পাঁশকুড়ার ব্লক তৃণমূল সহসভাপতি কুরবান শা হত্যা মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের শুনানির উপর স্থগিতাদেশ জারি করল সুপ্রিমকোর্ট। আগামী ১ মাসের জন্য স্থগিতাদেশ জারির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি জে কে মাহেশ্বরী। এই মামলার সাক্ষীদের ও মৃতের পরিবারকে অভিযুক্তদের তরফে নানাভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে, ভয় দেখানো হচ্ছে। এই অভিযোগ জানিয়ে মামলা অন্য রাজ্যে স্থানান্তরের দাবি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন নিহত কুরবানের দাদা আফজাল শা। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতেই মঙ্গলবার এই নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত।
২০১৯ সালের দুর্গা পুজোর নহবমীর দিন খুন হন পাঁশকুড়ার ব্লক তৃণমূলের তৎকালীন সহসভাপতি কুরবান শা। এই খুনে মূল অভিযুক্ত শাসক দলেরই সেই সময়কার নেতা আনিসুর রহমান। পরে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। বর্তমানে জেলবন্দি আনিসুর। তবে, নানান সময়েই এই জেলবন্দি আনিসুরের নানা কাজ ও মন্তব্যে বিতর্ক তৈরি হয়।
পূর্ব মেদিনীপুরের রাজনীতিতে বরাবরই শুভেন্দু অধিকারী বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা হিসাবে পরিচিত আনিসুর রহমান। শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর একুশের নির্বাচনী প্রচারে একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে জেলবন্দি আনিসুর রহমানে নাম শোনা যায়। আনিসুরের কার্যকলাপে প্রশ্ন ওঠায় গত ১৪ই মে তমলুক আদালতের বিচারপতি কুরবান শা হত্যা মামলার রায়দান স্থগিত রেখে ছিলেন। পরে তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করা হয়।
এরপরই নিহত কুরবান শা-র পরিবার কলকাতা হাইকোর্টে বিচারের আবেদন করে। পরিবারের দাবিতে জানায়, অভইযুক্ত আনিসুর মুক্তি পেলে তাঁদের জীবনের ঝুঁকি বাড়বে। ফলে শুনানি হাইকোর্টে হোক। রাজ্য কেন তড়িঘড়ি মামলা প্রত্যাহার করতে চাইছে তা জানতে চান বিচারপতি। পরে তমলুক আদালতের যাবতীয় রায় খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। আনিসুরকে গ্রেফতারেরও নির্দেশ দেওয়া হয়।
যদিও এরপরও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিল কুরবানের পরিবার। মামলা এরাজ্য থেকে অন্যত্র স্তনান্তরের দাবি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় তাঁরা। কুরবানের দাদা আফজাল শা শীর্ষ আদালতের রায় প্রসঙ্গে বলেন, 'মামলা চলাকালীন কোনও নিরাপত্তা নেই। অভইযুক্তদের লোকেরা আমাদের উপর হামলা করছে। সাক্ষীদের ভয় দেখানো, অপহরণ করা হচ্ছে। তাই ভিনরাজ্যে মামলার শুনানির জন্য আবেদন করেছিলাম। সুপ্রিমকোর্ট হাইকোর্টের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ জারি করায় কিছুটা সুবিধা হবে।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন