তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করছে শহর কলকাতা। তাপমাত্রা সহ্যের সীমা ছাড়িয়েছে। অসহ্য গরমে নাকাল শহরবাসী দুপুরটাকে এড়িয়ে যাচ্ছেন। পথে বের হচ্ছেন না। চিকিৎসকরাও এমনটাই পরামর্শ দিয়েছেন। সানস্ট্রোক থেকে বাঁচতে সকালের দিকে অথবা, বিকেলে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা। দুপুর তো বটেই, একান্ত প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের হতেই বারণ করেছেন চিকিৎসকরা।এই পরিস্থিতিতেও কাঠফাটা রোদ আর তীব্র গরমে ধর্মতলায় চলছে ডিএ আন্দোলনকারীদের ধরনা। গরমে তাঁদেরও নাজেহাল দশা। তবে, আন্দোলন টিকিয়ে রাখার স্বার্থে তীব্র গরমেও তাঁরা মঞ্চ ছাড়তে নারাজ। বাধ্য হয়ে তাপপ্রবাহ থেকে আন্দোলনকারীরা নিজেদের রক্ষার স্বার্থে ধরনাস্থলে বসালেন বড় বড় সাইজের কুলার।
Advertisment
ছবি- পার্থ পাল
গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ধর্মতলার শহিদ মিনার ময়দানে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ-এর দাবিতে রিলে অনশন শুরু করেছিলেন সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে ধারাবাহিক অনশন শুরু হয়। দাবি আদায় না-হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা উঠবেন না-বলে হুঁশিয়ারি দেন। ডিএ নির্দেশ বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে বিবেচনাধীন। আগামী এপ্রিলে ফের রয়েছে এই মামলার শুনানি।
আপাতত আন্দোলনের পাশাপাশি এই আইনি নির্দেশের দিকেও তাকিয়ে আছেন আন্দোলনকারীরা। ইতিমধ্যে ডিএ আন্দোলনকারীদের কয়েকজন দিল্লিতে গিয়েছেন। সেখানেও এখনও তীব্র গরম, লু বইছে। তার মধ্যেও দিল্লির বুকে আন্দোলনকারীরা ডিএ বঞ্চনা নিয়ে প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছেন।
Advertisment
ছবি- পার্থ পাল
এসবের মধ্যেই বাজেট বক্তৃতার পর মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ ৩ শতাংশ বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছেন। এতে অবশ্য আন্দোলনকারীরা খুশি নন। পালটা, মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, রাজকোষের বিবেচনায় কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দেওয়া অসম্ভব। কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের বিপুল পরিমাণ অর্থ আটকে রেখেছে। তাই রাজকোষের ঘাটতি হতে পারে, এই কথা মাথায় রেখেই ডিএ বৃদ্ধিতে নবান্ন অপারগ বলেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন।
পালটা আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, রাজ্য সরকার নানা অনুষ্ঠান আর উৎসবে কোটি কোটি টাকা জলের মত খরচ করে দিচ্ছে। আর সরকারি কর্মীদের খাটিয়ে নিয়েও তাঁদের উপযুক্ত ডিএ দিচ্ছে না। ডিএ দেওয়ার সময়ই শুধু সরকারি কোষাগারে অর্থের অভাবের কথা শোনাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। এসব অন্যায় তাঁরা মানবেন না। সঠিক পরিমাণ ডিএ তাঁদের প্রাপ্য। আর, সেটা তাঁরা আদায় করেই ছাড়বেন বলেই আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন।