বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষকে অবিলম্বে গ্রেফতারির দাবি জানাল তৃণমূল। এছাড়া সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনেরও অভিযোগ তুলেছে জোড়-ফুল শিবির। পাল্টা দিলীপ ঘোষের চ্যালেঞ্জ, 'দম থাকলে গ্রেফতার করে দেখাক।'
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় শ্রীঘরে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তদন্তে এগোতেই গারদে পোড়া হয়েছে এসএসসির উপদেষ্টামণ্ডলীর বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্তাকে। কেন্দ্রীয় সংস্থার জালে জড়িয়েছেন পার্থ ঘনিষ্ঠ মিডলম্যান প্রসন্ন রায়। এই প্রসন্নর নিউটাউনে বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে সিবিআই অনেক কিছু বাজেয়াপ্ত করেছে। বাজেয়াপ্ত হওয়া নথির মধ্যে উল্লেখযোগ্য দিলীপ ঘোষের নামের একটি দলিল। ৬০ পাতার ওই দলিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি সম্পত্তির। উদ্ধার হওয়া দলিলে উল্লেখ, সৌভিক মজুমদারের থেকে দিলীপ ঘোষ চলতি বছরের ২২ এপ্রিল একটি সম্পত্তি কিনেছিলেন।
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে প্রশ্ন তুলে জানতে চান, নিয়োগ দুর্নীতির মিডলম্যাল প্রসন্ন রায়ের সঙ্গে বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতির কী সম্পর্ক? কেন প্রভাবশালী তত্ত্বে সন্দেহভাজন দিলীপ ঘোষকে গ্রেফতার করা হবে না? পাশাপাশি, তথ্য গোপনের অভিযোগে কুণাল ঘোষের এ দিনের নিশায় ছিল সিবিআই-ও। সিজার লিস্টে কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিলীপ ঘোষের নামের দলিলটিকে গোপন করতে চেয়েছিল বলে দাবি তৃণমূল নেতার।
আরও পড়ুন- বেলাগাম অখিল: দায় ঝেড়ে ফেললেও ঘুরিয়ে মন্ত্রীর হয়েই সাফাই তৃণমূলের
উল্লেখ্য, প্রসন্নর বাড়ির সিজার লিস্ট আদালতে জমা দিতে সময় লাগিয়েছিল সিবিআই। সিজার লিস্ট জমা না দেওয়ার বিষয়টি আদালতে উত্থাপিত করেছিলেন এসএসসির প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহা। এরপর সিবিআই আদালতে সিজার লিস্ট জমা দেয়। সেখান থেকেই জানা যায় যে, দিলীপ ঘোষের দলিল দুর্নীতিকাণ্ডে অভইযুক্ত পার্থ ঘনিষ্ঠ মিডলম্যান ধৃত প্রসন্ন রায়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে।
কুণাল ঘোষ বলেছেন, 'কেমন করে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত মিডলম্যান ধৃত প্রসন্ন রায়ের বাড়িতে দিলীপ ঘোষের কেনা বাড়ির দলিল মিলল? কী সম্পর্ক ওদের? এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেক্ট এর তদন্ত করুক। আমরা লক্ষ্য করলাম প্রথমে সিবিআই সিজার লিস্ট আদালতে গোপনের চেষ্টা করেছিল। পরে এক অভিযুক্তের আইনজীবী যখন সেই সিজার লিস্টের দাবি জানালেন তখনই আদালতে সেটা পেশ করা হয়। ওটা তালিকার ৮ নম্বরে রাখা হয়েছে। অবিলম্বে দিলীপ ঘোষকে গ্রেফতার করতে হবে। সন্দেহ হলেই সিবিআই নোটিস পাঠিয়ে একে ওকে ডাকছে। তাহলে দিলীপ ঘোষকে কেন ডাকা হবে না?'
এর পাল্টা চাঁছাছোলা দিলীপ ঘোষ। এ দিনও প্রসন্নর সঙ্গে তাঁর চেনাজানার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি। বলেন, 'ওর সঙ্গে (প্রসন্ন)আগে পরিচয় ছিল। আমি একটা ফ্ল্যাট কিনেছি। ইলেকট্রিক কানেকশনের জন্য ওকে দলিল দিয়েছিলাম। ও এলাকায় এসব কাজ করে থাকে বলেই দিয়েছিলাম। ও যে অন্য কোনও কাজে যুক্ত, জানতাম না।'
তাঁকে তৃণমূলের গ্রেফতারির দাবি প্রসঙ্গে দিলীপ চ্যালেঞ্জে ছুড়ে বলেন, 'আমিও চাই আমার বিরুদ্ধে তদন্ত হোক। সিবিআই, ইডি না করলে সিআইডি করুক তদন্ত। গরমিল থাকলে অ্যারেস্ট করবে। ওরা সকলে জেল খাটা, তাই আমাকেও ওরকম মনে করছে। কিন্তু আমি ওদের মতো ছিঁচকে নই। হিম্মত থাকলে গ্রেফতার করে দেখাক।'