প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সম্পর্কে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর পোস্ট ঘিরে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। কিন্তু, তাতে নিজের অবস্থান থেকে সরতে নারাজ তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। রবিবার নিজের মন্তব্যে অনড় থেকে তিনি বলেন, 'ভুলটা কি বলেছি? আমি বলেছি যে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সুস্থতা, দ্রুত আরোগ্য কামনা আমিও করছি, আমরাও (তৃণমূল) করছি। কিন্তু, এই দ্রুত আরোগ্য কামনার সঙ্গে যাঁরা আদিখ্যেতা করে তাঁকে মহাপুরুষ সাজাচ্ছেন, তাঁদের সঙ্গে একমত নই। বুদ্ধদেববাবুর জমানায় সিপিএম বহু খারাপ কাজ করেছে। আর, বুদ্ধদেববাবুর ঔদ্ধত্য এবং ভুল সিদ্ধান্তে বহু ক্ষতি হয়েছে।'
কুণাল ঘোষ এর আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন, 'বুদ্ধবাবুর আরোগ্য আমিও চাই। উনি সুস্থ থাকুন। কিন্তু, দয়া করে আদিখ্যেতার পোস্টে ওঁকে মহাপুরুষ বানাবেন না। উনি সিপিএম আর ওঁর ঔদ্ধত্যপূর্ণ ভুলে বহু ক্ষতি হয়েছে। এই বুদ্ধদেববাবুই তো জ্যোতিবাবুর গোটা সরকারকে চোরেদের মন্ত্রিসভা বলে ছেড়ে চলে এসেছিলেন।'
পালটা কুণাল ঘোষকে কটাক্ষ করেছিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেছিলেন, 'বুদ্ধবাবুর দিকে আঙুল তুলে কেউ চোর বলতে পারবেন না। তাঁর আরোগ্য কামনা করলে কারও যদি আদিখ্যেতা মনে হয়, তাহলে সেটা তাঁর রুচির বিষয়।' জবাবে সুকান্ত মজুমদারকে 'কালকের ছেলে' বলে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল মুখপাত্র।
রবিবার সুকান্ত মজুমদারকে একহাত নিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, 'সুকান্ত মজুমদারের চেয়ে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে আমি ঢের বেশি ব্যক্তিগতভাবে চিনি। মীরাদেবী এবং বুদ্ধবাবুর পরিবার জানেন, আমি তাঁকে ব্যক্তিগত পর্যায়ে শ্রদ্ধা করি, সম্মান করি। আমি এমন কোনও কথা বলিনি, যাতে রুচির কোনও প্রশ্ন থাকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পায়ে গুরুতর জখম হলে যে সিপিএম, যে বিজেপি নানা ধরনের মিম, নানা ধরনের কুরুচিকর টিপ্পনি দিয়ে ভরিয়ে দেয়, তাদের কাছ থেকে রুচি, কুরুচি, সংস্কৃতি এসব শিখব না। সুকান্ত মজুমদার কালকের ছেলে। বুদ্ধবাবুর জমানাতে ও রাজনীতি করেছে বলে কোনও খবর নেই। তাঁর এসব ব্যাপারে, বড়দের বিষয়ে নাক গলানো উচিত নয়।'
আরও পড়ুন- নন্দীগ্রাম আন্দোলন অতীত, অসুস্থ বুদ্ধদেবকে দেখতে এসে ‘অতি বিরল, সৎ’ বললেন শুভেন্দু
শনিবারই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন রাজ্যসভা সিভি আনন্দ বোস, রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। রবিবার গিয়েছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, সিপিএম নেতা সূর্যকান্ত মিশ্র, আইএসএফ নেতা নৌশাদ সিদ্দিকি-সহ অন্যান্যরা। রবিবার সেই প্রসঙ্গেও মুখ খুলেছেন কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, 'বুদ্ধদেববাবু অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় রয়েছেন। বিভিন্ন সাপোর্ট সিস্টেম কাজ করছে। এখন হাসপাতালে দেখতে গেলেই বিরাট কিছু সেখানে হবে না। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী সমস্ত খোঁজখবর রাখছেন। দায়িত্বশীল অভিভাবিকার মত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের খোঁজখবর রাখছেন।'