/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2018/11/IMG-20181122-WA0007.jpg)
ভরা পর্যটন মরশুম পাহাড়ে। দেশ বিদেশ থেকে পর্যটকেরা ইতিমধ্যে পাহাড়ে আসতে শুরু করেছেন। আর এমন সময়ই তীব্র জল সংকটে দার্জিলিংয়ের কার্শিয়াং মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা। অভিযোগ, স্নান-খাওয়ার জলের জন্যে কয়েক কিলোমিটার হেঁটে পাড়ি দিতে হচ্ছে স্থানীয়দের। বিগত দু'মাস ধরে সমস্যা চললেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ দানা বাঁধতে শুরু করেছে। যদিও নতুন পাইপলাইন বসানোর কাজ শুরু হয়েছে।আগামী তিনমাসের মধ্যে পরিষেবা স্বাভাবিক হবে বলে দাবি কার্শিয়াং পুরসভার। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরাও। অবিলম্বে প্রশাসন বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করুক, চাইছেন তাঁরা।
এমনিতেই পাহাড়ি এলাকায় জলের একটা সমস্যা বারো মাসই থাকে। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত। এই সময় বিভিন্ন ঝিল, ঝরনার জল বরফে পরিণত হয়ে যায়। ফলে প্রশাসনকে সেই ঘাটতি মেটাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হয়। জলের ঘাটতি মেটাতে ট্যঙ্কার দিতে হয়। কিন্তু চলতি বছরের অক্টোবর মাস থেকে শুরু হয়েছে জলের সংকট। অভিযোগ, কার্শিয়াং বাজারে জলের সবচেয়ে বেশি সমস্যা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের পানীয় জলের জন্য কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত হেঁটে যেতে হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: খুলে গেছে রামপুরহাট-জসিডি রেলপথ, আবার নাগালের মধ্যে বাঙালীর ঐতিহ্যময় ‘পশ্চিম’
শুধু যে পানীয় জলের অভাব তা নয়, অন্যান্য নিত্য কর্মের জন্য জলের অভাব রয়েছে এই মহকুমায়। কার্শিয়াং বাজারের পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকাগুলিতে পানীয় জলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বিভিন্ন হোটেল এবং হোমস্টের মালিকদের। এই সময় পাহাড়ে পর্যটকদের আনাগোনা বেশি থাকে, ফলে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে পর্যটকদের জন্য জলের ব্যবস্থা করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাঁদের।
সূত্রের খবর, যে পাইপলাইন দিয়ে কার্শিয়াং বাজারে জল আসে, বিভিন্ন জায়গায় ওই পাইপলাইন থেকে আলাদা করে চ্যানেল বানিয়ে কিছু মানুষ অসাধু উপায়ে নিজেদের বাড়িতে জল স্টোর করছেন। ফলে বাজার পর্যন্ত প্রয়োজনীয় জল পৌঁছাচ্ছে না। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের জানা রয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তবুও এঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এভাবে "জল চুরি" করে নিজেদের বাড়িতে স্টোর করায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে গোটা মহকুমাকে।
তাই ওই এলাকায় পৃথক পাইপলাইন বসানোর চিন্তাভাবনা শুরু করেছে কার্শিয়াং পুরসভা। যদিও এই কাজ সম্পূর্ণ করতে দুই থেকে তিন মাস সময় লাগবে বলে জানা গিয়েছে। আপাতত বিষয়টি নিয়ে খোলাসা করে কিছু বলতে নারাজ কার্শিয়াং পুরসভার পদাধিকারীরা। বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, "আমার বিষয়টি জানা ছিল না, খোঁজ নিয়ে দেখছি।"
পর্যটন ব্যবসায়ী সম্রাট দাস বলেন, "পাহাড়ে একটা জলের সংকট থাকেই। কিন্তু কৃত্রিম উপায়ে সংকট তৈরি করলে পর্যটকদের সমস্যায় পড়তে হয়। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন শীঘ্রই হস্তক্ষেপ করবে বলে আশা করি।" স্থানীয় বাসিন্দা তথা সরকারি কর্মী মনোজ ছেত্রী বলেন, "প্রতিবছরই জলের সমস্যা হয়। এবার জলের সমস্যাটা বেশি। বিশেষ করে পানীয় জলের সমস্যা।"