেন্দু অধিকারী ও বিজেপি এই আক্রমণ করছে। আর আমাদের দলের কয়েকজন সিনিয়র নেতা, যাঁরা সামনের সারিতে রয়েছেন, দলীয় পদ ও মন্ত্রী হয়ে বসে আছেন তাঁরা কোনও কথা বলেন না। ওঁরা পাল্টা শুভেন্দুদের চোর চোর বলছে না। এটা হতে পারে না। এঁরা তো সকাল সন্ধে মমতাদির সঙ্গে থাকেন। তাঁরা কী আঙুল চুষছেন? দিনের পর দিন পদ আঁকড়ে থাকব, সব রকম সুযোগ সুবিধা ভোগ করব আর দলের কঠিন সময়ে গা বাঁচিয়ে চলব। চোরকে চোর বলবো না এটা হতে পারে না। আমার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেউ আক্রমণ করলে তা বসে বসে দেখব, শুধু ন্যাকা ন্যাকা কথা বলব কিংবা আঙুল চুষব এটা কেমন ধারা! নিচুতলার নেতা কর্মীরা এর থেকে কী শিখবেন? এইসব নেতা, মন্ত্রীরা দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে সংকল্প নিক যে, চোরদের চোর বলবো।'
কুণালের কাঠগড়ায় মমতা ঘনিষ্ঠ মন্ত্রী কারা? তা খোলসা করেননি দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক।
আরও পড়ুন- ‘আমার ধারণা উনি পিছবেন না’, বছরের শুরুতেই ‘নাছোড়’ অভিষেককে বার্তা মমতার ‘দূত’ সুব্রতর
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি-
দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে লোকসভায় তৃণমূলের নেতা সোমবার বলেছেন যে, 'মমতা না থাকলে বাংলা ছাগলের তৃতীয় সন্তান হয়ে যেত। দেশের রাজনীতিতে মমতা আছেন বলেই বাংলা আলোচনায় রয়েছে।'
অর্থাৎ দলের নেতৃত্ব ইস্যুতে অভিষেক নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই যে শেষ কথা তা বোঝাতে চেয়েছেন দলের এই প্রবীন নেতা।
'অন্ধ আনুগত্য দেখানোর চেষ্টা'
দলের রাশ ছাড়া নিয়ে এদিন সুদীপকে তুলোধনা করেছেন কুণাল। বলেছেন, 'সুদীপদা তো কয়েকদিন আগেই দেখলেন অভিষেকের নেতৃত্বের ঝাঁঝ। তাবলে মমতাদি না থাকলে বাংলা ছাগলের তৃতীয় সন্তান হয়ে যাবে এটা ওনার বলা সাজে না। যাঁরা এসব বলছেন তাঁরা অন্ধ আনুগত্য দেখানোর চেষ্টা করছেন। সামনে থাকলে ভাবসম্প্রসারণ শুনিয়ে দিতাম। এইসব কথায় বিভাজন তৈরি হচ্ছে। আমরা চাই প্রবীণরা থাকবেন মাথার উপরে, নবীনদের সঙ্গে নিয়ে চলতে হবে।'
আরও পড়ুন- বছর শুরুতেই বিস্ফোরক ফিরহাদ! চাকরি দুর্নীতি মেনে নিয়ে দায়ী করলেন কাদের?