বিতর্কিত মন্তব্যের জেলে মেদিনীপুরের সাংসদ তথা বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির বাড়ির গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়ল কুড়মিরা। কয়েক হাজার কুড়মি সম্পর্দায়ের আন্দোলনকারী এরপরই দিলীপ ঘোষের বাড়ি ঘেরাও করে। শুরু করে বিক্ষোভ।
বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন, বিক্ষোভ চালাচ্ছেন কুড়মিরা। এর মাঝেই গত রবিবার ঝাড়গ্রামের শিলদায় দলীয় কর্মসূচিতে যাওয়ার সময় কুড়মিদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। জানতে চাওয়া হয়, তিনি কুড়মিদের জন্য কী করেছেন? পাল্টা দিলীপও দাবি করেন, খেমাশুলিতে আন্দোলনকারী কুড়মি নেতাদের নানা ভাবে তিনি সাহায্য করেছিলেন। দিলীপের এই মন্তব্যেরও বিরোধিতা করে কুড়মি সমাজ।
এরপরই গত সোমবার হুঙ্কারের সুরে দিলীপ ঘোষ কুড়মিদের উদ্দেশে বলেছিলেন, 'ওরা বেশি বাড়াবাড়ি করলে সব কটা নেতার কাপড় খুলে দেব। দিলীপ ঘোষের পিছনে যেন লাগতে না আসে।'
এতেই কুড়মিদের ক্ষোভের আগুনে ঘি পড়ে। রানিবাঁধে দিলীপের কুশপুতুল পোড়ানো হয়। কুড়মিরা দিলীপকে রীতিমত হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষমা চেয়ে দিলীপ ঘোষ যদি নিজের মন্তব্য প্রত্যাহার না করেন, জঙ্গলমহলে আন্দোলন আরও তীব্রতর হবে বলে জানিয়েছিলেন। ৫০ হাজার কুড়মিকে নিয়ে দিলীপের বাড়ি এদিন ঘেরাওয়ের হুমকি দিয়েছিলেন।
চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি পাল্টা বলেছিলেন, '১৭ তারিখ আমি দিল্লিতে থাকব। ওরা বরং ১৮ তারিখ আসুন। আমি তৈরি হয়ে বসে থাকব।'
কিন্তু অপেক্ষায় রাজি নন কুড়মিরা। পূর্ব ঘোষণা মত বুধবারই দিলীপ ঘোষের খড়্গপুরের বাড়ির গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়লেন আন্দোলনকারী কয়েক হাজার কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষ। কুড়মিদের এদিনের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, 'দিলীপদার কথায় যদি কুড়মিরা আঘাত পেয়ে থাকেন তাহলে আমি তাঁর তরফ থেকে তাঁদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। কুড়মিদের এই দেশের প্রতি অনেক অবদান আছে, ওনারা হয়তো এই কথায় আঘাত পেয়েছেন। কোনও ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। তবে এই বাড়ি ভাঙাভাঙি তৃণমূলের উস্কানিতেই হচ্ছে। প্রশাসন ভেঙে পড়েছে তা আরও একবার প্রমাণিত হল।' তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেছেন, 'কুড়মিরা সাংসদ হিসাবে কুড়মিরা দিলীপবাবুকে কয়েকটা প্রশ্ন করেছিল। উনি তার জবাব ভদ্রভাবে দিতে পারতেন। কিন্তু তা না করে অত্যন্ত অভদ্র ব্যবহার করেছেন। তাই এই পরিণতি।'