হারিয়ে যাওয়া চিঠিদের ফেরাতে বিশেষ উদ্যোগ ডাকবিভাগের

মুঠোফোনে মজেছে যে মন সে কি চাইবে অতীতের স্রোতে ফিরতে? চিঠির সেই যুগ কতটা ফিরবে ডাক বিভাগের উদ্যোগে, উত্তরের অপেক্ষায় 'হলুদ পোস্টকার্ড'রা।

মুঠোফোনে মজেছে যে মন সে কি চাইবে অতীতের স্রোতে ফিরতে? চিঠির সেই যুগ কতটা ফিরবে ডাক বিভাগের উদ্যোগে, উত্তরের অপেক্ষায় 'হলুদ পোস্টকার্ড'রা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
post office

চিঠিতে ফেরার অভিনব উদ্যোগ ডাকবিভাগের। ছবি- সৌমিত্র সান্যাল

বিকেলের 'ডাক'-এ চিঠিরা আজ আসে না। ব্যস্ত সময়ে ধীরগতির চিঠি-চাপাটি আজ প্রায় অচল। প্রযুক্তির কাঁধে চড়ে কোথায় যেন হারিয়ে গিয়েছে চিঠি লেখার সেই মনও। আর এসবের সঙ্গেই মৃত্যু ঘটেছে একদা অতিউজ্জ্বল পত্রসাহিত্যের ধারা। চিঠির প্রতিটি অক্ষরের মাধুর্য, ডাকপিওন, হলুদ পোস্টকার্ড, ছোট্ট সেই পরিসরে উজার করা মনের কথা লেখার সেই মনকে ফিরিয়ে আনতে বিশেষ উদ্যোগ নিল ভারতীয় ডাক বিভাগ। বিশ্বায়নের দাপটে বদলে যাওয়া 'এক ক্লিকের' দুনিয়া ছেড়ে আজ যা অতীত সেই 'চিঠি'কে ফেরাতেই এবার ডাক বিভাগের তরফে দেশ জুড়ে আয়োজন করা হল চিঠি লেখা প্রতিযোগিতা।

Advertisment

publive-image

চিঠি লেখার প্রতিযোগিতায় অতীতকে ফেরানোর উদ্যোগ নিল ডাকবিভাগ।

গত শতকের সাত, আট, নয়ের দশকের গোড়ার দিকে দূর দেশের আত্মীয়দের খবর নেওয়ার একমাত্র ভরসা ছিল চিঠি। সস্তার হলুদ পোস্টকার্ড হোক কিংবা নীলরঙা 'ইনল্যান্ড', আজ তাঁরা স্মৃতির অতলান্তিকে। বিশ্বায়নের দাপটে চিঠিকে হঠিয়ে জায়গা করে নিয়েছে ই-মেইল বা মুঠোফোনের নানা রকম মেসেঞ্জার। তবে এতে লেখার মানসিকতা অনেকটা এবং অভ্যাস অনেকাংশে বদলে যাচ্ছে। ই-দুনিয়ার নানা সমস্যার দিকও প্রতিনিয়ত সামনে আসছে। আর এই আধুনিক প্রযুক্তির ই-ব্যবস্থায় সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হচ্ছে স্কুল পড়ুয়ারাই। ক্রমশ তারা মোবাইলে আসক্ত হয়ে ভুলতে বসেছে লেখালেখি। ঠিক এ জন্যই ফের চিঠিমুখা করার প্রয়াস নিয়েছে ভারতীয় ডাক বিভাগ।

চিঠির 'সুদিন' ফিরিয়ে আনতে 'মোবাইল মগ্ন' পড়ুয়াদের অতীতের সুবাস দিতে 'ক্রিয়েটিভ রাইটিং'-এর প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। লেখা পাঠাবার শেষ দিন ৩০ শে নভেম্বর। জলপাইগুড়ি ডাক বিভাগের সুপারিন্টেন্ডেন্ট সুভাষ ডার্নাল জানান, মোবাইল বা ল্যাপটপ বেশি ব্যবহারের ফলে ছোটদের মধ্যে লেখার বদলে বাড়ছে টাইপিংয়ের অভ্যাস। এর ফলে শুদ্ধ বানান এবং ক্রিয়েটিভ নিজে হতে লেখার মান পড়ে যাচ্ছে। তাই চিঠির মাধ্যমে লেখার অভ্যেসকে ফিরিয়ে আনতেই এই উদ্যোগ।

Advertisment

এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন জলপাইগুড়ি ফণীন্দ্রদেব বিদ্যালয়ের শিক্ষক তপন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, "একথা ঠিক যে আমাদের মধ্যে লেখার অভ্যাস অনেক কমে গিয়েছে। স্কুলের পরীক্ষায় এখন বড় প্রশ্ন প্রায় উঠেই গিয়েছে, বদলে এসেছে ছোট প্রশ্ন। ফলে লেখালেখি অনেক কমে গিয়েছে। তাই এই উদ্যোগ অনেকটা কাজে দেবে।" তবে 'এসে মোহনায় ফেলে আসা কিছু আনতে নদী কী ফেরত যায়?' মুঠোফোনে মজেছে যে মন সে কি চাইবে অতীতের স্রোতে ফিরতে? চিঠির সেই যুগ কতটা ফিরবে ডাক বিভাগের উদ্যোগে, উত্তরের অপেক্ষায় 'হলুদ পোস্টকার্ড'রা।

West Bengal