Dog VS Cobra Fight Burdwan: বিষাক্ত গোখরোর সঙ্গে ভয়ঙ্কর লড়াই ল্যাব্রাডার হ্যারির, প্রভুকে বাঁচিয়ে বাংলার বুকে বিরল ঘটনায় প্রশংসার ঝড়!
বিষাক্ত গোখরো সাপকে দেখেও পিছু হঠে যাওয়া নয়। উল্টে প্রভু ও তাঁর পরিজনদের প্রাণ বাঁচাতে টানা কয়েক ঘন্টা গোখরো সাপটির সঙ্গে মরণপণ লড়াই চালিয়ে যায় ল্যাব্রাডার হ্যারি। ছোবল খেয়েও হার না মেনে 'হ্যারি'। একেবারে ছিন্নভিন্ন করে দেয় গোখরো সাপটিকে। এই লড়াই লড়তে গিয়ে গোখরোর দংশনে হ্যারির প্রাণ সংশয় তৈরি হয়। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় বর্ধমানের একটি বেসরকারি পশু চিকিৎসা কেন্দ্রে। সেখানে হ্যারির শরীরে অ্যান্টিভেনাম প্রয়োগ করা সহ প্রায় ছয় ঘন্টার চিকিৎসায় হ্যারি প্রাণে রক্ষা পায়। বীরত্ব দেখিয়ে হ্যারি এখন বর্ধমানবাসীর কাছে 'হিরো'।
সাপের কামড়ে আক্রান্ত কুকুরের প্রাণীর ক্ষেত্রে অ্যান্টি-ভেনম প্রয়োগ করে এমন সফল চিকিৎসা এখনো দেশে খুবই বিরল ঘটনা। মালিক সন্দীপ বণিক চিকিৎসার সফলতায় খুশি ও কৃতজ্ঞ। তিনি জানান, আমরা পারিবারিকভাবে পশুপ্রেমী। খুব দুঃশ্চিন্তায় পড়েছিলাম। সময়মত চিকিৎসা ও ডাক্তারবাবুদের তৎপরতায় হ্যারি আবার প্রাণ ফিরে পেল। বর্ধমানের আলিশা এলাকায় রয়েছে একটি বেসরকারি কারখানা। তার ভিতরেই রাতে ছাড়া থাকতো ল্যাব্রাডার হ্যারি। সেখানেই ঢুকে পড়ে গোখরো সাপ। প্রভু এবং তাঁর পরিজন ও কারখানার সকলকে রক্ষায় হ্যারি সাপটিকে দেখেই রুখে দাঁড়ায়।প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে হ্যারি সাপের উপর ঝাপিয়ে পড়ে।তার জন্য গোখরো সাপের ছোবলও খেতে হয় হ্যারিকে। তার প্রাণ সংশয় তৈরি হয়।
ভারতীয় গোখরো (Spectacle Cobra) সাপের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া ল্যাব্রাডার হ্যারির বয়স মাত্র ৭ বছর। অসীম সাহহে গোখরো সাপটিকে কামড়ে ধরে তিন টুকরো করে ফেলে দেয় হ্যারি। এইসময়েই সাপটি হ্যারিকে পাল্টা ছোবল দেয় । সাপের নিউরোটক্সিন বিষ দ্রুত হ্যারির শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। দু'ঘণ্টার মধ্যেই হ্যারি নেতিয়ে পড়ে। তার বিভিন্ন নিউরোলজিক্যাল উপসর্গ দেখা দেয়। সম্পূর্ণ প্যারালাইসিস, অতিরিক্ত লালা ঝরানো, ঘুম ঘুম ভাব এমনকি চোখের পাতা বন্ধ হয়ে যেতে থাকে হ্যারির।
এমনটা দেখেই হ্যারিকে দ্রুত নিয়ে চলে যান ডিভিসি মোড়ের একটি বেসরকারি পশু চিকিৎসা কেন্দ্রে। যেখানে পশু চিকিৎসক জাহাঙ্গীর শেখ, হ্যারির শারীরিক পরীক্ষা করেন এবং তার লেজ ও পায়ে কামড়ের চিহ্ন শনাক্ত করেন। রক্ত পরীক্ষায় বিষের উপস্থিতি নিশ্চিত হয়। পাশাপাশি মূত্র পরীক্ষাতেও বিষের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। পশু চিকিৎসক দ্রুত অ্যান্টি-ভেনম ও অন্যান্য জরুরি ওষুধ প্রয়োগ করেন। ছয় ঘণ্টা ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখার পর হ্যারি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। ১৬ ঘণ্টা পর তার স্বাস্থ্যের দ্রুত উন্নতি শুরু হয়। এখন হ্যারি বিপদমুক্ত।