লক্ষ্ণীর ভান্ডার প্রকল্প নিয়ে কোনও দুর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না বলে দিন কয়েক আগেই কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তারপরও এই প্রকল্পের ফর্মকে কেন্দ্র করে টাকার তোলার অভিযোগ উঠল। লক্ষ্মীর ভান্ডার সহ একাধিক সরকারি প্রকল্পের ফর্ম ফিলাপের নামে টাকা আদায়ের অভিযোগে এক সিভিক ভলেন্টিয়ার সহ চার জনকে গ্রেফতার করল শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের আমবাড়ি ফাঁড়ির পুলিশ। গত একমাসের বেশি সময় ধরে ধৃতরা এই বেআিনি কারবারে যুক্ত বলে দাবি পুলিশের।
২৫-৬০ বছর বয়সী তফশিলি জাতি, উপজাতি ও অনগ্রসর শ্রেনীর মহিলারা ১০০০ টাকা ও সাধারণ শ্রেনীর মহিলারা ৫০০ টাকা করে মাসিক ভাতা ভাবেন রাজ্যের তরফে। এই লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের ফর্ম মিলবে দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে। আর এই ফর্ম নিয়েই জালিয়াতির অভিযোগ উঠল জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ ব্লকের বিন্নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের আমবাড়ির চাকিয়া ভিটা গ্রামে। অভিযোগ এই গ্রামেরই বাসিন্দা তৃণমূলের এসসি, এসটি ওবিসি সেলের বুথ সভাপতি বাপ্পা দে সরকার, তাঁর দাদা বাপি দে সরকার, বৌদি শিখা দে সরকার ও স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্বজিত মহন্ত ইন্টারনেট থেকে লক্ষ্মীর ভান্ডারের ফর্ম ডাউনলোড করে তা চড়া দামে বিক্রি করছিলেন।
শুধু তাই নয়, সেই ফর্ম পূরণ করার জন্য মহিলাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৬০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছিলেন। লক্ষ্মীর ভান্ডাপ প্রকল্পের সুবিধে পেতে গত একমাসের বেশি সময় ধরে প্রতিদিনই ওই তৃনমূল নেতার বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছিল প্রচুর মানুষ। যা জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে যায়। অস্বস্থি বাড়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের।
আরও পড়ুন- ফের মুকুলের ডজ, রাজনীতি গুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা ‘চাণক্য’র!
দুর্নীতির অভিযোগ উঠতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। তদন্ত শুরু করে পুলিশ। বেআইনিভাবে লক্ষ্মীর ভান্ডারনফর্ম বিক্রির অভিযোগে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের অধীন আমবাড়ি থানার পুলিশ চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। জলপাইগুড়ি জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেছেন, 'ঘটনার মুল অভিযুক্ত বাপ্পা দে সরকার পেশায় একজন সিভিক ভলান্টিয়ার। তাকে ক্লোজ করা হয়েছে।'
সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দিতে এর আগেও শাসক দলের নেতা, কর্মীদের বিরুদ্ধে অভইযোগ উঠেছে। উত্তাপ ছড়িয়েছে বঙ্গ রাজনীতিতে। একই অভিযোগ এবার লক্ষ্ণীর ভান্ডার প্রকল্প নিয়েও উঠল। শাসক বিরোধীতায় যাকে হাতিয়ার করেছে বিজেপি। স্থানীয় বিজেপি নেতা অলোক চক্রবর্তী বলেন, 'প্রকল্প শুরু না হতেই কাটমানি খাওয়া শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল জমানায় টাকা ছাড়া কিছুই পাওয়া যায় না। তা আবার প্রমাণ হল'
ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি তুলেছেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের রাজগঞ্জ ব্লক সভাপতি তুষারকান্তি দত্ত। তিনি বলেছেন, 'এভাবে সরকারি প্রকল্পের ফর্ম বিক্রি বেআইনি। দল এই কাজ বরদাস্ত করে না। যাঁরা এই কাজ করেছে তাঁরা ঠিক করেনি। ঘটনার পূর্নাঙ্গ তদন্ত হোক।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন