Advertisment

মমতার উপহারের ছবি বিক্রিতে মরিয়া তাপস পালের স্ত্রী নন্দিনী! হঠাৎ কেন এই ভাবনা?

'দিদি' ও তাঁর ঘনিষ্ঠ ভাইদের নিয়ে বিস্ফোরক তাপস-জায়া নন্দিনী।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
late TMC MP Tapas Pals wife Nandini thinks of reducing the financial trouble by selling picture gifted by Mamata Banerjee , মমতা ব্যানার্জীর উপহার দেওয়া ছবি বিক্রি করে অর্থকষ্ট লাঘবের চিন্তা প্রয়াত তৃণমূল সাংসদ তাপস পালের স্ত্রী নন্দিনীর

প্রয়াত তাপস পাল, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাপস-জায়া নন্দিনী পাল।

সংসদ থেকে বহিষ্কৃত মহুয়া মৈত্র। এরপরই ফের চর্চায় কৃষ্ণনগর। তৃণমূল সাংসদ ছিলেন মহুয়া। তার পাশে রয়েছে দল। এর আগে ওই কেন্দ্র থেকেই দু'বার জোড়া-ফুলের প্রতীকে জিতে সংসদে যাওয়ার ছাড়পত্র পেয়েছিলেন অভিনেতা তাপস পাল। অভিনেতা তাপস জনমানসে সমাদৃত। কিন্তু, বিতর্কিত মন্তব্য, জেলযাত্রার কারণে রাজনীতিক তাপস পালের ভাবমূর্তি জনমনে যেন কিছুটা ম্লান। শেষ পর্যন্ত কী তাপসের পাশে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেস? তারই জবাব দিতে গিয়ে বিস্ফোরক তাপস-জায়া নন্দিনী পাল।

Advertisment

এবিপি আনন্দ-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নন্দিনী পাল জানিয়েছেন, বর্তমানে তাঁদের আর্থিককষ্ট চলছে। সেখান থেকেই পরিত্রাণের উপায় খুঁজছেন নন্দিনী ও তাঁর কন্যা সোহিনী। সমাধান হিসাবে 'দিদি'র দেওয়া উপহারকেই খড়কুটোর মত ধরতে চাইছেন তাঁরা। সাক্ষাৎকারে মমতা ঘনিষ্ঠ তিন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, মলয় ঘটকের নাম করেই একের পর এক অভিযোগ উগরে দিয়েছেন নন্দিনী পাল।

রোজভ্যালি চিটফাট কাণ্ডে জেলে ছিলেন তাপস পাল। কিন্তু তাপস-জায়ার দাবি চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে জড়িত ছিলেন না কৃষ্ণনগরের প্রাক্তন সাংসদ। নন্দিনীর দাবি, রোজভ্যালির একটি ছবি করেছিলেন তাপস। এছাড়া, বাড়তি কোনও সুবিধা বা অযাচিত টাকা তিনি গ্রহণ করেননি। এই সূত্রেই নন্দিনী জানান যে, এক কোটি টাকার বন্ডে জামিন পেয়েছিলেন তাপস পাল। বহু কষ্টে তা জোগাড় করা হয়েছিল। আজও সেই টাকা সিবিআই-এর ঘরে পড়ে বলে দাবি তাঁর। তাপস-জায়ার কথায়, একমাত্র ওই টাকাই এখন তাঁদের সম্বল। সেটাই কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে ফেরতের জন্য আবেদন জানিয়েছেন নন্দিনী পাল। আর তা না হলে, অন্য ভাবনা রয়েছে তাঁদের।

নন্দিনী পাল বলেছেন, 'নিজের আঁকা দু'টি ছবি তাপসকে উপহার দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুনেছি, ওনার ঐঁকা ছবি কোটি কোটি টাকায় বিক্রি হয়। ওগুলোই বিক্রি করতে চাইছি। কেউ ১ কোটি টাকা দিলে ওই ছবি দু'টিও বিক্রি করে দেব।'

বেল বন্ডের টাকা জোগার নিয়ে তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক নন্দিনী পাল। তাপসের স্ত্রী বলেন, '১ কোটি টাকার বেল বন্ডে জামিন পেয়েছিলেন তাপস পাল। দিদি আমাকে বলেছিলেন মলয়কে সব বলা আছে। টাকা পয়সা ও সবকিছু দেখে নেবে চিন্তা নেই। দলনেত্রীর আশ্বাসে শান্তি পেয়েছিলাম। ১ কোটি টাকার বেল বন্ড অনেক বড় বিষয়। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মলয় ঘটককে ক্রমাগত ফোন করলেও সেসময় কেউ ফোন ধরেননি। রাতের দিকে মলয় ঘটক ফোন ধরেন। মলয় দাকে জিজ্ঞাসা করি কী করব? দলনেত্রী তো বলে গিয়েছেন।' উনি বলেছিলেন, চিন্তার কিছু নেই টাকা রেডি আছে। লোক টাকা নিয়ে রাতের ট্রেনে উঠে যাবে, সকালে পৌঁছে যাবে। সেই সকাল আজও আসেনি। ভূবনেশ্বরে স্থানীয় লোকেরা আমাকে সাহায্য করেন। তাপসকে বাড়িতে এনে, এফডি ভেঙে সেই টাকা আমি ফিরিয়ে দিয়েছিলাম।'

এইসব বলার সময় নন্দিনীর পাশে বসেছিলেন তাপস-কন্যা সোহিনী। তাঁরও বিস্তর ক্ষোভ রয়েছে। সোহিনীর কথায়, 'বাবা জামিন পাওয়ার পর আমরা মলয় ঘটকের অফিসে গিয়েছিলাম। মমলা বন্দ্য়োপাধ্যায় বলেছিলেন মলয় সব দেখে নেবেন। চিন্তা করতে হবে না। কিন্তু মলয় ঘটকের অফিসে গিয়ে অপেক্ষার পর শুনতে পাই যে উনি বলছেন, বল, আমি নেই। তখন বাবার মুখটা আমি ভুলতে পারব না।'

স্বামী তাপসের প্রয়াণের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনও লাভ হয়নি বলে জানান নন্দিনী পাল। তাঁর কথায়, 'জানি না তাপসের সঙ্গে কেন এমন খারাপ ব্যবহার করা হল। বাবা মারা যাওয়ার পর দিদির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করি। নবান্নে তিন বার চিঠি দিয়েছি। ডেরেক ও'ব্রায়েন, দোলা সেন, কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছিলাম। কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে গিয়ে চিঠি দিয়ে বলেছিলাম দিদিকে দিতে। কোনও প্রতিক্রিয়া পাইনি।'

এবিষয়ে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, 'তাপসের পরিবারের সঙ্গে পরিচয় রয়েছে। তাপসের অকালমৃত্যু দুঃখজনক। হতে পারে পরিবারেরর মনে অভিমান জমে রয়েছে। যখনই নন্দিনী ফোন করেছেন আমি ধরেছি, সাধ্য মতো সাহায্যও করেছি, কিন্তু সব সময়, সব কাজ করা যায় না।'

tapas pal Arup Biswas malay ghatak tmc Firhad Hakim Mamata Banerjee Nandini Paul
Advertisment