দাবি আদায়ে একটানা আন্দোলনে কুড়মি সমাজ। সারনা ধর্মের স্বীকৃতি ও কুড়মি সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতিভুক্তদের আওতায় আনা-সহ একাধিক দাবিতে টানা রেল রোকো অভিযানে কুড়মি সমাজ। মূলত রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতেই রেল-সড়ক অবরোধ করে দাবি আদায়ে নাছোড় মনোভাব কুড়মিদের। পশ্চিম মেদিনীপুরের খেমাশুলি, পুরুলিয়ার কুস্তাউর স্টেশনে রেল রোকো অভিযানে কুড়মিরা। শনিবার টানা তিনদিনে পড়ল রেল অবরোধ। আজও সত্তরটিরও বেশি দূরপাল্লার ট্রেন বাতিল করতে হয়েছে রেলকে।
প্রশাসনের তরফে এখনও কোনও সদুত্তর না মেলায় আন্দোলনের ঝাঁঝ আরও তীব্র করার পথে কুড়মিরা। পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রামে রেল-সড়ক আটকে চলছে দাবি ছিনিয়ে নেওয়ার লড়াই। টানা রেল-সড়ক অবরোধের জেরে গোটা জঙ্গলমহল স্তব্ধ হওয়ার মুখে দাঁড়িয়ে। শনিবারও খড়গপুর রেল ডিভিশনের খেমাশুলি স্টেশনে কুড়মিদের রেল রোকো কর্মসূচি চলে। হাতে প্ল্যাকার্ড-ফেস্টুন নিয়ে দাবি আদায়ে সুর চড়া করতে থাকেন কুড়মিরা।
আরও পড়ুন- পাহাড় কোলে ঘুমিয়ে ছোট্ট গ্রাম, অপূর্ব এই এলাকার নৈস্বর্গিক শোভা হৃদয় জুড়োবে
অন্যদিকে, পুরুলিয়ার কুস্তাউর স্টেশনেও চলছে রেল অবরোধ কর্মসূচি। কুড়মিদের টানা এই আন্দোলনের জেরে গত কয়েকদিন ধরেই একগুচ্ছ ট্রেন বাতিল করতে হচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়েকে। একদিকে লোকাল ট্রেন পরিষেবা যেমন পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে পড়েছে তেমনই ফি দিন বহু দূরপাল্লার ট্রেনও বাতিল করতে হচ্ছে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ে সূত্রে খবর, আজও ৭২টিরও বেশি দূরপাল্লার ট্রেন বাতিল করতে হয়েছে। এছাড়াও বেশ কিছু ট্রেনের গতিপথ বদলে দিতে হয়েছে।
আরও পড়ুন- আগুন ঝরাচ্ছে সূর্য, চাঁদি ফাটানো ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির আশঙ্কা! স্বস্তির বৃষ্টি কবে?
এমনিতেই চৈত্রের প্রচণ্ড দাবদাহে পুড়ছে বাংলা। বিশেষ করে রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে দহনজ্বালা সীমা ছাড়াচ্ছে। এই পরিস্থিতির মধ্যে টানা রেল-সড়ক অবরোধে অস্বস্তি-ভোগান্তি তীব্র আকার নিয়েছে। দাবি পূরণ না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে আদিবাসী কুড়মি সমাজ।
এদিকে, কুড়মিদের এই আন্দোলন ইস্যুতে রাজ্য সরকারকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্য প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে বলে তোপ দেগেছেন শউভেন্দু অধিকারী। টুইটে তিনি লিখেছেন, 'পশ্চিমবঙ্গের বড় অংশ রাজ্য প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এক সম্প্রদায়ের আন্দোলনের কারণে রেলওয়ে ট্র্যাক এবং হাইওয়েগুলি অবরুদ্ধ। মনে হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে কোনও রাজ্য সরকার নেই। আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি সমাধানের উদ্যোগ নেই কেন? এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্ররোচনার ফল।'