Advertisment

চলে গেলেন কিংবদন্তি শিল্পী অমর পাল

Folk Maestro Amar Pal: বাংলার সঙ্গীতগতের অন্যতম কিংবদন্তি, লোকসঙ্গীতের অন্যতম প্রতিষ্ঠান, অমর পাল প্রয়াত হলেন। 'হীরক রাজার দেশ'-এ তাঁর সেই গান চিরস্মরণীয়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Legendary folk artist Amar Pal is no more

অমর পালের সাক্ষাৎকার (ছবি: ফেসবুক থেকে)

Folk Maestro Amar Pal: বিখ্যাত লোকসঙ্গীত শিল্পী অমর পালের জীবনাবসান হল আজ, ২০ এপ্রিল। মৃত্য়ুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। আগামী ১৯ মে তাঁর জন্মদিন। বলা যায়, জন্মদিনের ঠিক একমাস আগে চলে গেলেন তিনি। লোকসঙ্গীতের আঙিনায় তিনি ছিলেন একজন বৃহৎ প্রতিষ্ঠান। সত্য়জিৎ রায়ের ছবি 'হীরক রাজার দেশ'-এ তাঁর গান কতই রঙ্গ দেখি দুনিয়ায় চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছে।

Advertisment

আজও শহর থেকে গ্রাম সর্বত্রই মানুষের মুখে মুখে ঘোরে। ভারত সরকারের সংগীত-নাটক আকাদেমি পুরস্কারসহ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের লালন পুরস্কার ও সংগীত মহাসন্মান অর্জন করেছেন তিনি। এছাড়া বহু বাংলা ছবিতে তিনি সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। বাংলা থিয়েটারের সঙ্গেও ছিল তাঁর নিবিড় যোগাযোগ।

আরও পড়ুন: ঋতু নেই, কিন্তু আছেন ইন্ডাষ্ট্রির ‘জ্যেষ্ঠপুত্র’

১৯২২ সালের ১৯ মে, বর্তমান বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবেড়িয়ায় তাঁর জন্ম। ছোট থেকেই শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের তালিম নিয়েছিলেন তাঁর মা দুর্গাসুন্দরী পালের কাছে। ১০ বছর বয়েসে বাবাকে হারিয়ে সংসারের দায়ভার কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। উস্তাদ আলাউদ্দিন খানের ছোট ভাই, জনাব আয়াত আলি খান-এর কাছে তালিম নেন। বাংলায় লোকসঙ্গীতকে জনপ্রিয় করেছেন যাঁরা, প্রয়াত শিল্পী অমর পাল ছিলেন তাঁদের মধ্যে অগ্রগণ্য। স্বাধীনতার পরে কলকাতায় আসেন ১৯৪৮ সালে এবং ১৯৫১ সালে তাঁর প্রথম গান সম্প্রচারিত হয় আকাশবাণীতে। তিনি হলেন প্রথম লোকশিল্পী যিনি গান গেয়েছেন আকাশবাণীতে।

তাঁর কণ্ঠে অনেক গানের রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছে। বহু চলচ্চিত্রে কণ্ঠ দান করেছেন তিনি। এর মধ্যে কয়েকজন বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকারের নাম উল্লেখ করতেই হয়, যাদের ছবিতে তাঁর গান সাধারণ মানুষের মন ছুঁয়ে গেছে। 'হীরক রাজার দেশ'-এর সেই বিখ্য়াত গানটির কথা তো সবাই জানেন। দেবকী কুমার বসু থেকে ঋতুপর্ণ ঘোষ, বাংলা ছবির সেকাল থেকে একাল পর্যন্ত বিচ্ছুরণ ঘটেছে তাঁর প্রতিভার।

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্মানিক ডিলিট উপাধিও পেয়েছেন এই গুণী শিল্পী। এছাড়াও দেশ-বিদেশের বহু সন্মানে ভূষিত হয়েছেন তিনি। সারাজীবন ধরে আমাদের বিভিন্ন ধারার শিকড়ের গানকে উপহার দিলেও প্রভাতী ও ভাটিয়ালী গান যেন অমর পালের কণ্ঠে এক অন্যমাত্রা পায় বাংলা লোকসংগীতপ্রিয় মানুষের হৃদয়ে।

বর্তমান সময়ের সঙ্গীত পরিচালকদ্বয় সৌরেন্দ্র-সৌম্যজিৎ দীর্ঘ সময় তাঁর সান্নিধ্যে থেকেছেন। কিংবদন্তি শিল্পীর প্রয়াণের খবরে তাঁরা গভীরভাবে শোকাহত। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে তাঁরা জানালেন, ''লোকসঙ্গীত খুবই সহজ। অমর পাল সেই ধারাটিকে সহজতর করে তুলেছিলেন তাঁর গায়কী দিয়ে। তাঁর গায়কী এতটাই মাটির কাছাকাছি ছিল যে শুনতে শুনতে মনে হয় প্রকৃতি যেন কাঁদছেন, কাঁদছেন শিল্পীর কণ্ঠ দিয়ে।''

মুখ্যমন্ত্রীর শোকবার্তা

''বিশিষ্ট লোকসংগীতশিল্পী অমর পালের মৃত্যুতে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি আজ ৯৬ বছর বয়সে কলকাতায় প্রয়াত হয়েছেন। তাঁর মৃত্যুতে বাংলা লোকসংগীতের জগতে এক অপূরণীয় ক্ষতি হল। তাঁর গাওয়া 'প্রভাত সময়ে শচীর আঙিনা মাঝে', ' রাই জাগো রাই জাগো', 'কতই রঙ্গ দেখি দুনিয়ায়' -র মতো বহু লোকগান ও অন্যান্য গান আজও শ্রোতাদের স্মৃতিতে অমলিন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে ২০১২ সালে 'সংগীত মহাসম্মান'-এ ভূষিত করে।

আমি শ্রী পালের আত্মীয়পরিজন সহ তাঁর অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।''-- মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

Music
Advertisment