ঠেলাগাড়িতে তেলেভাজা বেচা ও ফাঁক পেলেই দিনমজুরি। এভাবেই দিন কাটত এই ব্যক্তির। তবে এক মুহূর্তের এক সিদ্ধান্তেই জীবন দিল বদলে। রাতারাতি কোটিপতি বনে গেলেন বাংলার প্রত্যন্ত গাঁয়ের এই ব্যক্তি। বিষয়টি জানাজানি হতেই রীতিমতো তাঁর বাড়িতে ভিড় জমে যায় প্রতিবেশীদের।
দিনমজুরের রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার এই গল্প চমকে দেবে।
কখনও ফুটপাতে ভাঙাচোরা ঠেলাগাড়িতে চপ ভেজে চলছিল রোজগার। আবার কখনও মাটি কেটে সামান্য টাকা উপার্জন। তবে ভাগ্য ফিরল ৬০ টাকার লটারিতে। রাতারাতি কোটিপতি মালদার দিনমজুর।
Advertisment
রতুয়া থানার চাঁদমনি ১ পঞ্চায়েতের মালোপাড়া। এখানকারই বাসিন্দা পেশায় দিনমজুর নূর ইসলাম। লটারিতে প্রথম পুরস্কার হিসেবে ১ কোটি টাকা জিতে নিয়েছেন এই ব্যক্তি। লটারিতে কোটি টাকা জেতার খবর জেনেই আনন্দে আত্মহারা হয়ে যান ওই ব্যক্তি। তবে সেই সঙ্গেই একরাশ ভয়ও ঘিরে ধরে তাঁকে। দ্রুত সামসি পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন ওই দিনমজুর। পরিবারের বাকিরাও ততক্ষণে খবর পেয়ে থানায় হাজির।
সেই রাতে আর বাড়ি ফেরেননি তিনি। অবশেষে পুলিশের আশ্বাসে নূর ইসলাম পরিবার নিয়ে মালোপাড়া গ্রামে নিজের বাড়িতে ফিরেছেন। লটারিতে জেতা টাকা ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ গড়ার কাজে লাগাবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটার দূরে রতনপুর হাটের কাছেই ফুটপাতে তেলেভাজার দোকান নূর ইসলামের। তবে কখনও মাটি কাটার কাজও করেন তিনি। হাটে সবজির বাজার করতে গিয়ে লটারির টিকিট কিনেছিলেন তিনি। ৬০ টাকা দিয়েই লটারির টিকিট কেটেছিলেন নূর ইসলাম। বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি জানতে পারেন লটারিতে তাঁর টিকিটেই ১ কোটি টাকার পুরস্কার উঠেছে।
Advertisment
রতুয়া থানায় কোটি টাকার লটারির টিকিট হাতে নূর ইসলাম।
নূর ইসলাম বলেন, "লটারি কাটা আমার নেশা নয়। কষ্টের মধ্যে সংসার চলছে। এদিন পকেটে ৬০ টাকা ছিল। ওই লটারির দোকানদার ৬০ টাকার বিনিময়ে জোর করে আমাকে টিকিট ধরিয়ে দেয়। দুপুরে ১টায় খেলা হওয়ার কথা। এরপর বিকেলেই হৈচৈ পড়ে যায়। আমার বাড়িতে গিয়েও অনেকে খোঁজ নেয়। তারপরে জানতে পারি লটারিতে আমি ১ কোটি টাকা পেয়েছি।"
তিনি আরও বলেন, "সংসারে স্ত্রী, বৃদ্ধ বাবা-মা এক মেয়ে ও তিন ছেলে রয়েছে। কিছুদিন আগে মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। তিন ছেলের ভবিষ্যৎ গড়ে দিতে হবে। এই লক্ষ্য নিয়েই এগিয়ে যাব। পুলিশ জানিয়েছে, নূর ইসলাম নামে ওই ব্যক্তি লটারিতে পুরস্কার পাওয়ার পর ফাঁড়িতে এসেছিলেন। তাঁকে সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।