দায়িত্ব বাড়ল কুণাল ঘোষের। অধিকারী গড় সামলানোর ভার পেলেন রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন মমতা এবার কুণালকে বাঘের মুখে ঠেলে দিলেন। এবার থেকে হলদিয়া, নন্দীগ্রাম-সহ পূর্ব মেদিনীপুরে শাসকদলের ব্লকস্তর থেকে জেলা সংগঠন দেখভাল করার দায়িত্ব সামলাবেন কুণাল ঘোষ। শীর্ষ নেতৃত্বের সঁপে দেওয়া দায়িত্ব পালনে এবার পূর্ব মেদিনীপুরের মাটি আঁকড়ে পড়ে থাকার সংকল্প নিয়েছেন কুণাল। এদিকে, কুণালকে 'জেলখাটা আসামী'র তকমা দিয়ে উপর্যুপরি আক্রমণ শানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারীও।
শুভেন্দুর খাস তালুকে এবার দল সামলানোর দায়িত্ব পেলেন কুণাল ঘোষ। পূর্ব মেদিনীপুরে তৃণমূলের দলীয় সংগঠনের দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কুণাল ঘোষকে। বছর ঘুরলেই রাজ্যে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন। সব কিছু ঠিকঠাক চললে আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিল নাগাদ রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট হতে পারে। তার আগে রাজ্যজুড়ে দলের যাবতীয় ফাঁকফোকর মেরামতের তোড়জোড় তুঙ্গে তুলেছে তৃণমূল।
একুশের নির্বাচনে নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ভোটে লড়ে হার হয় তৃণমূল সুপ্রিমোর। শাসকদলের সেই ক্ষত এখনও দগদগে। শুভেন্দুও একুশের ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে প্রতিটি সভা-মিছিলে প্রায় নিয়ম করে নন্দীগ্রামে তৃণমূলনেত্রীকে ভোটে হারানোর বিষয়টি ফলাও করে প্রচার করে চলেছেন। যদিও পূর্ব মেদিনীপুরে আগের চেয়ে অনেকটাই জমি ফিরে পেয়েছে তৃণমূল। তবে এতেই আত্মতুষ্টিতে নারাজ শাসক শিবির। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তাই এবার পঞ্চায়েত ভোটের আগে বাড়তি নজর পূর্ব মেদিনীপুরে।
আরও পড়ুন- গুজরাটে নাগরিকত্ব দান: উচ্ছ্বসিত শুভেন্দু, বললেন- ‘এবার বাংলাতেও CAA কার্যকর হবে’
একদা অধিকারী পরিবারের গড় হিসেবে পরিচিত এই জেলায় এবার তৃণমূলের সাংগঠনিক কাজকর্ম দেখার ভার দেওয়া হয়েছে কুণাল ঘোষকে। হলদিয়ায় একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছেন কুণাল। সেই বাড়ি থেকেই জেলাজুড়ে দলের কাজকর্ম দেখবেন তিনি। তাঁকে দলের এই দায়িত্ব অর্পন প্রসঙ্গে কুণাল ঘোষ বলেন, ''শীর্ষ নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত এটা। হলদিয়া-নন্দীগ্রাম-সহ জেলার দায়িত্ব দিয়েছে। এখানকার নেতাদের সঙ্গে একটু বেশি সময় দিয়ে সহযোগিতা করব। আমি সহযোগীর ভূমিকায় সময় দেব। নেতারা ডাকলেই আসি। এখন সপ্তাহে দু-তিনদিন সময় দেব। হলদিয়ায় থাকার ব্যবস্থা করে নিতে হচ্ছে।''
এরই পাশাপাশি এদিন ফের একবার কুণালের নিশানায় শুভেন্দু। বিরোধী দলনেতাকে তুলোধনা করে রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক এদিন বলেন, ''শুভেন্দু বলে মোকাবিলা কিছু নয়। শুভেন্দু অধিকারী বিশ্বাসঘাতকার প্রতীক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিশ্বাস করে তাঁকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তাঁর গদ্দারির জন্য একটা জটিলতা তৈরি হয়। আমাদের নেতা-কর্মী-সংগঠকরা ওই ফেজটা লড়ে গিয়েছেন। শিল্পাঞ্চলে দারুণ কাজ হচ্ছে।''
অন্যদিকে, কুণালকে দলের এই দায়িত্ব অর্পণে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। তিনি এদিন বলেন, '''আমার কোনও গড় নেই। আমি সনাতনী হিন্দু। পুরো ভারতই আমার দেশ। আর যাঁকে পাঠানো হয়েছে ও তো জেলখাটা আসামী। ওঁকে নিয়ে কিছু বলব না।''