বামেদের আইন অমান্য কর্মসূচি ঘিরে ধুন্ধুমার বর্ধমানে। কার্জন গেটের সামনে বিশ্ব বাংলার লোগো উপড়ে ফেলেন বাম কর্মীরা। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এগোল বামেদের মিছিল। বামেদের 'চোর ধরো, জেল ভরো স্লোগান' তুলে মিছিলের জেরে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিল বর্ধমানের কার্জন গেট চত্বর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ, লাঠিচার্জ করা হয়। শেষমেশ জলকামানেরও ব্যবহার করে পুলিশ। বেশ কয়েকজন আন্দোলনকরীকে পুলিশ আটক করেছে।
বুধবার বর্ধমানের বড় নীলপুরে সমাবেশ করে বামেরা। সিপিমএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ছিলেন সমাবেশর প্রধান বক্তা। এরপর বিশাল মিছিল এগোয় বর্ধমানের কার্জন গেটের দিকে। লাল পাতকা হাতে বামেদের বিপুল কর্মী-সমর্থক যোগ দিয়েছিলেন সেই মিছিলে। আইন অমান্য কর্মসূচি পালন করে বামেরা। মিছিল কার্জন গেটের দিকে এগোনোর আগেই সেখানে ব্যারিকেড করে রেখেছিল পুলিশ।
রাজ্যের একের পর এক দুর্নীতিতে শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের নাম জড়িয়েছে। ইতিমধ্যেই এসএসসি দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। গরু পাচার মামলায় গরাদের পিছনে দিন কাটাচ্ছেন বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলও। একের পর এক দুর্নীতিতে দলের নেতা-মন্ত্রীদের নাম জড়ানোয় স্বভাবতই অস্বস্তি বাড়ছে তৃণমূলে।
আরও পড়ুন- ‘ফাঁসানো হচ্ছে’, যে কোনও শর্তে জামিন চাইলেন পার্থ
এদিন শাসকদলের অস্বস্তি তুঙ্গে তুলে বর্ধমান শহরে 'চোর ধরো জেল ভরো' স্লোগান তুলে মিছিল করে বামেরা। দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত নেতা-মন্ত্রীদের গ্রেফতারের দাবিতে সোচ্চার হন বাম নেতা-কর্মীরা। বড় নীলপুর থেকে কার্জন গেটের দিকে বাম মিছিল এলে পরিস্থিতি উত্তপত্ত হয়। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে চলে মিছিল। বাধা দিলে পুলিশের সঙ্গে কার্যত খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায় বাম কর্মীদের। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট, পাথর বৃষ্টি শুরু করে দেন বাম কর্মীরা। পরিস্থিতি নাগালের বাইরে চলে যাওয়ার উপক্রম হয়।
আরও পড়ুন- পুজোর আগেই পুজোর মিছিল, প্রস্তুত কলকাতা, ‘কালারফুল’ পদযাত্রায় কী নির্দেশিকা নবান্নের?
শেষমেশ পাল্টা লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ, ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল। জলকামান ছুড়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা চালায় পুলিশ। এদিন বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারীকে পুলিশ আটকও করেছে। এদিকে, বিক্ষোভ চলাকালীন এদিন হঠাৎই একদল বামকর্মী কার্জন গেটের সামনে থাকা বিশ্ব বাংলা লোগোর উপরে উঠে পড়েন। পুলিশের চোখের সামনেই এদিন কার্যত উপড়ে ফেলা হয়েছে বিশ্ব বাংলার লোগোটিও। পুলিশের গাড়িও ভাঙচুর করে বিক্ষোভকারীরা। এছাড়াও কার্জন গেট চত্বরে থাকা একাধিক সরকারি হোর্ডিং টেনে-হিঁচড়ে ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে।
গোটা ঘটনার জন্য সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম পুলিশকে দায়ী করে বলেন, 'পুলিশ জোর করে মিছিল আটকেছে, টিয়ার গ্যাসের সেল ছুড়েছে। তারপর পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে দেয়। পুলিশ কোনও প্রটোকল মানেনি। বেপরোয়া লাঠি চার্জ করেছে।' তবে, পুলিশকে লক্ষ্য করে সিপিএম কর্মীদের ঢিল ছোঁড়া ও পুলিশ কর্মী আহত হওয়ার কথা মহম্মদ সেলিম মানতে চাননি